ব্রিজ তৈরির জায়গা খতিয়ে দেখছেন পুর ও নগরন্নোয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
মাঝেরহাট ব্রিজে বিপর্যয়ের পর কার্যত বিচ্ছিন্ন দ্বীপে পরিণত হয়েছে দক্ষিণ কলকাতার একটা বড় অংশ। বেহালা, ঠাকুরপুকুর, বজবজ, হরিদেবপুর-সহ দক্ষিণ শহরতলির বিস্তৃর্ণ এলাকার মানুষ যাতয়াত করতে গিয়ে প্রতি দিনই ভোগান্তির মুখে পড়ছেন। নিউ আলিপুর এবং আলিপুরের মধ্যে বেইলি ব্রিজ তৈরি হওয়ায় কিছুটা দুর্ভোগ কমেছে। তবে, এখনও যানজট লেগেই রয়েছে।
তাই টালিনালা খালের উপরে টালিগঞ্জের দিকে আরও দু’টি বেইলি ব্রিজ তৈরির সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। একটি তৈরি হবে টালিগঞ্জে করণাময়ী ব্রিজের কাছে, অন্যটি হবে টালিগঞ্জ ফাঁড়ি সেতুর কাছে। এই দু’টি ব্রিজ তৈরি হয়ে গেলে দুর্ভোগ অনেকটাই কমবে বলে মনে করছে রাজ্য।
করুণাময়ী ব্রিজের কাছে বেইলি ব্রিজটি এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে। পূর্ত দতফর এ জন্য গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স-এর পরামর্শ চেয়েছে। টালিগঞ্জ ফাঁড়ি হয়ে বিএল শাহ থেকে সিরিটি শ্মশানের দিক থেকে ক্যানেল রোডের কাছে খালের উপরে তৈরি হবে দ্বিতীয় ব্রিজটি। এই ব্রিজটি যুক্ত হবে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের সঙ্গে। প্রায় ৭.৫ মিটার চওড়া করা হবে, যাতে ওই ব্রিজের উপর দিয়ে লরি এবং ভারী গাড়ি চলাচল করতে পারে।
আরও পড়ুন
হোটেল ম্যানেজারের ভাইয়ের গাড়িতে পাচার হয়েছিল অর্চনা-বলরামের দেহ! ধৃত সেই চালক
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ পুর ও নগরন্নোয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পূর্ত এবং কলকাতা পুরসভার অধিকারিকেরা ওই দুই জায়গা পরিদর্শন করেন। পরে ফিরহাদ হাকিম বলেন, “এই সপ্তাহের মধ্যেই দু’টি ব্রিজ তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। ৭.৫ মিটার চওড়া ব্রিজ দিয়ে লরিও যেতে পারবে। ফলে ট্রাফিকের চাপ অনেকটাই কমবে।”
আরও পড়ুন
অর্চনা-বলরাম হত্যা রহস্য: জাল খুলেও কেন আটকে যাচ্ছেন গোয়েন্দারা?
সম্প্রতি টালিগঞ্জ করুণাময়ী ব্রিজের উপরের রাস্তার একাংশ বসে যায়। ওই জায়গায় স্টিলের প্লেট বসানো রয়েছে। মাঝেরহাট ব্রিজ বিপর্যয়ের পর ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে নিয়ে শহরের সব সেতুগুলির স্বাস্থ্য পরিদর্শন করেন ফিরহাদ হাকিম। যে ব্রিজগুলি দ্রুত মেরামতির প্রয়োজন রয়েছে বলে ওই সময় উঠে আসে, তার মধ্যে করুণাময়ী ব্রিজ অন্যতম।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
করুণাময়ী ব্রিজের উপর দিয়ে ঠাকুরপুকুর, হরিদেবপুর, সখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা থেকে টালিগঞ্জের দিকে প্রচুর গাড়ি যাতায়াত করছে। এমনকি টালিগঞ্জ ফাঁড়ি, নিউ আলিপুর, সাহাপুর, তারাতলা থেকে টালিগ়ঞ্জ ফাঁড়ি ব্রিজের উপর দিয়ে প্রচুর গাড়ি যাতায়াত করছে। দক্ষিণ কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দারা এই ব্রিজগুলির উপর নির্ভরশীল। অনেকেই টালিগঞ্জ পর্যন্ত এসে মেট্রো বা বাসে অফিসে যান। দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দাদের জন্যে টালিগঞ্জ পর্যন্ত অতিরিক্ত বাসও চালাচ্ছে পরিবহণ দফতর। এই অতিরিক্ত চাপ কমানোর জন্যেই বেইলি ব্রিজ তৈরি করা হচ্ছে বলে পূর্ত দফতরের দাবি।