ভেঙে পড়া ব্রিজ। —ফাইল চিত্র।
এক বছরের মধ্যে শেষ করতে হবে মাঝেরহাটের নতুন সেতু নির্মাণের কাজ। পুরো বিষয়টির দেখভালের জন্য তিন ইঞ্জিনিয়ারকে বিশেষ দায়িত্ব দিল রাজ্যের পূর্ত দফতর।
গত শুক্রবার পূর্ত দফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সাদার্ন হাইওয়ে ডিভিশনের সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার অপূর্ব ভৌমিক, হাওড়া হাইওয়ে ডিভিশনের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অনিলকুমার সিংহ এবং আলিপুর ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সুদীপ্ত সাহাকে মাঝেরহাট সেতু নির্মাণে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন। মাঝেরহাট ‘প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন ইউনিট’-এর প্রজেক্ট ডিরেক্টর হয়েছেন অপূর্ববাবু। অনিলবাবু এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার এবং সুদীপ্তবাবু অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন।
মাঝেরহাট সেতুর জন্য আলাদা করে তিন ইঞ্জিনিয়ারকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হল কেন?
প্রশাসনিক মহলের ব্যাখ্যা, এক বছরের মধ্যে নতুন সেতু নির্মাণ করতে হবে। সেই জন্যই তিন জনকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্য ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ারদের ওই দায়িত্ব দেওয়ার কারণ হিসেবে প্রশাসনিক মহলের বক্তব্য, মাঝেরহাট সেতুর সঙ্গে যুক্ত থাকা ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। পুলিশি তদন্তেরও মুখোমুখি হতে হয়েছে ওই ইঞ্জিনিয়ারদের। যাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, নতুন সেতু নির্মাণে তাঁদের দায়িত্ব দিলে প্রশ্ন উঠতে পারে। তাই অন্য ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মাঝেরহাট সেতু নির্মাণ প্রক্রিয়া প্রশাসনিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ তো বটেই। রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও এটি রীতিমতো চর্চার বিষয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, এক বছরের মধ্যে সেতু নির্মাণ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। যদি সেটা করা না-যায়, যত দ্রুত সম্ভব তা শেষ করতে হবে। কারণ, ২০২০ সালে কলকাতা পুরসভার ভোট রয়েছে। তার পরের বছর বিধানসভা নির্বাচন। মাঝেরহাট সেতু রাজ্যের চার হেভিওয়েট মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিধানসভা এলাকার সঙ্গে যুক্ত। ওই এলাকা দক্ষিণ কলকাতার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। যা তৃণমূলের খাসতালুক হিসেবেই পরিচিত বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। তাঁদের মতে, সব মিলিয়েই মাঝেরহাটে নতুন সেতু নির্মাণের বিষয়টি রাজনৈতিক দিক থেকে শাসক দলের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।