Transport

Transport department: হর্নের দৌরাত্ম্য কি রুখতে পারবে পরিবহণ দফতর

বিধিভঙ্গকারী গাড়ি বা মোটরবাইকের বিরুদ্ধে এখন পুলিশ ব্যবস্থা না নিলেও প্রয়োজনে সেই গাড়ি বা বাইকের নম্বর লিখে রাখা হবে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

চন্দন বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২২ ০৭:৫৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

শহরের পথে হাজার হাজার ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী, মোড়ে মোড়ে পুলিশি ব্যবস্থা, নাকা-তল্লাশি, এমনকি কয়েকশো সিসি ক্যামেরার নজরদারি থাকা সত্ত্বেও গাড়ির ঝকমকে আলো ও বিকট হর্নে লাগাম টানা যায়নি। তাই একা হাতে সেই কাজ কি আদৌ সামলাতে পারবে পরিবহণ দফতর? গাড়ির হর্ন ও আলোর নিয়মভঙ্গের ক্ষেত্রে এ বার থেকে শুধু পরিবহণ দফতর ব্যবস্থা নেবে, এই নির্দেশিকা জারির পরে সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে ট্র্যাফিক পুলিশ থেকে শুরু করে শহরের সচেতন নাগরিকদের একাংশের মধ্যে। সেই সঙ্গে আশঙ্কা বাড়ছে, এই সুযোগে ফের শহরে শব্দদূষণের মাত্রা বাড়বে না তো?

Advertisement

দিনকয়েক আগেই রাজ্য পরিবহণ দফতরের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, গাড়ি বা মোটরবাইকে হর্ন, আলো অথবা অন্য কিছুর অবৈধ ভাবে বদল ঘটালে তার বিরুদ্ধে এ বার থেকে শুধুমাত্র ব্যবস্থা নেবে ওই দফতরই। এত দিন পর্যন্ত বিধিভঙ্গকারী গাড়ি বা বাইকের বিরুদ্ধে মোটরযান আইন অনুযায়ী কলকাতা পুলিশ ব্যবস্থা নিলেও এ বার থেকে সেই কাজ করতে পারবেন শুধুমাত্র পরিবহণ দফতর নিযুক্ত মোটর ভেহিক্‌লস ইনস্পেক্টরেরা। ইতিমধ্যেই সেই নির্দেশিকা কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের কাছে পৌঁছেছে। এমনকি, প্রতিটি গার্ডেও এই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এর পরেই আশঙ্কায় ভুগছেন রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের একাংশ। ইএম বাইপাসে কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘নজরদারি চালাতে পুলিশের মতো এত কর্মী কোথায় পরিবহণ দফতরের? এই বিধিভঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া যদি আমাদের কাজ না হয়, তা হলে তা দেখার দায়ও আমাদের থাকে না। পুলিশের ভয়ে যা-ও কিছুটা গাড়িতে বিকট হর্ন, আলো লাগানো আটকানো যেত, এ বার তা মাত্রা ছাড়িয়ে না-যায়!’’ একই আশঙ্কার কথা শোনা গেল ধর্মতলায় কর্তব্যরত আর এক পুলিশকর্মীর মুখেও। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের এখানে তো বরাবরই নাগরিক সচেতনতা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। পুলিশের ভয়ে হোক অথবা জরিমানার ভয়ে, এত দিন কিছুটা হলেও গাড়িতে ঝিকিমিকি আলো ও বিকট মিউজিক্যাল হর্ন লাগানো আটকানো যেত। এখন তো পুলিশের আর কিছুই করার থাকল না।’’

তবে সূত্রের খবর, এই ধরনের বিধিভঙ্গকারী গাড়ি বা মোটরবাইকের বিরুদ্ধে এখন পুলিশ ব্যবস্থা না নিলেও প্রয়োজনে সেই গাড়ি বা বাইকের নম্বর লিখে রাখা হবে বলে জানা গিয়েছে। তেমন হলে সেই তথ্য পরিবহণ দফতরকে দিয়ে দেওয়া হবে।

Advertisement

কিন্তু নজরদারি ঢিলেঢালা থাকলে তাতে আদৌ কাজ হবে কি না, সেই আশঙ্কায় ভুগছেন শহরের সচেতন নাগরিকদের একাংশ। এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা বাগবাজারের বাসিন্দা অমিয় পাত্র বললেন, ‘‘পুলিশের লাঠি, জরিমানাতেও যাঁদের নিয়মে বাঁধা গেল না, সেখানে পুলিশের এই বাঁধন আলগা হলে তাঁরা কী করবেন সেটাই ভাবছি! কে কোন বিষয়ে কাজ করবে, এই জটিলতা এড়াতে নির্দেশিকা দেওয়া হলেও শেষে যেন হিতে বিপরীত না হয়!’’

তবে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘পরিবহণ দফতরের তরফে এখনও কোনও সাহায্য চাওয়া হয়নি। যদি নজরদারির জন্য সাহায্য চাওয়া হয়, তা হলে তা করা হবে।’’ পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিক অবশ্য বললেন, ‘‘এই বিষয়ে দফতরের কর্মীরা রাস্তায় থেকে নিয়মিত নজরদারি চালাবেন। পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গেও সমন্বয় রক্ষা করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement