সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পথে বাসে উপচে পড়ছে ভিড়। বুধবার, নন্দনের কাছে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
ধর্মঘটের দিনে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সরকারি তরফে তৎপরতার অভাব ছিল না। তবে বুধবার সকাল থেকে অনেক বেশি সংখ্যায় সরকারি বাস রাস্তায় নামলেও যাত্রী তেমন চোখে পড়েনি। কয়েকটি জায়গায় ধর্মঘট সমর্থকদের বিরুদ্ধে রাস্তা অবরোধ এবং সরকারি বাসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠলেও তার প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।
এ দিনের ধর্মঘটে শহর কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, শিয়ালদহ এবং বিমানবন্দর এলাকায় প্রায় ১১০০টি বাস রাস্তায় নামানো হয় বলে পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর। সক্রিয় ছিল রাজ্য পরিবহণ নিগমের নিজস্ব কন্ট্রোল রুম। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বাসচালকদের হেলমেট পরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ট্রেনে শহরে আসা যাত্রীদের জন্য হাওড়া স্টেশন এলাকায় প্রচুর বাস রাখা হয়েছিল। কিন্তু সকালেই হাওড়া-বর্ধমান শাখায় ওভারহেড তারে কলাপাতা ফেলে ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে হাওড়া এবং শিয়ালদহ স্টেশনে ট্যাক্সি প্রায় ছিল না বললেই চলে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। ট্যাক্সি ধরতে হাওড়ায় বচসা ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন যাত্রীদের একাংশ। কানপুর থেকে আসা এক যাত্রী বলেন, ‘‘বাগুইআটিতে আত্মীয়ের বাড়ি যাব। কিন্ত প্রি-পেড বুথে ট্যাক্সি পেতে হিমশিম খাচ্ছি।’’
এ দিন শহরের বেশ কয়েকটি জায়গায় গোলমাল হয়। ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ গড়িয়ার রথতলার কাছে একটি সরকারি বাসের কাচ ভাঙার অভিযোগ উঠেছে। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ হেস্টিংসের কাছেও বাসে ভাঙচুর হয়। দুপুর ১২টা নাগাদ রাসবিহারীর কাছে ধর্মঘট সমর্থকদের অবরোধ এবং বিক্ষোভের সময়ে একটি বাসেও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। টালিগঞ্জের দিকে যাওয়ার পথে রাসবিহারী মোড়েও একটি বাস ভাঙচুর করা হয়। মধ্যমগ্রামের দোলতলা এবং বারুইপুরে ট্রাম কোম্পানির বাসের চাকার হাওয়া খুলে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এ ছাড়া যাদবপুর এবং বড়বাজারে অবরোধের জেরে সাময়িক ব্যাহত হয় বাস পরিষেবা। বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য পুলিশ বেসরকারি বাস তুলে নেওয়ায় বিকেলের দিকে রাস্তায় বাসের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায়।
গোলমালের আশঙ্কায় শহর জুড়ে এ দিন যাত্রিসংখ্যাও ছিল কম। কলকাতা বিমানবন্দর এবং সল্টলেক পাঁচ নম্বর সেক্টর থেকে বিভিন্ন রুটের বাতানুকূল বাস ফাঁকা চলেছে।
দুপুরের দিকে যাত্রীদের দেখা মিললেও বেলা গড়াতেই তা ফের কমে আসে। কম চলেছে বিভিন্ন অ্যাপ-ক্যাবও। তাই গাড়ির সংখ্যা কম থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি ভাড়া লেগেছে। শিয়ালদহ, রাজাবাজার, শ্যামবাজার,
উল্টোডাঙ্গা, গড়িয়াহাট, টালিগঞ্জ-সহ বিভিন্ন রুটে অটো রাস্তায় নামলেও যাত্রী কম ছিল। ট্রাম ও লঞ্চও ফাঁকা চলেছে। সকালের দিকে ফাঁকা ছিল মেট্রোও। তবে দুপুরের পরে ভিড় হয়। এসপ্ল্যানেড, দমদমের মতো স্টেশনেও যাত্রীদের ব্যস্ততা অন্য দিনের তুলনায় অনেকটাই কম ছিল।