অপেক্ষায়: যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার আগে দমদম রোডে বাগজোলা খালের উপরে নতুন সেতু। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র।
দমদম রোডে বাগজোলা খালের উপরে নতুন করে তৈরি হওয়া সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হল। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে সেতুটির উদ্বোধন করেন। এর আগে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে সকালের কয়েক ঘণ্টা ছোট গাড়ি চলাচলের জন্য খোলা রাখা হয়েছিল সেতুটি। তবে পুরকর্তারা জানিয়েছেন, সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। তাই বাস ও পণ্যবাহী গাড়ি কয়েক দিন পর থেকে চলাচল করতে পারবে ওই সেতু দিয়ে।
এই খবরে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও ওই রাস্তায় গাড়ি চলাচল কতটা উন্নত হবে, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অনেকেরই অভিযোগ, দমদম স্টেশন থেকে ওই রাস্তায় প্রবেশের মুখে দু’দিকে রোজ বাজার বসে, যা আগের তুলনায় কলেবরে আরও বেড়েছে। দমদম স্টেশন থেকে নাগেরবাজার পর্যন্ত অংশে পথচারীদের চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত পরিসর নেই। কারণ, ফুটপাত দখল হয়ে গিয়েছে দোকান ও ইমারতি সামগ্রীর স্তূপে। ফুটপাতের বহু দোকানই রাস্তায় তাদের পসরা সাজিয়ে রাখে। তাই পথ চলা কতটা সহজ হবে, তা নিয়ে নিশ্চিত নন অনেকেই। যদিও দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই রাস্তায় যানবাহন এবং পথচারীদের চলাচল মসৃণ করতে সেতু নির্মাণের পাশাপাশি রাস্তা সম্প্রসারণ ও সার্ভিস রোড তৈরির কাজ চলছে। সেগুলি সম্পূর্ণ হলে এই সমস্যা মিটবে।
২০২১-এর ১৮ অগস্ট আগের পুরনো সেতুতে বড়সড় গর্ত দেখা দিয়েছিল। পূর্ত দফতর এবং পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তার পরেই ওই সেতুতে ভারী যান চলাচল বন্ধ করা হয়। শুধুমাত্র ছোট গাড়ি যাতায়াত করছিল। এর পরে পুরনো সেতু ভেঙে নতুন করে সেটি তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়। পূর্ত দফতর নতুন সেতু তৈরির কাজ শুরু করে। সেই কাজ চলাকালীন খালের দু’দিক দিয়ে অটো ও গাড়ি চলাচল করছিল। আর খালের দমদম স্টেশন লাগোয়া অংশ থেকে কলকাতার দিকে চলাচল করছিল বাস।
এ দিন ওই সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সাংসদ সৌগত রায়, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, বিধায়ক অদিতি মুন্সী, দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারপার্সন কস্তুরী চৌধুরী-সহ পুরপ্রতিনিধিরা। স্থানীয় বাসিন্দা স্মিতা রায়ের কথায়, ‘‘প্রায় তিন বছরের অপেক্ষার অবসান। তবে, এই এলাকায় দোকান, বাজার ফুটপাত ছাড়িয়ে এখন রাস্তায় নেমে এসেছে। ফুটপাতে নানা ধরনের দখলদারি, অটো, টোটোর স্ট্যান্ড। ফলে, ঘিঞ্জি এই এলাকায় পথ চলা কতটা সুগম হবে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছি না।’’ যদিও এই সেতুর কাজ এখনও বাকি বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
পথচারীদের সমস্যার কথা স্বীকার করে নিলেও দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ সঞ্জয় দাসের দাবি, ‘‘মূল সেতুর কাজ সম্পূর্ণ। তবে, আরও কিছুটা কাজ বাকি। সেটিও দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। কয়েক দিন পর থেকে ভারী গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ফুটপাতে রেলিং দেওয়া হচ্ছে। দোকান-বাজার থাকলেও ফুটপাতে যাতে পথচারীদের চলাচলের জায়গা থাকে, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। কাজ পুরোপুরি শেষ হলে আশা করা যায়, সমস্যা আগের তুলনায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে।’’