দত্তক নেওয়া চারার পাশে লেখা শিক্ষকের নাম। —নিজস্ব চিত্র।
তিন ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে লাগানো হয়েছে ১০০টি আম, জাম, কামরুল, নিম, দেবদারু, পেয়ারা, শিমুল, লিচুর চারা। পরিবেশ বাঁচাতে এ বার সেই চারাদের দত্তক নিলেন প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। পাশে দাঁড়ালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। বনমহোৎসব উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ক্যাম্পাসে সম্প্রতি তিন দিন ধরে গাছ লাগানো হয়। নদিয়ার মোহনপুর ডেয়ারি টেকনোলজি ক্যাম্পাসে ১০টি, ভেটেরিনারি ক্যাম্পাসে ৩৫টি, চকগড়িয়ার মৎস্যবিজ্ঞান ক্যাম্পাসে ৩০টি এবং বেলগাছিয়া ক্যাম্পাসে ২৫টি গাছ লাগানো হয়েছে। আর সেই সব গাছ দত্তক নিয়েছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই মোট ৫০ জন শিক্ষক।
পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিম (এনএসএস) এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের যৌথ উদ্যোগে সম্প্রতি চকগড়িয়া, মোহনপুর ও বেলগাছিয়া ক্যাম্পাসে বনমহোৎসব পালিত হয়। সেখানে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, আধিকারিক থেকে শুরু করে কর্মচারীদের আগ্রহ ও উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। আর সেখানেই গাছ দত্তক নেওয়ার মতো নতুন ধারণার জন্ম দিয়ে আয়োজকেরা পরিবেশ বাঁচানোর বার্তা দিয়েছেন। শুধু বৃক্ষরোপণে থেমে থাকলেই যে চলবে না, বরং রোপিত গাছকে সযত্নে লালনপালন করাও আমাদের দায়িত্ব— সে কথাই আর এক বার মনে করিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্তেরা মিলে বিভিন্ন গাছের মোট ১০০টি চারা রোপণ করেছেন। সেই সঙ্গে তাদের বড় করে তোলার দায়িত্বও তুলে নিয়েছেন নিজেদের কাঁধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পার্থ দাস বলেন, ‘‘শহর কলকাতায় গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে আসছে। পরিবেশ বাঁচাতে এখনই আমারা বৃক্ষরোপণে উদ্যোগী না হলে বিপদ আসন্ন।’’ বনমন্ত্রী জোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সারা রাজ্যের ছাত্র-শিক্ষকেরা গাছ লাগানো ও তার রক্ষণাবেক্ষণে এ ভাবেই এগিয়ে আসুন। বিশ্বে পরিবেশের অবস্থা ভয়ঙ্কর। রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন, প্রত্যেকে দু’টি করে গাছ দত্তক নিন। নিজের সন্তানকে বড় করতে যেমন আদর-যত্ন করেন, সে ভাবে গাছ লাগানোর পরে তাকেও লালনপালন করুন।’’
মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের ডিন শ্যামসুন্দর দানা দু’টি মেহগনি গাছ দত্তক নিয়েছেন। তিনি জানান, চারা দু’টি সদ্য রোপণ করা হয়েছে। এর পরে সেগুলি বেড়া দিয়ে ঘেরা হবে। তিনটি ক্যাম্পাসেই দত্তক নেওয়া গাছগুলির পাশে নামফলকে সেই শিক্ষকের নাম লিখে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কথায়, ‘‘গাছ লাগানোর সংখ্যা না বাড়ালে আগামী প্রজন্ম ফুসফুসের রোগে বেশি করে আক্রান্ত হবে। তাই এখন থেকেই আমাদের সচেতন হতে হবে।’’