এখানেই শুরু হবে কাজ। — নিজস্ব চিত্র
হাওড়া স্টেশনের প্রি-পেড ট্যাক্সি স্ট্যান্ডকে মডেল করে এ বার সাঁতরাগাছি স্টেশন চত্বরে চালু হতে চলেছে প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথ। পাশাপাশি, যাত্রী হয়রানি রুখতে তৈরি হচ্ছে সাঁতরাগাছি ট্রাফিক গার্ড অফিস। ওই এলাকায় ট্রাফিক গার্ড অফিস করার জন্য ইতিমধ্যেই নবান্ন থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি পাওয়া গিয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথ করার জন্য অনুমতি মিলেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফেও। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ১ জুন প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথ ও ট্রাফিক গার্ড উদ্বোধন হওয়ার কথা।
বর্তমানে সাঁতরাগাছি বহু দূরপাল্লার ট্রেনের প্রান্তিক স্টেশন। স্বভাবতই ট্রেনের যাত্রীদের চাপ বেড়েছে মারাত্মক ভাবে। পাশাপাশি, যানবাহনের চাপ বেড়েছে কোনা এক্সপ্রেসওয়েতেও। কিন্তু সরকারি ভাবে কোনও বাসস্ট্যান্ড বা ট্যাক্সিস্ট্যান্ড না থাকায় রাস্তার উপরেই সার দিয়ে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলতে হয় বাস-ট্যাক্সিকে। যার জন্য কোনা এক্সপ্রেসের ওই অংশে যানজট এখন নিত্যদিনের ঘটনা। এতেই শেষ নয়, ট্রেন থেকে নেমে বাস বা ট্যাক্সি না পেয়ে হামেশাই নাজেহাল হন যাত্রীরা।
এরই সঙ্গে যোগ হয়েছিল অপরিসর সাঁতরাগাছি সেতু। সেখানেও যানজট ও দুর্ঘটনা ছিল কার্যত নিত্যদিনের ঘটনা। গত বছর এক গাড়ি দুর্ঘটনায় অভিনেতা পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায়ের মর্মান্তিক মৃত্যুর পরে অবশ্য কিছুটা নড়ে বসে রাজ্য সরকার। সেতুটির অবস্থা দেখতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে সেতু পরিদর্শন করেন। তাঁর নির্দেশেই সেতু এবং কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ক্লোজ্ড সার্কিট ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়। ঢেলে সাজা হয় ট্রাফিক ব্যবস্থা। মেরামত করা হয় ওই অপরিসর সেতুটির ক্ষতিগ্রস্ত অংশও।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, সাঁতরাগাছি স্টেশনে যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির কথা ভেবে হাওড়ার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ডিআরএম-কে চিঠি দিয়েছিলেন। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে স্টেশনে ঢোকার রাস্তা এবং প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথ করার জন্য যাতে রেলের জমি পাওয়া যায়, চিঠিতে সেই আবেদন করেছিলেন কমিশনার। তবে হাওড়া সিটি পুলিশের অভিযোগ, আবেদনের উত্তর দিতে রেল বছর কাটিয়ে দেয়। সম্প্রতি রাজ্য সরকার প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথ চালু করার অনুমতি দেওয়ার পরে পুলিশের পক্ষ থেকে ফের যোগাযোগ করা হয় রেলের সঙ্গে। পুলিশের দাবি, অবশেষে রেলও প্রয়োজনীয় অনুমতি দিয়েছে।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) সুমিত কুমার মঙ্গলবার বলেন, ‘‘হাওড়া স্টেশনের মতো সাঁতরাগাছিতেও ট্রাফিক গার্ড ও প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথ করার অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। রেলের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। রেলের জমিতেই ট্যাক্সি বুথ তৈরি হবে। কয়েক দিনের মধ্যেই কাজও শুরু হয়ে যাবে। আশা করা যাচ্ছে, ১ জুনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে কাজ।’’
ডিসি (ট্রাফিক) জানান, স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের পাশেই যে ভিআইপি পার্কিং লট, সেখানেই তৈরি হবে যাত্রী শেড এবং প্রি-পেড বুথ। ট্যাক্সি ঢোকা ও বেরোনোর রাস্তা হবে আলাদা। তিনি বলেন, ‘‘সাঁতরাগাছি স্টেশনের পরিকাঠামোর খোলনলচে পাল্টে উন্নত মানের আধুনিক রূপ দিচ্ছে কেন্দ্র। এ জন্য ভবিষ্যতে যাত্রী সংখ্যা আরও বাড়বে। সমস্যা দেখা দিতে পারে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে। এ সবের জন্যই একটা ট্রাফিক গার্ড প্রয়োজন ছিল।’’ হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ট্রাফিক গার্ডে এক জন ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার ওসি, ২০ জন কনস্টেবল এবং ৭ জন অফিসার থাকবেন বলে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে।