বিপর্যয়: চিৎপুর রেলগেট ভেঙে যাওয়ায় গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হয় আর জি কর রোড দিয়ে। এর ফলেই দীর্ঘ যানজট আর জি কর রোডে। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুমন বল্লভ
লরির ধাক্কায় বৃহস্পতিবার সকালে বিকল হয়ে গেল চিৎপুর সার্ভিস রোডের রেলগেট। যার জেরে দিনের ব্যস্ত সময়ে ওই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রইল তিন ঘণ্টারও বেশি। এর ফলে গাড়ির চাপ গিয়ে পড়ে উত্তর কলকাতার অন্যান্য রাস্তায়। যানজটে ফেঁসে হাঁসফাঁস অবস্থা হয় যাত্রীদের। কেউ গন্তব্যে পৌঁছন নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা পরে, কাউকে বিকল্প রাস্তা ধরতে গিয়ে গুনতে হয় বিরাট অঙ্কের বাড়তি ভাড়া। দুপুর আড়াইটের পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় বলে ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর।
টালা সেতুর সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ায় আর জি কর রোড হয়ে ইন্দ্র বিশ্বাস রোড ঘুরিয়ে বি টি রোডে গাড়ি বার করার ব্যবস্থা করেছিল পুলিশ। কিন্তু যানজটে নাজেহাল হয়ে চিৎপুর লক গেট ও কাশীপুর রোড দিয়ে গাড়ি বার করানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু লক গেটে হাইট বার থাকায় ভারী ও বড় গাড়ি চিৎপুর সার্ভিস রোড দিয়ে আনার ব্যবস্থা হয়। এই জন্য চক্ররেলের লাইনের উপরে রেলগেটও তৈরি করা হয়। বর্তমানে ওই রাস্তা দিয়েই বি টি রোডে আসে ভারী গাড়ি। ভোর থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চিৎপুর লক গেট ধরে গাড়ি কলকাতা থেকে বি টি রোডের দিকে পাঠানো হয়। দুপুর ১টার পরে গাড়ি চলে উল্টো অভিমুখে। চিৎপুর সার্ভিস রোড হয়ে কাশীপুর রোডে যে গাড়িগুলি পড়ে, সেগুলিকে বি টি রোডে বার করার পাশাপাশি কাশীপুর রোড হয়ে বি টি রোডের দিক থেকে কলকাতায় আসার জন্যও পথ খোলা রাখা হয়।
ট্রেন যাবে বলে এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ চিৎপুর সার্ভিস রোডের রেলগেট ফেলা হয়। সেই রেলগেটে ধাক্কা মারে একটি লরি। লরিটিকে বার করা গেলেও দেখা যায়, এক দিকের লোহার গেট উঠছে না। রেলকর্মীরা এসে লোহার গেট খোলার ব্যবস্থা করেন।
তবে ওই রাস্তা তখনকার মতো বন্ধ করে দিতে হয়। প্রথমে কিছু গাড়িকে খালপাড় দিয়ে আর জি কর রোডের দিকে বার করে দেওয়ার চেষ্টা হয়। কিন্তু তাতে সুরাহা মেলেনি। এর পরে বাগবাজার স্ট্রিট দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় কিছু গাড়ি। বন্ধ করে দিতে হয় রাজবল্লভপাড়া দিয়ে ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ অ্যাভিনিউ যাওয়ার রাস্তা। ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ হয়ে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় দিয়ে আর জি কর রোডে গাড়ি বার করা হয়। দেখা যায়, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের সামনে আর জি কর সেতুর উপরে গাড়ির দীর্ঘ লাইন।
ট্যাক্সিতে আটকে এক রোগীর পরিজন বললেন, ‘‘আর জি করে যাচ্ছিলাম। ডাক্তার দেখাতে পারব বলে মনে হয় না।’’ দুপুর আড়াইটের পরে রেলগেট সারানো হলে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।