প্রতীকী ছবি।
ইদ উপলক্ষে শুক্রবার বেশ কয়েক জন করোনা আক্রান্তের বাড়িতে এবং হাসপাতালে হালিম রান্না করে পৌঁছে দিলেন তাঁরা। তৃণমূলের ‘সবুজ সঙ্গী’র এই দলে রয়েছেন ২৪৮ জন। কলকাতার পাশাপাশি রাজ্যের প্রায় প্রতিটি জেলাতেই কাজ করছেন এই স্বেচ্ছাসেবকেরা।
বামফ্রন্টের যুব স্বেচ্ছাসেবী দল ‘রেড ভলান্টিয়ার্স’-এর মতোই মাঠে নেমেছে তৃণমূলের এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। গত বছরের মার্চে হুগলি জেলার যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কুন্তল ঘোষের উদ্যোগে তৈরি হয়েছিল এই সংগঠন। উদ্দেশ্য ছিল, কোভিড আক্রান্তদের বিভিন্ন ভাবে সাহায্য করা।
রাজনীতির কারবারিদের কারও কারও মতে, রেড ভলান্টিয়ার্সের পাল্টা হিসেবেই তৈরি হয়েছে ওই সংগঠন। যা শুনে অনেকেরই আবার বক্তব্য, রাজনীতিতে এমন প্রতিযোগিতা চলেই। তবে এ ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার কেন্দ্রে জনকল্যাণের ভাবনা থাকায় আখেরে মানুষেরই ভাল হবে।
এ দিন নিজেদের উদ্যোগে তৈরি রান্নাঘরে হালিম রেঁধেছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। কুন্তল বলেন, ‘‘কলকাতা শহরের তিনটি হাসপাতালে ১৫০টি কন্টেনারে হালিম পৌঁছে দিয়েছি আমরা। ২০টি করোনা আক্রান্ত পরিবারের কাছেও তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।’’ তিনি জানান, ২০২০ সালের মার্চ থেকেই বহু করোনা রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করার পাশাপাশি তাঁদের খাবার সরবরাহের কাজও করে চলেছেন এই স্বেচ্ছাসেবকেরা। গত বছর লকডাউনের সময়ে যে সমস্ত চাষি ও মৎস্যজীবী কাজ চালিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছিল দলের তরফে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এসে পড়ায় তাঁদের ব্যস্ততাও বহু গুণ বেড়েছে বলে জানালেন কুন্তল।
তিনি বলেন, ‘‘গত মাস থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত ২০০ জনেরও বেশি রোগীকে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। প্রয়োজনে তাঁদের আর্থিক সাহায্যও করা হয়েছে। অসুস্থ ও অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের বাড়িতে বিনামূল্যে ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছি।’’ অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ এবং রিফিলিং-ও বিনামূল্যে করা হচ্ছে বলে জানান তিনি। ‘সবুজ সঙ্গী’র উদ্যোগে রক্তদান শিবিরের আয়োজনও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুন্তল। সেই রক্ত ও প্লাজ়মা রোগীদের প্রয়োজনে হাসপাতালে পৌঁছে দিচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকেরা। এ দিন চালু হয়েছে একটি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবাও।
কুন্তল জানালেন, ওই দলেরই কয়েক জন সদস্য মিলে তৈরি করছেন একটি মোবাইল অ্যাপ। ‘আনকোভিড.লাইভ’ নামে ওই অ্যাপের মাধ্যমে সেটির ব্যবহারকারী কাছাকাছি কোথায় শয্যা ফাঁকা আছে, কোথায় অক্সিজেন পাওয়া যাবে, ইত্যাদি তথ্য জানতে পারবেন। দক্ষিণ কলকাতার কসবার কাছে একটা হোটেলে অন্য একটি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আইসোলেশন কেন্দ্র তৈরির কাজও করছে ‘সবুজ সঙ্গী’। কুন্তলের কথায়, ‘‘প্রতিটি জেলাতেই এমন একটি কেন্দ্র তৈরির ইচ্ছে রয়েছে আমাদের।’’