শুধু অপরাধ নয়, শহরের দূষণ নিয়ন্ত্রণেও এ বার নামতে হল লালবাজারকে।
শুধু অপরাধ নয়, শহরের দূষণ নিয়ন্ত্রণেও এ বার নামতে হল লালবাজারকে। লালবাজার সূত্রের খবর, গত মাস থেকে ট্র্যাফিক বিভাগের ‘অ্যান্টি পলিউশন সেল’-এর সঙ্গে জোট বেঁধে রাস্তায় নেমে গাড়ির দূষণ পরীক্ষার কাজ করছেন বিভিন্ন ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মীরাও। পুলিশের হিসাব বলছে, গত কয়েক মাসে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে ২৮২৩টি গাড়ির বিরুদ্ধে আইনি নোটিস পাঠিয়েছে তারা। এর পরে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গাড়ির মালিক দূষণ কমাতে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ২৬৩২টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে জরিমানা করা হয়েছে। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তা জানান, বৈধ ‘পলিউশন আন্ডার কন্ট্রোল সার্টিফিকেট’ না থাকায় জুলাই থেকে গত সপ্তাহ পর্যন্ত মোট ৫৯১৮টি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
পুজোর পর থেকেই বায়ুদূষণে নাজেহাল খাস দিল্লির মতো রাজধানী শহরের বাসিন্দারা। এক দিকে গাড়ির ধোঁয়া, অন্য দিকে ফসলের গোড়া পোড়ানোর জেরে দিল্লিতে দূষণ বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে গিয়েছে। কলকাতার পরিস্থিতি এতটা খারাপ না হলেও এখানে গাড়ির দূষণ নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। কালো ধোঁয়া উড়িয়ে চলে যাওয়া বাস বা গাড়ির সংখ্যা এ শহরে কম নয়।পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, গাড়ির কালো ধোঁয়া যে স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক, তা কারও অজানা নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও
অনেকে এই সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মানেন না। যার জেরে শহরের বাতাস দিনদিনই বিষিয়ে উঠছে। তাই গত মাস থেকে এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিতে শুরু করেছে পুলিশ। এর আগে শুধু ‘অ্যান্টি পলিউশন সেল’ গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষার কাজ করত। এ বার সেই কাজে ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মীদেরও নামানো হয়েছে। তাতে সাফল্যও এসেছে বলে দাবি এক পুলিশকর্তার। সূত্রের খবর, প্রথমে গাড়ি আটকে ধোঁয়া পরীক্ষা করা হয়। সেই ধোঁয়ার দূষণ গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে বেশি হলে ত্রুটি মেরামতির জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়ে নোটিস পাঠানো হয় মালিককে। তার পরেও মালিক তা মেরামত না করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ।
ট্র্যাফিক পুলিশের মতে, কলকাতায় রাস্তার তুলনায় গাড়ির ঘনত্ব অত্যধিক বেশি। এ শহরে রাস্তার পরিমাণ অন্যান্য মেট্রো শহরের তুলনায় অনেকটাই কম! আবার খোলা জায়গার পরিমাণও যথেষ্ট নয়। যানবাহনের ঘনত্বের জন্যই কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় গাড়ির ধোঁয়ার দূষণ এতটা বেশি।
লালবাজারের এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, দূষণ রোধে এই অভিযান চলবে। এখন ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডের মধ্যে ১৪টি ট্র্যাফিক গার্ড এই সংক্রান্ত কাজে নেমেছে। দ্রুত বাকিরাও নামবে। এর জন্য প্রতিটি গার্ডের তিন-চার জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।