প্রতীকী চিত্র।
রান্না করতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হল এক কিশোরী। তাকে বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ হলেন তার ‘স্বামী’। রবিবার চিৎপুর থানা এলাকার গোপাল মুখার্জি রোডের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ দু’জনেই আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। কিশোরীর শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। তার স্বামীর শরীরের অনেকটাই পুড়ে যাওয়ায় তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক।
পুলিশ সূত্রের খবর, লকডাউনের সময়ে টালার বাসিন্দা, বছর ষোলো-সতেরোর ওই কিশোরী বাড়ি থেকে পালিয়ে চিৎপুরের গোপাল মুখার্জি রোডের এক যুবকের বাড়িতে আসে। ওই যুবকের সঙ্গে আগে থেকেই আলাপ ছিল তার। সে ওই যুবকের বাড়িতে এসে তাঁকে বিয়ে করে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তার পর থেকে কিশোরী চিৎপুরেই থাকছিল।
রবিবার বিকেলে চিৎপুর থানার পুলিশের কাছে খবর আসে, এক কিশোরী অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে পুড়ে গিয়েছেন এক যুবক। এর পরে পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে মেয়েটির বয়ান নেয়। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বয়ানে মেয়েটি জানায় যে রবিবার সে রান্না করছিল। সেই সময়ে আচমকা তার গায়ে আগুন লেগে যায়। ওই যুবকও তখন বাড়িতে ছিলেন। ওই কিশোরী জানিয়েছে, তিনি তাকে বাঁচাতে এলে তাঁর গায়েও আগুন লেগে যায়। দু’জনের চিৎকারে তত ক্ষণে পড়শি ও বাড়ির লোকজনও ছুটে আসেন। তাঁরাই দু’জনকে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এ দিকে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা বলেও পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জেনেছে। চিৎপুর থানা সূত্রের খবর, অগ্নিদগ্ধ হওয়ার ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও রকম অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে নাবালিকা মেয়েকে বিয়ে করার অপরাধে এই যুবকের বিরুদ্ধে প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস (পকসো) আইনের ৬ নম্বর ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
টালার বি টি রোডের বাসিন্দা ওই কিশোরী আগেও দু’বার বাড়ি থেকে পালিয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রের খবর। প্রথম বার টালারই এক যুবকের সঙ্গে সে ছিল। সেই সময়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পরে আরও এক বার অন্যত্র পালিয়েছিল ওই কিশোরী। তার পরে সে চিৎপুরের যুবককে বিয়ে করে। এই ঘটনায় কিশোরীর বাড়ি থেকে কোনও রকম অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
অন্য দিকে, সম্প্রতি গরফা থেকে বছর ১৬-র এক কিশোরী আনন্দপুরের এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যায়। মেয়েটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে জানতে পারে, যুবকের সঙ্গে ওই কিশোরী দিঘায় গিয়েছে। সেই মতো দিঘা কোস্টাল পুলিশের সাহায্য নিয়ে গরফা থানার পুলিশ কিশোরীর খোঁজ করতে যায়। নিউ দিঘার সব হোটেলে অভিযান চালিয়েও ওই কিশোরীর খোঁজ মেলেনি। শেষে ২০ তারিখ ওল্ড দিঘায় সমুদ্রের ধারে দু’জনের খোঁজ পায় পুলিশ। কিশোরীকে উদ্ধার করার পাশাপাশি ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কলকাতায় আনার পরে ওই কিশোরীকে এসএসকেএম হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।