গড়িয়াহাটের এই জায়গাতেই চলে গোলমাল। রবিবার। নিজস্ব চিত্র
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে মিছিল বার করছিলেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। সেই মিছিলে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রবিবার সকালে গড়িয়াহাট মোড়ের কাছে এই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায় এবং তৃণমূলকর্মী মিম ঘোষ (দেবরাজ)-সহ শাসক দলের কয়েক জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বিজেপি। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে গড়িয়াহাট থানার পুলিশ। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ গড়িয়াহাট অটোস্ট্যান্ড থেকে জনা দশেক বিজেপি কর্মী মিছিল করে গড়িয়াহাট মোড়ের কাছে একটি মিষ্টির দোকানের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিজেপি কর্মী মহেশ্বর বর্মা বলেন, ‘‘আমরা তখন সবে জড়ো হয়েছি। হঠাৎই ২০-২৫ জন তৃণমলকর্মী আমাদের দিকে তেড়ে আসেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হাতে থাকা ঝাঁটা, উইকেট দিয়ে মারতে শুরু করেন। খোদ তৃণমূল কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায় ঝাঁটা দিয়ে আমাদের মারধর করেছেন।’’ সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক বিজেপি কর্মী তাঁর হার ছিনতাই-সহ যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়েরা এবং পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, এ দিনের ঘটনায় মাথা ফেটেছে এক পুলিশকর্মীরও। বিজেপি কর্মী বিবেক সিংহ বলেন, ‘‘ওরা উইকেট দিয়ে আমার হাতে আঘাত করে। এক তৃণমূলকর্মী আমার মাথায় আঘাত করতে গেলে এক পুলিশকর্মীর মাথায় লাগে। তাঁর মাথা ফেটে যায়। এক মহিলা সিভিক ভলান্টিয়ার এবং আরও এক পুলিশকর্মী নিগৃহীত হন।’’ যদিও পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে, তাদের কোনও কর্মীকে মারধরের ঘটনা ঘটেনি। গড়িয়াহাট থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দু’পক্ষের মধ্যে মারধর হলেও কোনও পুলিশকর্মী আহত হননি।’’
এ দিনের ঘটনা সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুদর্শনাদেবীকে বারবার ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। পরে এসএমএস করা হলে উত্তরে শুধু জানান, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ।’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘করোনা মোকাবিলা, উন্নয়ন— এ সব কাজ না করে বিজেপি শুধু অভিযোগ করার জন্যই জন্মেছে। পুর ভোটের মুখে মিথ্যা অভিযোগ করে ফায়দা লুটতে চাইছে ওরা। এই সব মিথ্যা অভিযোগকে গুরুত্ব দেওয়ার মতো সময় আমাদের নেই।’’
লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘তিন জনকে ধরা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’