Government Schools

কী ভাবে টাকা নয়ছয়, অভিযোগ নিয়ে জানতে প্রধান শিক্ষকদের চিঠি

পুরসভার তদানীন্তন বিরোধী দলনেত্রী, সিপিএমের রত্না রায় মজুমদার জানান, তিনি এই অনিয়মের বিষয়টি তৎকালীন মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৩ ০৫:৪৫
Share:

পুর বিদ্যালয়ের শৌচাগার সংস্কার বাবদ প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা গরমিলের অভিযোগের উঠেছে। —ফাইল চিত্র।

পুর বিদ্যালয়ের শৌচাগার সংস্কার বাবদ প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা গরমিলের অভিযোগের বিস্তারিত জানতে এ বার ৫০টি স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষকদের চিঠি পাঠাচ্ছেন কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে পুরসভা পরিচালিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে ৬৩টি শৌচাগার সংস্কার বাবদ প্রায় ৬০ হাজার টাকা করে নেওয়া হলেও আদৌ সেগুলি মেরামত করা হয়নি। মোটা টাকা অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে পুরসভার ভিজিল্যান্স বিভাগ ইতিমধ্যেই পুর শিক্ষা বিভাগের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে পুর শিক্ষা বিভাগের একাধিক তৎকালীন আধিকারিককে কারণ দর্শানোর চিঠিও ধরিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

পুরসভার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বলা যেতে পারে, পুর শিক্ষা বিভাগে এক রকম ‘পুকুর চুরি’ হয়েছে। এর বিস্তারিত জানতে ৫০টি পুর বিদ্যালয়ের তদানীন্তন প্রধান শিক্ষকদের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে তাঁরা অনেক তথ্য দিতে পারবেন। এতে তদন্তের ক্ষেত্রে পুরসভার সুবিধা হবে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, গত শুক্রবার থেকে প্রধান শিক্ষকদের ওই চিঠি পাঠানো শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তিন দিনের মধ্যে পুরসভার শিক্ষা বিভাগের চিফ ম্যানেজারের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই শৌচাগার সংস্কারের কাজ হয়েছিল। সেই সময়ে আমাকে পুর শিক্ষা বিভাগে এক দিন ডেকে পাঠিয়ে একাধিক রসিদে সই করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু যে কাজটা আমার তত্ত্বাবধানে হয়নি, তার রসিদে আমি কেন সই করব, এই প্রশ্ন তুলে সই করতে রাজি হইনি। ফলস্বরূপ, আমাকে বদলি করে দেওয়া হয়।’’

Advertisement

আর এক শিক্ষকের অভিযোগ, ‘‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কাজ শেষ হওয়ার পরে প্রধান শিক্ষকদের পুর শিক্ষা বিভাগে ডেকে ঠিকাদারদের দেওয়া বিলে সই করানো হয়েছিল। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী, সব বিদ্যালয় ঘুরে শৌচাগার সংস্কারের কাজ খতিয়ে দেখে এনওসি জমা পড়ার কথা। তার বদলে শিক্ষা বিভাগের একাধিক আধিকারিক প্রধান শিক্ষকদের ঘাড়ে বন্দুক ঠেকিয়ে নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে কাজটা করিয়েছেন।’’

পুরসভার তদানীন্তন বিরোধী দলনেত্রী, সিপিএমের রত্না রায় মজুমদার জানান, তিনি এই অনিয়মের বিষয়টি তৎকালীন মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলেন। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি। শৌচাগার নির্মাণে গরমিলের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে সরব হয়েছে বাম প্রভাবিত সংগঠন ‘কলিকাতা পৌরশিক্ষক ও কর্মী সঙ্ঘ’। তাদের অভিযোগ, শৌচাগার সংস্কারের কাজ দেখার কথা পুরসভার সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের। অথচ, ঠিকাদারদের দিয়ে পুরো কাজ করিয়ে প্রধান শিক্ষকদের দিয়ে খরচের রসিদে জোর করে সই করানো হয়েছিল।

সমস্ত অভিযোগ প্রসঙ্গে তদানীন্তন মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় রবিবার বলেন, ‘‘বহু দিন আগের কথা। আমার মনে নেই। যাঁদের কাছে জানতে চাইছে পুরসভা, তাঁরাই উত্তর দিন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement