প্রতীকী চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে এ বার পুজোয় সারা রাত পরিষেবা চালু রাখতে চান না মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আগামী এক সপ্তাহে মেট্রোয় ট্রেনের সংখ্যা এবং পরিষেবার সময় আরও কিছুটা বাড়লেও ভোর পর্যন্ত ট্রেন না চালানোর কথাই কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক ভাবে ভেবে রেখেছেন। অন্যান্য বছরে পুজো আসার অন্তত এক মাস আগেই উৎসবের দিনগুলিতে মেট্রো পরিষেবা কেমন থাকবে, তার আগাম পরিকল্পনা করা হয়।
বিভিন্ন স্টেশনে ভিড় নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা ছাড়াও রেকের রক্ষণাবেক্ষণ, কাগজের টিকিট এবং পুজো গাইড সংক্রান্ত লিফলেট প্রকাশের মতো একাধিক বিষয় জড়িয়ে থাকে ওই পরিকল্পনার সঙ্গে।
মেট্রো সূত্রের খবর, এই বছরে এখনও পুজোর জন্য পৃথক কোনও রূপরেখা তৈরি হয়নি। গত কয়েক বছরে তৃতীয়া থেকেই রাস্তায় পুজোর ভিড়ের ঢল নামায় গত বছর ওই সময় থেকেই অন্তিম মেট্রোর সময় কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। চতুর্থী এবং পঞ্চমীতে মেট্রোয় যাত্রী-সংখ্যার নিরিখে রেকর্ড ভিড় হতে দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যের নিষেধাজ্ঞায় পুজোর মুখে বিমানযাত্রায় বাড়ছে হয়রানি
আরও পড়ুন: ‘সুপার স্প্রেডার’ মণ্ডপগুলির সামনে গোটা শহর অসহায়
গত বছর পঞ্চমীর দিনে মেট্রোয় সর্বাধিক ৯.২৮ লক্ষ যাত্রী সফর করেছিলেন। তবে করোনা সংক্রমণের জেরে পরিস্থিতি আমূল বদলে গিয়েছে। প্রায় ছ’মাস বন্ধ থাকার পরে গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে যাত্রীদের সংখ্যা সীমিত রেখে পরিষেবা শুরু হয়েছে। শুরুতে ১১০টি ট্রেন সারা দিনে চালানো হলেও গত কয়েক সপ্তাহে যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে তিন দফায় ট্রেনের সংখ্যা বাড়িয়ে ১৪৬টি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুজো-জনতার ‘আচরণ’ই ঠিক করবে সংক্রমণের হার
মেট্রোয় দৈনিক যাত্রী-সংখ্যাও চলতি সপ্তাহে ৭৭ হাজার ছাড়িয়েছে। আগামী সপ্তাহে মেট্রোর সময় আরও কিছুটা পিছিয়ে দুই প্রান্তিক স্টেশন থেকে দিনের অন্তিম মেট্রো ছাড়ার সময় সাড়ে ৯টা করা হবে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। পুজোর ঠিক আগে প্রাক্ করোনা সময়ের মতো রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে শেষ মেট্রো ছাড়তে পারে।
তবে সারা রাত মেট্রো চালাতে কোনও ভাবেই আগ্রহী নন কর্তৃপক্ষ। অন্যান্য বছর পুজোর দিনগুলিতে সাধারণত দুপুর ১টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা পাওয়া গিয়েছে। এ বছর সেই তুলনায় যাত্রীর সংখ্যা কম থাকার সম্ভাবনা। মেট্রো কর্তৃপক্ষ মানুষের দৈনন্দিন যাতায়াতের স্বার্থে প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়ার পক্ষে। ভোর পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা চালু থাকলে পুজোয় মানুষের বেরোনোর প্রবণতা বাড়বে বলে মনে করছেন মেট্রো কর্তাদের একাংশ। করোনা পরিস্থিতিতে তাই ভিড় এড়াতে বাড়তি সময় পরিষেবা দেওয়ার ভাবনা মুলতুবি রাখতে চান মেট্রো কর্তৃপক্ষ। সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কায় রাজ্য পুজোর আগে লোকাল ট্রেন চালানোর বিষয়েও এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। মেট্রোর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘একান্ত দরকারি পরিষেবাটুকু দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে যাত্রীদের রাস্তায় বেরোতে উৎসাহ দেওয়ার পক্ষে নই আমরা।’’
মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে পরিষেবা বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।’’