প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে করোনার সংক্রমণ লাগামছাড়া হতেই লোকাল এবং দূরপাল্লার ট্রেনে যাত্রী কমতে শুরু করেছে। দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিট বাতিলের হিড়িক হুহু করে বাড়ছে। আচমকা বিপুল পরিমাণ টাকা যাত্রীদের ফেরাতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন রেলের বুকিং কাউন্টারের কর্মীরা।
কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে সংক্রমণের অবস্থা এখন ভয়াবহ। এ রাজ্যে সংক্রমণ বাড়তে থাকার খবর পেয়ে একাধিক পার্শ্ববর্তী রাজ্য ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ থেকে যাওয়া যাত্রীদের ক্ষেত্রে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ওই সমস্ত শর্ত পূরণ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হতে পারে, এই আশঙ্কায়তেও অনেক যাত্রী দূরপাল্লার ট্রেনের টিকিট বাতিল করছেন বলে খবর। দক্ষিণ-পূর্ব রেলে চলতি মাসের শুরুতে যেখানে এক দিনে প্রায় ৩০ হাজার যাত্রী খড়্গপুর ডিভিশন থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের সংরক্ষিত টিকিট কেটেছিলেন, সেখানে গত শনিবার ওই সংখ্যাটা এসে চার হাজারে ঠেকেছে।
একই অবস্থা হাওড়া ও শিয়ালদহ ডিভিশনেও। সেখানে দূর পাল্লার ট্রেনের টিকিট সংরক্ষণের হার কমেছে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ। যে হারে টিকিট বাতিলের টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে, তার তুলনায় নতুন টিকিট সংরক্ষণের হার অনেক কম। ফলে ওই বিপুল অঙ্কের টাকা ফেরত দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন রেলের বুকিং কাউন্টারের কর্মীরা। সম্প্রতি দমদম স্টেশনের টিকিট সংরক্ষণ কেন্দ্রে টিকিট বাতিলের টাকা ফেরত নিতে গিয়ে এক যাত্রী দেখেন, কাউন্টারে টাকা নেই। প্রায় ন’হাজার টাকার পুরী যাওয়ার টিকিট বাতিল করতে গিয়েছিলেন তিনি। পরে টালিগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন বুকিং কাউন্টারে গিয়েও একই সমস্যায় পড়েন। শেষে শিয়ালদহ থেকে টাকা ফেরত নিতে হয় তাঁকে।
রেলকর্মীরা টিকিট বাতিলের এই হিড়িকের মধ্যে নোটবন্দি ও লকডাউনের সময়ের ছায়া দেখছেন। এ রাজ্য থেকে ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু, সিকিম, অসম-সহ একাধিক রাজ্যে যাতায়াতের ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কয়েকটি রাজ্য নিয়ম করেছে, আরটিপিসিআর রিপোর্ট ৪৮ ঘণ্টার বেশি পুরনো হলে গ্রাহ্য হবে না। এ নিয়ে সংশয়ের জেরেও টিকিট বাতিল করছেন অনেকে। ওড়িশার মতো রাজ্য বাইরে থেকে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রে কোয়রান্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক করেছে। এ দিকে, আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দৈনিক প্রায় শতাধিক লোকাল ট্রেন বাতিল থাকার কথা। সব মিলিয়ে ওই ট্রেনেও কয়েক লক্ষ যাত্রী কমেছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের তুলনায় গত শনিবারের হিসেবে লোকাল ট্রেনে ৪৩ শতাংশ যাত্রী কমেছে।
হাওড়া এবং শিয়ালদহের লোকাল ট্রেনে মাস্ক না পরার জন্য যাত্রীদের জরিমানা করার কাজ শুরু হয়েছে।সংক্রমণের আশঙ্কায় অনেক যাত্রী লোকাল ট্রেন এড়িয়ে চলছেন। সেই কারণেও হু হু করে যাত্রী কমছে।