তৃণমূল কাউন্সিলর প্রণবকুমার বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র।
প্রয়াত হলেন কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর প্রণবকুমার বিশ্বাস। বুধবার দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের দুর্গাপুর লেনের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। বর্ষীয়ান ওই কাউন্সিলরের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
২০১৮ সালের নভেম্বরে আচমকাই কলকাতা পুরসভার মেয়র পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সেই সময় তড়িঘড়ি পুরমন্ত্রী ফিরহাদকে মেয়র পদে বসানোর সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী। ফিরহাদ তখন নির্বাচিত কাউন্সিলর ছিলেন না। সেই সময় বিধানসভায় বিল এনে কলকাতা পুরসভায় মেয়র পদে বসার ছয় মাসের মধ্যে ভোটে জিতে কেউ কাউন্সিলর হতে পারবেন বলে আইন পাশ করে রাজ্য সরকার। সেই সময় ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন পেশায় চিকিৎসক প্রণব। দলীয় স্বার্থে নিজের কাউন্সিলর পদে থেকে ইস্তফা দেন তিনি। পরে ওই ওয়ার্ড থেকে জিতে কাউন্সিলর হয়ে মেয়র পদে বসার শর্ত পূরণ করেছিলেন ফিরহাদ।
যদিও, রাজনীতিকের চেয়ে চিকিৎসক হিসেবেই বেশি জনপ্রিয় ছিলেন প্রণব। ২০১০ সালে তাঁকে ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করে তৃণমূল। তৃণমূলের গড় দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর বিধানসভার এই ওয়ার্ডে বিপুল ভোটে জয় পান প্রণব। পাঁচ বছর ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর থাকার সময় প্রণব ভাল কাজ করেছিলেন বলেও দলের একাংশের মত। ২০১৫ সালের পুরভোটে ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হলে, প্রণবকে ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করা হয়। সেই ভোটে ভাল ব্যবধান নিয়ে জিতেছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৮ সালে ফিরহাদকে মেয়র পদে বসানোর পথ মসৃণ করতে নিজে কাউন্সিলর পদে ইস্তফা দেন প্রণব। তার পর আর কোনও ভোটে তিনি দাঁড়াননি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন প্রণব। বাড়ি থেকে খুব বেশি বার হতেন না। বুধবার ক্যাওড়াতলা শ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তাঁর।
বর্ষীয়ান সতীর্থের প্রয়াণে নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘‘আমি দুঃখিত, আজ সকালে প্রণব বিশ্বাস ৯১ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তিনি ছিলেন এক জন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও স্বনামধন্য চিকিৎসক। তিনি কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও অনুগামীদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।’’