জাতীয় পরিবেশ আদালত। ফাইল ছবি।
প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। কিন্তু কবে তা শেষ হবে, তা অনেক সময়ে উল্লেখ করা হয় না। আবার মেয়াদ উল্লেখ করা হলেও তা নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয় না। এই নিয়ে রাজ্য সরকারকে একাধিক বার ভর্ৎসনা করেছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। কেষ্টপুর ও বাগজোলা খালের দূষণ কমানোর প্রকল্পে একই প্রশ্ন তুলেছিল আদালত। যারমধ্যে অন্যতম ছিল দুই খালের পলি নিষ্কাশন নিয়ে সরকারের ভূমিকা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে সম্প্রতি রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বাগজোলা খালের পলি নিষ্কাশনের কাজ প্রায় শেষের মুখে। আর কেষ্টপুর খালের পলি নিষ্কাশনের কাজ শেষ হবে আগামী৩০ এপ্রিল।
অনেক টালবাহানার পরে বাগজোলা খালের পলি তোলার কাজ শেষ হতে চললেও কেষ্টপুরখালের কাজ সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে। কারণ, এই ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ভূমিকা যে সদর্থক নয়, তা নিয়ে একাধিক বার সরব হয়েছে পরিবেশ আদালতই। এমনিতে দুই খালের দূষণ কমানো নিয়ে আদালতের নির্দেশের কতটা বাস্তবায়ন হয়েছে, তা নির্দিষ্ট সময় পরপরই পর্যালোচনা করা হয়েছে। গত বছরের মে মাসে সংশ্লিষ্ট মামলারনিষ্পত্তির রায়ে আদালতজানিয়েছিল, এ ব্যাপারে ২০২১ সালের ২৯ মার্চ, ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৪ ডিসেম্বর এবং ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নির্দেশ উল্লেখযোগ্য। যেমন ২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর খালের পলি নিষ্কাশনের কাজ নিয়ে আদালত জানিয়েছিল, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তার পরেই ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্য সরকার আদালতেজানায়, খালের সংস্কারের আর্থিক অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। কাজ দ্রুত শুরু হবে।
এই ঘটনার উল্লেখ করে এক পরিবেশবিজ্ঞানী জানাচ্ছেন, ২০১৭ সালে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই মামলা শুরু করে পরিবেশ আদালত জানিয়েছিল, গঙ্গার সার্বিক দূষণ কমাতে গেলে খালের দূষণওকমানো দরকার। তার পরেও কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার জন্য গত বছরের সেপ্টেম্বরেইরাজ্যকে ৩৫০০ কোটি টাকার পরিবেশগত ক্ষতিপূরণ ধার্য করেছিল পরিবেশ আদালত। ওই পরিবেশবিজ্ঞানীর কথায়, ‘‘তার মানে এটাই যে তরল বর্জ্যেরপরিশোধনের মূল সমস্যাটি থেকেই গিয়েছে। বাগজোলা, কেষ্টপুর খালের দূষণ, পলি নিষ্কাশন, এগুলো তারই অংশ।’’ সংশ্লিষ্ট মামলায়আদালত-বান্ধব হিসেবে নিযুক্ত পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের বক্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকার সময়ের উল্লেখ করেছে ঠিকই। দেখা যাক, ওই মেয়াদে কাজ সম্পূর্ণ হয় কি না।’’