—প্রতীকী চিত্র।
হাওড়ার দাশনগরের বেহারাপাড়ার বাসিন্দা, প্রৌঢ় রাজকুমার রামের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তে নামল হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও। দাশনগরের যে ক্লাবে ঘটনাটি ঘটেছিল, বুধবার সেখানে গিয়ে তদন্ত করেন গোয়েন্দারা। ক্লাবের ভিতরে এবং রাজকুমারের দেহ যেখানে পড়েছিল, সেখান থেকে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, মাথায় আঘাতের কারণেই মৃত্যু হয়েছে ওই প্রৌঢ়ের। তবে, কে বা কারা তাঁকে খুন করেছে বা তিনি পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছেন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
গত রবিবার রাতে দাশনগরের ওই ক্লাবে একটি জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠান মিটে যাওয়ার পরে সোমবার ভোরে ক্লাবের সিঁড়ির দরজার উল্টো দিকে দেওয়ালে হেলান দেওয়া অবস্থায় রাজকুমারের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রৌঢ়ের পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। পুলিশ প্রথমে ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা বলে মনে করলেও পরে মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন বিরাজময়ী রোডের ওই ক্লাবে কেটারিংয়ের জিনিসপত্র পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন রাজকুমার। ক্লাবে সে দিন এক ব্যক্তির ছেলের জন্মদিনের অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের বহু সদস্য ও শুভানুধ্যায়ী। তাঁদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। কারণ তাঁরা মনে করছেন, ওই দিন খাওয়াদাওয়ার শেষে ঠিক কী ঘটেছিল, তা ঠিক মতো বলতে পারবেন পার্টিতে আসা লোকজন ও ক্লাবের সদস্যেরাই।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া রাজকুমারের চশমা, জুতো, মোবাইল ফোন-সহ অন্যান্য নমুনা ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে ফরেন্সিক পরীক্ষায়। ঘটনার রাতে অনুষ্ঠান চলাকালীন কারা রাজকুমারকে ফোন করেছিলেন, বা তিনি কাউকে ফোন করেছিলেন কি না, সে সব যাচাই করতে তাঁর মোবাইলের কল লিস্ট পরীক্ষা করা হচ্ছে।
রাজকুমারের দেহ উদ্ধারের সময়ে এক যুবক ও তাঁর মা পুলিশের কাছে দাবি করেছিলেন, দেহটি দেখে তাঁদের মনে হয়েছিল, ওই প্রৌঢ়কে কেউ যেন দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসিয়ে রেখেছে। সেই যুবক ও তাঁর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা। পাশাপাশি, এলাকাবাসীর অভিযোগ ছিল, ওই ক্লাবে রাতে প্রায়ই নেশার আসর বসে। সেখানে মদের জোগান দেন এক প্রোমোটার। সে ব্যাপারেও বিস্তারিত জানতে তথ্য সংগ্রহ করছে পুলিশ। হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুন, না কি আত্মহত্যা, ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে সেটা স্পষ্ট নয়। সব দিক দেখা হচ্ছে। আশা করা যায়, কিছু দিনেই পুরো ঘটনাটি পরিষ্কার হবে।’’