যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
ফারাক মেরেকেটে দুশো মিটার। এই দূরত্বের মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) সমর্থক-কর্মীরা এ বছর দু’টি সরস্বতী পুজো করছেন।
শাসকদলের এই ছাত্র সংগঠন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন শক্তিশালী নয়। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের মধ্যে এমন দলাদলিতে বিস্ময় ছড়িয়েছে ক্যাম্পাসে। গত দু’বছর ধরে যাদবপুরের পরিচিত টিএমসিপি নেতা সঞ্জীব প্রামাণিকের উদ্যোগে ক্যাম্পাসের সুবর্ণ জয়ন্তী ভবনে সরস্বতী পুজো হয়। এ বারও সেই পুজো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে এ বার একটু দূরে গান্ধী ভবনে টিএমসিপি-র আরও একটি পুজো হওয়ার কথা।
দু’টি পুজোর পোস্টারের রং, নকশা প্রায় এক। সুবর্ণ জয়ন্তী ভবনের পুজো সঞ্জীবের উদ্যোগে করা হচ্ছে বলে লেখা। অপরটির উদ্যোক্তা ‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই পুজোর মূল আয়োজক, বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি ইউনিটের সভানেত্রী রাজন্যা হালদার। গত অগস্টে ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনায় যাদবপুর যখন উত্তাল, সেই সময়ে টিএমসিপি ইউনিটে রাজন্যাকে সভানেত্রী করা হয়। চেয়ারপার্সন করা হয় সঞ্জীবকে। তবে বর্তমানে রাজন্যা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী।
রবিবার সঞ্জীব বলেন, ‘‘কোনও বহিরাগত ছাত্র বা ছাত্রী আমাদের সংগঠনের নাম নিয়ে, পোস্টার চুরি করে কোথাও যদি পুজো করেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি সেই দায়িত্ব নেবে না।’’ ওই পুজোকে ‘ফেক’ পুজো বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘ওই পুজোকে কেন্দ্র করে কোনও বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে, সেই দায়িত্বও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি নেবে না।’’
অন্য দিকে রাজন্যা বলেন, ‘‘আমি প্রাক্তন ছাত্রী হয়ে গেলেও দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই এখনও যাদবপুরের টিএমসিপি ইউনিটের সভানেত্রী আছি। দলের সুপ্রিমোর নির্দেশেই এই পুজো করতে উদ্যোগী হয়েছি।’’
এই দুই পুজোর অনুমতি কর্তৃপক্ষ দিয়েছেন কি না, সেই বিষয়ে রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু রবিবার জানান, এ বছর সরস্বতী পুজো যাঁরা করছেন, তাঁদের বাধা দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদও (এবিভিপি) পুজো করার অনুমতি চেয়েছে। রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘এই বিষয়ে কাউকে আমরা বাধা দেব না।’’ তিনি জানান, পুজোর অনুমতি সঞ্জীবদের আগে থেকেই নেওয়া আছে। রাজন্যাদের তরফ থেকেও মৌখিক অনুমতি চাওয়া হয়েছে।