থমকে: ডায়মন্ড হারবার রোডে যানজটে আটকে যানবাহন। শনিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
পথ যেন বিভীষিকা! বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে কেইআইআইপি-র (কলকাতা এনভায়রনমেন্টাল ইম্প্রুভমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম) প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় কয়েক সপ্তাহ ধরে ডায়মন্ড হারবার রোডের এমনই অবস্থা। মাঝেরহাট সেতু থেকে ঠাকুরপুকুরের দিকে যেতে কয়েক কিলোমিটার পেরোতেই সময় লাগছে ঘণ্টাখানেকের বেশি। বিকল্প কয়েকটি পথেও কাজ হওয়ায় গাড়ি ঘোরাতে বেগ পেতে হচ্ছে পুলিশকে। বিশেষ করে দিনের ব্যস্ত সময়ে ওই পথ পেরোতে ভোগান্তির মুখে পড়ছেন যাত্রীরা।
কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে বেহালা জুড়ে শুরু হয়েছে কেইআইআইপি-র কাজ। ডায়মন্ড হারবার রোডের কয়েকটি জায়গা, বেহালার মতিলাল গুপ্ত রোড, বীরেন রায় রোড
(পশ্চিম)-সহ একাধিক রাস্তায় এই কাজ চলছে। বন্ধ রাখা হয়েছে মতিলাল গুপ্ত রোড এবং বীরেন রায় রোডের (পশ্চিম) বড় অংশ। রাস্তা কেটে বড় পাইপ বসানো হচ্ছে। বেহালা বাজার এবং কলকাতা পুরসভার বরো অফিস সংলগ্ন মোড়েও রাস্তার একাংশ বন্ধ করে কাজ শুরু হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে ডায়মন্ড হারবার রোডের যান চলাচলে।
অতিব্যস্ত ডায়মন্ড হারবার রোড দিয়ে দিনে কয়েক হাজার গাড়ি যাতায়াত করে। তুলনায় সঙ্কীর্ণ ওই রাস্তায় গাড়ির ধীর গতির কারণে যানজট হয় বলে এমনিতেই অভিযোগ ছিল। তার মধ্যে এই প্রকল্পের কাজে ভোগান্তি বেড়েছে কয়েক গুণ। দুপুরের দিকে গাড়ি চলাচল কিছুটা ঠিক থাকে, কিন্তু সকাল ও সন্ধ্যায় এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের একটি অংশের। জানা যাচ্ছে, নিকাশির এই কাজ শেষ হতে এখনও আড়াই মাসের বেশি লাগবে।
এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শেক্সপিয়র সরণিতে আসেন পুষ্কর মিত্র। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বাসে উঠলে রাস্তা আর ফুরোয় না। দেড় ঘণ্টার বেশি লেগে যাচ্ছে। মাঝেরহাট সেতুর পর থেকে বাস তো শামুকের গতি নিচ্ছে। প্রতিদিন অফিসে আসাটাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’’ একই কথা শোনালেন বেহালা চৌরাস্তার বাসিন্দা নির্মল শীল। তাঁর কথায়, ‘‘বাড়ি থেকে কাজে বেরোনো এখন আতঙ্কের। ঘরে ফেরার সময় আর নির্দিষ্ট থাকছে না।’’
যদিও পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, যানজট নিয়ন্ত্রণে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, ডায়মন্ড হারবার রোডের উপর চাপ কমাতে ছোট গাড়িগুলিকে জেমস লং সরণি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ডায়মন্ড হারবার রোডের বেহালা বাজারের পাশের একটি মিউজিয়ামের কাছে রাস্তা ফাঁকা করার তোড়জোড় শুরু করেছে পুলিশ। ডায়মন্ড হারবার রোডের যত্রতত্র ইউ-টার্ন নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়েছে বলে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘রাস্তার মাঝের ইউ-টার্ন এলাকা ছোট করে দেওয়া হয়েছে। মানুষের ভোগান্তি কমাতে রাস্তায় অতিরিক্ত পুলিশও থাকছে।’’