Summer Vacation

প্রবল দহনের জেরে এগিয়ে এসেছে গরমের ছুটি, পাঠ্যক্রম শেষ হবে কি? প্রশ্ন শিক্ষকমহলেই

সরকারি স্কুলের শিক্ষকেরাও চাইছেন তাপপ্রবাহের প্রকৃতি বুঝেই গ্রীষ্মের ছুটি দেওয়া হোক। গরমের ছুটি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছে বিভিন্ন শিক্ষকসংগঠন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৬:৩২
Share:

সরকারি স্কুলের শিক্ষকেরা চাইছেন তাপপ্রবাহের প্রকৃতি বুঝেই গ্রীষ্মের ছুটি দেওয়া হোক। প্রতীকী ছবি।

টানা ছুটি নয়। তাপপ্রবাহের গতিপ্রকৃতি বুঝে তবেই ছুটির সিদ্ধান্ত নেবে শহরের বেসরকারি স্কুলগুলি। কিছু স্কুল জানাচ্ছে, শনি ও রবিবার এমনিতেই ছুটি থাকে। আগামী সপ্তাহের প্রথম এক বা দু’দিন তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি দেখে তার পরে ছুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

Advertisement

সাউথ পয়েন্ট স্কুলে ১৭ এপ্রিল এবং ১৯ এপ্রিল ছুটি দেওয়া হয়েছে নার্সারি, ট্রানজ়িশন, চতুর্থ, পঞ্চম,ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণির। প্রথম,দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম এবং নবম শ্রেণিকে ১৮ এবং ২০ এপ্রিল ছুটি দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে তাপপ্রবাহ দেখে ২৪ মার্চ পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস জানাচ্ছেন, আগামী সপ্তাহে কয়েক দিন পড়ুয়াদের ঘণ্টা তিনেক আগেই ছুটি দেওয়া হবে।

মর্ডান হাইস্কুল ফর গার্লসের ডিরেক্টর দেবী করের মতে, পরিস্থিতি বুঝে ঠিক হবে। বরং পড়ুয়াদের যেন স্কুলে তাপপ্রবাহের কবলে পড়তে না হয়, সেই দিকে নজর রাখা হচ্ছে। দেবী বলেন, ‘‘উষ্ণায়নের জন্য পরিবেশ এত উত্তপ্ত হচ্ছে। প্রতি বছরই এপ্রিলে তাপপ্রবাহ হচ্ছে। তা হলে কেন আগেই গরমের ছুটির পরিকল্পনা হচ্ছে না? হঠাৎ ছুটি দিলে পড়ার ক্ষতি হয়।’’ শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্যও জানান, আগামী সপ্তাহে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা। ব্রততী বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের মাঠে খেলতে নিষেধ করা হয়েছে। বার বার জল খেতে বলছি। হাল্কা টিফিন আনতে বলা হয়েছে।’’

Advertisement

গরমের ছুটি এগিয়ে আসা নিয়ে শিক্ষা দফতর যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, সিআইএসসিই বোর্ডের সচিব জেরি অ্যারাথুন শুক্রবার তা তাঁদের বোর্ডের স্কুলগুলিকে পাঠিয়েছেন। যদিও এই প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করতে চাননি।

অন্য দিকে, সরকারি স্কুলের শিক্ষকেরাও চাইছেন তাপপ্রবাহের প্রকৃতি বুঝেই গ্রীষ্মের ছুটি দেওয়া হোক। তাই গরমের ছুটি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেছে বিভিন্ন শিক্ষকসংগঠন। ‘স্কুল অব হেডমিস্ট্রেসেস অ্যান্ড হেডমাস্টার্স’-এর সম্পাদক অরুণ ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘গরমের ছুটি ২ মে থেকে। অথচ তাপপ্রবাহ এখন চলছে। ওই সময়ে তা থাকবে না, তার নিশ্চয়তা কোথায়? প্রয়োজনে সকালে স্কুল হোক।’’ ‘পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণাংশু মিশ্রের আশঙ্কা, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে স্কুল ছুটি থাকলে পড়াশোনায় ক্ষতি হবে। এর মধ্যে গরমেরছুটি এগিয়ে এল। সিলেবাস শেষহবে তো?’’

প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক তথা শিক্ষক নেতা নবকুমার কর্মকারের মতে, ‘‘পরিকল্পনা করে গরমের ছুটি দিলে আগে ছুটি দেওয়ার অবস্থা হয় না। এখানে গরমের ছুটি ১১ দিন আর পুজোর ছুটি এক মাস। মহালয়া থেকে কালীপুজো পর্যন্ত ছুটি থাকে। বরং গরমের ছুটি আরও ১৫ দিন বাড়ানো হোক। ও দিকে লক্ষ্মীপুজোর পরে স্কুল খোলা হোক।’’ ‘কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাসের মতে, ‘‘এখন তাপপ্রবাহের কথা ভেবে দিন চারেক ছুটি দেওয়া হোক। পরে পরিস্থিতি বুঝে ঠিক হোক।’’ ডিএসও পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়ের মত, ‘‘শিক্ষাবিদ ও চিকিৎসকদের মতের ভিত্তিতেই গরমের ছুটি ঘোষণার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement