দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প নিয়ে এ বার বেফাঁস মন্তব্য করলেন হাওড়ার জগদীশপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানই।
গোবিন্দ হাজরা নামে ওই পঞ্চায়েত প্রধান সোমবার অভিযোগ করে জানান, দুয়ারে সরকার প্রকল্প থেকে মানুষ তেমন কোনও উপকারই পাচ্ছেন না। উল্টে চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন অনেকেই। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
অভিযোগ, এ দিন দুয়ারে সরকার প্রকল্পের সাহায্য নিতে আসা লোকজনের সব সমস্যা না মেটালে সরকারি কর্মীদের আটকে রাখার হুমকি দেন গোবিন্দবাবু। ওই ঘটনার পরে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, শীঘ্রই ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিন ওই শিবিরে ভিড় ছিল ভালই। কিন্তু ব্লক কার্যালয় থেকে প্রয়োজন মতো আধিকারিকেরা না আসায়, উপযুক্ত ফর্ম না আনায় সমস্যা তৈরি হয়। বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, দুয়ারে সরকার শিবিরে গেলেও তাঁদের দিনের পর দিন ব্লক অফিসে যেতে বলা হচ্ছে। আর ব্লক অফিসে গেলে বলা হচ্ছে দুয়ারে সরকার শিবিরে যেতে। এ দিন শিবিরে আসা অলোক সরকার বলেন, ‘‘এখানে রেশন কার্ড থেকে শুরু করে বার্ধক্য ভাতা নিয়ে চূড়ান্ত হয়রান করা হচ্ছে।’’
বাসুদেব দাস নামে এক বৃদ্ধের অভিযোগ, ‘‘দুয়ারে সরকার থেকে যে পরিষেবা দেওয়ার কথা ছিল, তা দেওয়া হচ্ছে না। একটি রেশন কার্ডের জন্য প্রতিদিন ঘোরানো হচ্ছে।’’
বাসিন্দাদের এই সব অভিযোগকে জোরের সঙ্গে সমর্থন করেন পঞ্চায়েত-প্রধান গোবিন্দবাবু। তিনি বলেন, ‘‘একটা রেশন কার্ড বা বার্ধক্য ভাতার জন্য দুয়ারে সরকারের শিবিরে মানুষ যখন যাচ্ছেন, তখন তাঁদের বলা হচ্ছে ব্লক অফিসে যেতে। নামেই ‘দুয়ারে সরকার’। কিন্তু কোনও কাজ হচ্ছে না। ব্লক প্রশাসন কোনও ব্যাপারে সমন্বয় রাখছে না। আসলে সরকারি আধিকারিকদের অধিকাংশ ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’।’’
গোবিন্দবাবুর অভিযোগ, শিবিরের আয়োজন করা হবে বলে এর আগে একাধিক বার মানুষকে জানানো হয়। কিন্তু ব্লক কার্যালয় থেকে কেউ না আসায় শিবির করা যায়নি। এ দিন সকালে স্থানীয় হাইস্কুলে শিবির চালু হতেই বিশাল লাইন শুরু হয়ে যায়। গোবিন্দবাবু রীতিমতো হুমকি দিয়ে বলেন, ‘‘মানুষকে ঘোরানো যাবে না। যদি এ দিনও মানুষকে ঘোরানো হয়, তা হলে মানুষ সরকারি আধিকারিকদের আটক করে রাখবে।’’
ঘটনার পরে হাওড়া (সদর) জেলার তৃণমূল সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই প্রকল্পকে সারা রাজ্যের মানুষ দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করেছেন। একে বাধা দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দল নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।’’