কোথাও নিবার্চনী স্টিকার ছেঁড়ার মিথ্যা অভিযোগ তুলে নাক ফাটানো হয়েছে দলীয় কর্মীর। কোথাও আবার প্রচারের জন্য লেখা দেওয়াল রাতের অন্ধকারে মুছে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দিনভর তৃণমূলের বিরুদ্ধে এ হেন একাধিক অভিযোগ তুলল সিপিএম ও বিজেপি।
পুরভোটের প্রচার পর্বে এ নিয়ে সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়াল বেলেঘাটা থেকে শুরু করে বরাহনগর, বেলঘরিয়া এলাকায়। প্রতি ক্ষেত্রেই তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। উল্টে তাঁদের দাবি, ভোটের আগে শাসক দলের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতেই এই সমস্ত অভিযোগ তৈরি করছে সিপিএম ও বিজেপি।
মঙ্গলবার সকাল দশটা নাগাদ বেলেঘাটায় শাসকদলের একটি স্টিকার ছেঁড়া ঘিরে সিপিএম-তৃণমূলের ঝামেলা বাধে। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী রাজীব বিশ্বাসের অভিযোগ, প্রচার সেরে দলবল নিয়ে তিনি শিল্পকল্প ভবনের সামনে বসেছিলেন। তখন স্থানীয় তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি সুশান্ত সাহা-র নেতৃত্বে একদল তৃণমূল কর্মী দাবি করেন বেলেঘাটা বাইপাস সংলগ্ন ওল্ড সিআইটি আবাসনে তৃণমূলের একটি নির্বাচনী ‘স্টিকার’ ছিঁড়ে দিয়েছে সিপিএম। দু’দলে শুরু হয় বাদানুবাদ।
সিপিএমের অভিযোগ, তাঁদের নামে মিথ্যা বলা হচ্ছে বলতেই তৃণমূল কর্মীরা মারধর শুরু করেন। সঞ্জয় পাত্র নামে এক সিপিএম কর্মীর নাক ফাটিয়ে দেওয়া হয়। বাধা দিতে গেলে ধাক্কা দেওয়া হয় রাজীববাবুকেও। রাজীববাবু বলেন, ‘‘ওঁরা মারধর করে আমাদের কর্মী সত্যজিৎ রায়কে টেনে থানায় নিয়ে যায়। বছরখানেক আগেও আমাকে তৃণমূলের লোকেরা মারধর করেছিল। বাড়ি ভেঙে দিয়েছিল।’’ সিপিএমের পক্ষ থেকে বেলেঘাটা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ওয়ার্ডের সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, তিন দিন আগে তৃণমূল তাঁদের পোস্টার ছিঁড়ে দেয়। এ নিয়ে অভিযোগও দায়ের হয়েছে। প্রতিশোধ নিতেই এ দিনের ঘটনা। সিপিএম নেতৃত্বের আরও দাবি, তৃণমূল প্রার্থী পবিত্র বিশ্বাসের নামের যে স্টিকার ছেঁড়া হয়েছে সেটি কোনও বাচ্চার কাজ। এর সঙ্গে সিপিএম কর্মীরা জড়িত নন। রাজীববাবু বলেন, ‘‘ওঁরা হেরে যাওয়ার ভয়েই এমন ঘটাচ্ছেন।’’
অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল প্রার্থী পবিত্র বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই দলের কেউ জড়িত নেই। সিপিএম ওই এলাকায় বরাবর সন্ত্রাস করে জিতে এসেছে। এ বারে সে ভাবে জিততে পারবে না বলে কুৎসা করছে।’’
অন্য দিকে কামারহাটি পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের স্ন্যাপ রোড, প্রিয়নাথ ঘোষ রোড-সহ বিভিন্ন এলাকায় রাতে তৃণমূল কর্মীরা সিপিএম-এর দেওয়াল লিখন মুছে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ওই ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী দয়াময় মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘কিছু বলতে গেলেই শাসানো হচ্ছে।’’ কামারহাটি এলাকায় প্রচারেও বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ সিপিএম-এর। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা প্রার্থী গোপাল সাহা বলেন, ‘‘নিজেদের পরাজয় জেনেই এ সব রটাচ্ছে সিপিএম।’’
অন্য দিকে বরাহনগর পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রার্থীদের মারধর করা হচ্ছে এই অভিযোগে মঙ্গলবার পুলিশকে স্মারকলিপি দেন বিজেপির উত্তর কলকাতা শহরতলি জেলা সভাপতি গোপাল সরকার। তিনি বলেন, ‘‘প্রার্থীদের মারধর করা হচ্ছে। প্রচারে বেরোলে শাসানো হচ্ছে।’’ তবে বরাহনগরের তৃণমূল নেতৃত্ব অভিযোগ মানতে চাননি।