হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে ভর্তি থাকা জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের শয্যায় মশারি টাঙাতে হবে। শহরের সমস্ত সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিতে এমনই নোটিস পাঠাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। সরকারি হাসপাতালে পুরসভাই ওই মশারি সরবরাহ করবে। আর বেসরকারি হাসপাতালকে তা কিনতে হবে বাজার থেকে। শুক্রবার পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানান, ইতিমধ্যেই পুরসভার মেডিক্যাল স্টোর দফতরকে দেড় হাজার মশারি কিনতে বলা হয়েছে। শহরের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে তা পাঠানো হবে।
হঠাৎ মশারি কেনার সিদ্ধান্ত কেন?
পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক অফিসার জানান, শহর লাগোয়া একাধিক পুরসভা থেকে জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসার জন্য ভর্তি হচ্ছেন কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে। কেউ ডেঙ্গি, কেউ ম্যালেরিয়া, কেউ বা অজানা জ্বরে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি থাকা এক রোগীর শরীর থেকে মশার মাধ্যমে সেই রোগ অন্যদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীকে কামড়ে সেই জীবাণু অন্যের শরীরে ছড়িয়ে দেয় এডিস মশা। তাই পুরসভা মনে করছে, জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের মশারির মধ্যে রাখা দরকার। যাতে মশা তাঁদের কামড়াতে না পারে। তাতে কিছুটা হলেও মশাবাহিত রোগের সংক্রমণ কমানো সম্ভব।
অতীনবাবু জানান, এখন জ্বরে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। কলকাতার বাইরে থেকে আসা রোগীর সংখ্যাই বেশি। এলাইজা কিট পরীক্ষায় প্রাথমিক ভাবে কারও কারও ডেঙ্গি ধরাও পড়ছে। সেখানে অনেক রোগীই রয়েছেন মশারি ছাড়া। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আগেই বলা হয়েছিল রোগীদের মশারির নীচে রাখতে। কিন্তু আইডি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মশারি নেই। সে কথা শুনেই এ বার পুর প্রশাসন শহরের সব সরকারি হাসপাতালে মশারি সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি জানান, পুরসভা সরকারি হাসপাতালগুলিকে বলেছে, জ্বরে আক্রান্ত রোগী এলেই তাঁকে মশারি দিন। এর জন্য কত মশারি লাগবে, তা জানালে পুরসভাই পাঠিয়ে দেবে।
কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিকে তা নিজেদের টাকাতেই কিনতে হবে বলে জানান স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা। তাঁর কথায়, ‘‘আগেও এ বিষয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে সতর্ক করা হয়েছিল। ফের নোটিস পাঠানো হচ্ছে।’’ এর পরেও মশারির ব্যবস্থা না হলে কড়া পদক্ষেপ করার পথে এগোবে পুর প্রশাসন।