ফাইল চিত্র।
মোবাইল কানে নিয়ে গাড়ি চালালে জরিমানার আইন আগে থেকেই ছিল। মুর্শিদাবাদে জলাশয়ে বাস পড়ার পর থেকেই সেই আইন কঠোর ভাবে প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। তবে নির্দেশ মানতে গিয়ে পথেঘাটে সমস্যায় পড়ছেন বহু ট্র্যাফিক সার্জেন্টই। তাঁরা জানাচ্ছেন, মোবাইল কানে গাড়ি বা মোটরবাইক চালালে ছবি তুলে রেখে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চলন্ত গাড়ির ছবি তুলতে গিয়ে বাড়ছে বিপদের আশঙ্কা। অনেক ক্ষেত্রে গাড়ি দ্রুত গতিতে চলে যাওয়ায় স্পষ্ট ছবি ধরাও পড়ছে না।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, সব ক্ষেত্রে ছবি তোলা বাধ্যতামূলক নয়। সুযোগ থাকলে ছবি তুলতে পারেন অফিসার। সে ক্ষেত্রে ভুয়ো মামলা করা হয়েছে, এমন অভিযোগ করতে পারবেন না আইনভঙ্গকারী চালক।
লালবাজার সূত্রে খবর, আগে মোবাইল কানে গাড়ি চালালে ১০০ টাকা জরিমানা করা হতো। মুর্শিদাবাদের বাস দুর্ঘটনায় জানা যায়, চালক মোবাইলে কথা বলতে বলতেই বিপদ ঘটান। এর পরেই জরিমানার পরিমাণ বাড়িয়ে ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিল করার সিদ্ধান্তও হয়েছে। তবে সাজা এমন কঠোর হওয়ায় পুলিশকর্তারা মনে করছেন, অভিযুক্ত চালকের দোষ প্রমাণের জন্য ছবি তুলে রাখা প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, কলকাতা পুলিশ অবশ্য আগে থেকেই মোবাইল কানে গাড়ি চালানোর জন্য লাইসেন্স সাময়িক ভাবে বাতিল করার নির্দেশ জারি করা হয়েছিল।
পুলিশ অফিসারদের একাংশের মতে, রাস্তায় চলন্ত গাড়ির ভিড়ে কাছে গিয়ে ছবি তোলা বিপজ্জনক। তাতে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীর দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সিগন্যাল বন্ধ থাকলে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকবে। তখন মোবাইলে কথা বলা বেআইনি নয়। এই সুযোগে অনেকেই নিয়ম ভেঙে পার পেয়ে যাচ্ছেন।
তবে এই পরিস্থিতিতে পুলিশকে কিছুটা হলেও ‘সুযোগ’ করে দিচ্ছেন মোটরবাইক চালকেরা। পুলিশ সূত্রের খবর, মোটরবাইক চালকেরা হয় কানে হেডফোন গুঁজে চালান নয়তো হেলমেটের ফাঁকে মোবাইলটি গুঁজে রাখেন। পুলিশ পিছু নিলে গাড়িচালকেরা চট করে ফোন নামিয়ে রাখতে পারেন বা লাইন কে়টে দিতে পারেন। কিন্তু মোটরবাইক চালকদের সেই সুযোগ থাকছে না। ফলে এখনও পর্যন্ত মোবাইলে কথা বলতে বলতে যত জরিমানার ঘটনা ঘটেছে তার বেশির ভাগই মোটরবাইক চালকদের বিরুদ্ধে।
লালবাজারের আরও দাবি, আবেদনে সারা দিয়ে বহু যাত্রীও চালকদের মোবাইল ব্যবহারের ছবি তুলে তাঁদের কাছে পাঠিয়েছেন। যার ভিত্তিতে চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।