কালীঘাটের অসম্পূর্ণ স্কাইওয়াক পরিদর্শনে ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল ছবি।
ঠিক ছিল, কালীপুজোর আগেই উদ্বোধন হবে কালীঘাট স্কাইওয়াকের। কিন্তু, তা আর সম্ভব হচ্ছে না বলে জানালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। শনিবার কলকাতা পুরসভায় আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে স্কাইওয়াকের উদ্বোধন সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, কাজ সম্পূর্ণ ভাবে শেষ না হওয়ায় কালীপুজোর আগে কালীঘাটের স্কাইওয়াকের উদ্বোধন হবে না। আরও মাসখানেক সময় লাগতে পারে।
মেয়র বলেন, ‘‘কালীঘাট স্কাইওয়াকের কাজ এখনও বাকি রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, যাতে দ্রুত কাজ শেষ করা যায়। যে ঠিকাদারি সংস্থা এই স্কাইওয়াক নির্মাণের দায়িত্ব নিয়েছিল, তারা নিজের সাধ্যের বাইরে গিয়ে এ কাজ হাতে নিয়েছিল। আমাদের আধিকারিকেরা সব রকম উপায়ে কাজটা শেষ করার চেষ্টা করছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কালীপুজোর আগে উদ্বোধন হবে, এমন কথা কেউ বলেনি। আর কয়েক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে গেলে স্কাইওয়াকের উদ্বোধন হবে।’’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি প্রশাসন সূত্রে খবর ছিল, কালীপুজোর আগে মুখ্যমন্ত্রী সময় দিলেই এই স্কাইওয়াকের উদ্বোধন করা হবে। সম্প্রতি স্কাইওয়াক নির্মাণের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন মেয়র। কিন্তু, স্কাইওয়াক নির্মাণ নিয়ে বিলম্বের জেরে ঠিকাদারি সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। গত সাত দিনের বেশি সময় ধরে দিনরাত কাজ করা হলেও, কালীপুজোর আগে সেই উদ্বোধনের কাজ শেষ করা যাবে না বলেই মনে করছেন পুরসভার একাংশের আধিকারিকেরা। তাই একটু সময় নিয়ে স্কাইওয়াক সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি হয়ে গেলে তা উদ্বোধন করে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে যাওয়ার জন্য স্কাইওয়াক তৈরির করার পরেই কালীঘাটেও তা তৈরির ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হয় কাজ। ঠিক হয়েছিল, দেড় বছরের মধ্যে কাজ শেষ হবে। কিন্তু, তা করা যায়নি। গত বছর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর পূর্ত দফতর এবং কলকাতা পুরসভার প্রায় ১০ জন আধিকারিককে নিয়ে স্টিয়ারিং কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির তত্ত্বাবধানেই স্কাইওয়াকের কাজ চলছে। নবান্ন সূত্রে খবর, প্রশাসনিক ভাবে এই স্কাইওয়াকের উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল শারদোৎসবের সময়। কিন্তু কাজ শেষ না হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
পরিকল্পিত স্কাইওয়াক ধরে ভক্তেরা মন্দিরের প্রধান ফটক পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারবেন। স্কাইওয়াকের দু'টি প্রান্তে লিফ্ট এবং চলমান সিঁড়ি বসানো হচ্ছে। প্রবেশ ও প্রস্থানের পাঁচটি গেটে থাকছে বিশেষ ধরনের চূড়া। আধুনিক পলিকার্বোনেট শিট দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে ৪৫০ মিটার দীর্ঘ এবং ১০.৫ মিটার প্রশস্ত স্কাইওয়াকের লোহার মূল কাঠামো। স্কাইওয়াকের জন্য ৭৭ কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ হলেও, কাজ পিছিয়ে যাওয়ায় খরচ বেড়ে ৯০ কোটি ছুঁয়েছে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। কালীঘাটে আগত পুণ্যার্থীদের যাতে কোনও রকম অসুবিধা না হয়, সে কথা মাথায় রেখেই এসপি মুখার্জি রোড, মহিম হালদার স্ট্রিট, গুরুপদ হালদার পাড়া রোড, সদানন্দ রোড এবং কালী টেম্পল রোড— এই পাঁচটি জায়গায় স্কাইওয়াকে প্রবেশ এবং প্রস্থানের পথ রাখা হয়েছে।