ফাইল চিত্র
সময়ভিত্তিক বা আংশিক নয়, সপ্তাহে দু’দিনের পাশাপাশি টানা ১০ দিন সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করার কথা ভাবছে বারাসত পুরসভা। রাজ্য সরকার বৃহস্পতিবার থেকে সপ্তাহে দু’দিন করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পাশাপাশি করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কিছু জায়গায় এলাকাভিত্তিক লকডাউনের কথাও জানানো হয়েছে। বারাসত পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আগামী বুধবার এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বার বার বলা সত্ত্বেও মাস্ক না-পরেই রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন বারাসতের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। দূরত্ব-বিধিও মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। শুধু তা-ই নয়, করোনায় আক্রান্তদের পরিবারের লোকজনও নানা অছিলায় বেরিয়ে পড়ছেন রাস্তায়। ধরপাকড় বা বুঝিয়ে বলা— কোনও কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। সেই কারণেই সোমবার পুরসভায় ডাকা এক বৈঠকে পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের বিষয়ে প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার আংশিক ও সময়ভিত্তিক লকডাউন শেষ হচ্ছে। বৃহস্পতিবার গোটা রাজ্যে লকডাউন। এর পরে এক-দু’দিন ছাড় দিয়ে গোটা বারাসতে ঘোষণা করা হতে পারে পূর্ণাঙ্গ লকডাউন।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন প্রশাসনিক অফিস, জেলা আদালত ও বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে জেলা সদর বারাসতে। ফলে বহু মানুষকে কাজের সূত্রে রোজ সেখানে যেতে হয়। এ দিনের বৈঠকে পুরসভার প্রশাসনিক কর্তারা জানান, বারাসত-সহ সংলগ্ন এলাকায় প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এত প্রচারের পরেও কিছু মানুষ মাস্ক ব্যবহার করছেন না। দূরত্ব-বিধিও মানা হচ্ছে না। এ সব কারণে পূর্ণাঙ্গ লকডাউন ছাড়া উপায় নেই। টানা ১০ দিন এই লকডাউন থাকার কথাও আলোচনা হয় বৈঠকে।
কাল, বুধবার পুরসভায় একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের প্রস্তাবটি রাখা হবে। প্রস্তাব পাশ হলে বাসিন্দাদের তা জানিয়ে দেওয়া হবে। বারাসত পুরসভার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক অশনি মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘গোটা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখার পরেই আমরা ১০ দিন পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ অশনিবাবুর কথায়, ‘‘পূর্ণাঙ্গ লকডাউন হলে কী ভাবে তা করা হবে, সর্বদলীয় বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হবে।’’
এ দিনও বারাসত, মধ্যমগ্রাম এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাস্ক না-পরে, দূরত্ব-বিধি উড়িয়েই জমায়েত, খোশগল্প চলছে। কিছু লোককে ধমকে বাড়ি পাঠানোর পাশাপাশি কয়েক জনকে আটকও করছে পুলিশ। এ বিষয়ে বারাসত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মাস্ক ছাড়া বেরোলে আটক করা হচ্ছে।
এ দিন মধ্যমগ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক রথীন ঘোষ বলেন, ‘‘পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের পথে আমরাও হাঁটব কি না, বুধবার আংশিক লকডাউন শেষ হওয়ার পরে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’’
এর পাশাপাশি এ দিন থেকেই এই জেলায় চালু হয়েছে ২৪ ঘণ্টার করোনা কন্ট্রোল রুম (নম্বর ৭৪৩৯৩৩৪৬২৪)। সকাল ৮টা থেকে তিনটি শিফটে এক জন করে মেডিক্যাল অফিসার এবং এক জন করে চিকিৎসককে নিয়ে এই কন্ট্রোল রুম চালু হয়েছে। বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বললেন, ‘‘চিকিৎসা নিয়ে সমস্যা কিংবা করোনা নিয়ে যে উদ্বেগ স্থানীয় মানুষের রয়েছে, এ বার তা কিছুটা হলেও কমবে।’’ এ দিন ওই কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে করোনা আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুপার।