Jadavpur University Student Death

‘সফল অপরাধী, কিন্তু ব্যর্থ অভিনেতা’, যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত তিন জন ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতে

যাদবপুরকাণ্ডে শুক্রবার যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, শনিবার আলিপুর আদালত থেকে তাঁদের ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৩১ অগস্ট পর্যন্ত হেফাজতে থাকতে হবে ধৃতদের।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৩ ১৭:০৯
Share:

আদালতে যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত এক পড়ুয়া। — নিজস্ব চিত্র।

যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত তিন পড়ুয়াকে ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত। আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজতে থাকতে হবে। শনিবার তাঁদের আদালতে হাজির করানো হলে পুলিশের তরফে জানানো হয়, ধৃতেরা তদন্তকে বিপথে চালনা করার চেষ্টা করছেন। তাঁদের প্রত্যেককে ‘সফল অপরাধী, কিন্তু ব্যর্থ অভিনেতা’ বলে উল্লেখ করেছেন সরকার পক্ষের আইনজীবী। তাঁর দাবি, ধৃতেরা নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। তাঁদের বয়ানে অসঙ্গতি রয়েছে। তদন্তের অভিমুখ বদলাতে চাইছেন এই তিন অভিযুক্ত।

Advertisement

শুক্রবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের প্রাক্তনী শেখ নাসিম আখতার, গণিত বিভাগের প্রাক্তনী হিমাংশু কর্মকার এবং কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সত্যব্রত রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার আলিপুর আদালতে হাজির করিয়ে তাঁদের হেফাজতে চায় পুলিশ। আইনজীবী জানান, যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার অন্য এক অভিযুক্তের বয়ান থেকে এই তিন জনের নাম উঠে এসেছে। এ ছাড়া, হস্টেলের মেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের সঙ্গেও কথা বলেছে পুলিশ। সেখান থেকেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে বলে দাবি। ধৃত তিন জনেরই মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরার মুখে তাঁদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন। যা জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, জানাচ্ছেন। কিন্তু শেষে দাবি করছেন, ‘‘আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না।’’ এর থেকেই অভিযুক্তদের বয়ানের অসঙ্গতি স্পষ্ট হচ্ছে। পুলিশের ধারণা, যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গেই এঁরা অপরাধ করেছেন। কিন্তু অভিনয়টা কেউ ঠিক মতো করতে পারছেন না।

Advertisement

ধৃতদের পক্ষের আইনজীবীরা পাল্টা সওয়ালে জানান, সাক্ষী হিসাবে ডেকে এই তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ যাকে পারছে, তাকেই গ্রেফতার করে নিচ্ছে বলে দাবি ওই আইনজীবীদের। এ ভাবে চললে সকলকেই গ্রেফতার করতে হবে বলেও জানান তাঁরা। একই সঙ্গে এই পড়ুয়াদের মেধা এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার দিকটিও আদালতে তুলে ধরা হয়েছে।

ধৃত সত্যব্রতের আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, তাঁকে যখনই ডাকা হয়েছে, তখনই হাজিরা দিয়েছেন। নাসিম ঘটনার পর বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। তাঁর আইনজীবী জানান, সম্প্রতি তাঁর দাদু মারা গিয়েছেন। সেই কারণেই নাসিমকে বাড়ি যেতে হয়েছিল। ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেন আইনজীবী। কিন্তু দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারক পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

যাদবপুরকাণ্ডে এর আগে আরও ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতেরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রাক্তনী সৌরভ চৌধুরী, সমাজবিদ্যার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মনোতোষ ঘোষ, অর্থনীতির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র দীপশেখর দত্ত, জম্মুর বাসিন্দা মহম্মদ আরিফ (তৃতীয় বর্ষ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), পশ্চিম বর্ধমানের বাসিন্দা আসিফ আফজল আনসারি (চতুর্থ বর্ষ, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা অঙ্কন সরকার (তৃতীয় বর্ষ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির বাসিন্দা অসিত সর্দার, মন্দিরবাজারের সুমন নস্কর এবং পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার বাসিন্দা সপ্তক কামিল্যা। পুলিশের দাবি, প্রথম থেকেই এরা প্রত্যেকে তদন্তের অভিমুখ বদল করতে চাইছেন। শুক্রবার গ্রেফতার হওয়া নাসিম, হিমাংশু এবং সত্যব্রতেরাও একই ভাবে অসহযোগিতার চেষ্টা করছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement