মন্ত্রীর তিরে বিদ্ধ রামসর

পূর্ব কলকাতার জলাভূমিতে শিক্ষা হাব করা গেলে জলাধার তৈরি করা যাবে না কেন? বৃহস্পতিবার জলাভূমি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক কমিটি ‘রামসর’-এর প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে এমনই প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী এবং কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৭
Share:

খুঁটিয়ে: পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে রামসর-প্রতিনিধি। ছবি: শৌভিক দে

পূর্ব কলকাতার জলাভূমিতে শিক্ষা হাব করা গেলে জলাধার তৈরি করা যাবে না কেন? বৃহস্পতিবার জলাভূমি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক কমিটি ‘রামসর’-এর প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে এমনই প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী এবং কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, যদি শিক্ষা হাবে পরিবেশের ক্ষতি না হয় তা হলে জলাধারেই বা হবে কেন? পরিবেশ দফতরের খবর, বৈঠকে এ বিতর্কের সমাধান হয়নি। তবে জমির চরিত্র বদলে অন্য কিছু করা যায় কি না তা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। শোভনবাবু বলেন, আজ, শুক্রবার পরিবেশ দফতরের কর্মশালায় এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

Advertisement

১৯৭১-এ গোটা বিশ্বের জলাভূমি সংরক্ষণ নিয়ে ইরানের রামসর শহরে সম্মেলন হয়েছিল। পরিবেশগত গুরুত্বের জন্য পূর্ব কলকাতার জলাভূমির ঠাঁই হয় সেই তালিকায়। তাই সেখানকার চরিত্র ও উন্নয়নের কাজ করা নিয়ে বিধিনিষেধ রয়েছে। ফলে ওই এলাকায় বেশ কিছু সরকারি কাজও আটকে রয়েছে। সেই নিয়েই রামসর, পরিবেশকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চাইছে রাজ্য। তাই কলকাতায় এসেছেন রামসরের এশিয়া-ওশিয়ানিয়া এলাকার কর্তা লিউলিন ইয়ং। ১৯৮৬-র পর এই প্রথম রামসরের প্রতিনিধি শহরে এসেছেন।

পরিবেশ দফতরের খবর, এ দিন বৈঠকের শুরুতেই শোভনবাবু রামসর-কর্তার কাছে জানতে চান, পূর্ব কলকাতার ওই জলা এলাকায় উন্নয়নের কোনও কাজ করা যেতে পারে কি? পরিবেশ দফতরের খবর, ওই এলাকায় শিক্ষা হাব গোছের কিছু করলে সমস্যা নেই বলে ইয়ং জানান। পরিবেশমন্ত্রী অবশ্য তাঁকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, শিক্ষা হাব হলে জলাধার কিংবা বর্জ্যের ভাগাড়ে আপত্তি কোথায়? ইয়ং এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনও মতামত দেননি বলেই পরিবেশ দফতরের খবর। বৈঠকের আগে এ দিন সকালে এবং দুপুরে পূর্ব কলকাতার জলাভূমি এলাকায় পরিদর্শনও করে পরিবেশ দফতর, রামসর কর্তা এবং পরিবেশকর্মীদের যৌথ দল।

Advertisement

পরিবেশ দফতরের খবর, উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হচ্ছে এই যুক্তিতে পূর্ব কলকাতার জলাভূমির চরিত্র বদল করতে চাইছেন পুরসভা ও পরিবেশ দফতরের শীর্ষকর্তারা। যদিও পরিবেশকর্মীদের মতে, জমির চরিত্র বদলালেই জলাভূমি নির্বিচারে ধ্বংস করা হবে। ওই এলাকার বেআইনি নির্মাণগুলিও বৈধতা পেয়ে যাবে। পূর্ব কলকাতার জলাভূমি সংরক্ষণে ইতিমধ্যেই গণ কনভেনশনের ডাক দিয়েছে পরিবেশকর্মীদের যৌথ সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’। আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও জানিয়েছে তারা। পরিবেশমন্ত্রী অবশ্য দাবি করেছেন, উন্নয়নের কাজ করা হলেও পরিবেশের ক্ষতি হবে না। সেই কারণেই কর্মশালার আয়োজন করে পরিবেশবিদ ও পরিবেশকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে এগোতে চাইছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement