যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার যে দু'টি র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে, তার একটিতে উঠে এসেছে সেই ‘ইন্ট্রো’র ভয়াবহতা।
অন্য আর একটি অভিযোগে জানানো হয়েছে, এক ছাত্র শারীরিক, মানসিক এমনকি যৌন হেনস্থারও শিকার। দু’টি অভিযোগ খতিয়ে দেখতে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডের বৈঠকে দু’টি পৃথক সাব কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অগস্টে র্যাগিংয়ের জেরে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার পরেই একের পর এক পড়ুয়া সমাজ মাধ্যমে ‘ইন্ট্রো’র বিভীষিকার কথা জানিয়েছিলেন। অভিযোগ, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের সিনিয়র ছাত্রদের সামনে পরিচয় দেওয়ার নামে চূড়ান্ত র্যাগিংয়ের শিকার হতে হয়। এ বারেও এক অভিযোগকারী সেই কথা ইউজিসির হেল্পলাইনে জানিয়েছেন।
নতুন ছাত্রদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার নামে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে ফেলা হয় তা জানিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক ছাত্র। তিনি ২০২২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্টলেক ক্যাম্পাসে কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। প্রথম দিনের ক্লাসেই চতুর্থ বর্ষের একদল ছাত্র এসে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ‘ইন্ট্রো’ চান। প্রসঙ্গত, নিজের নাম বলার পরে ওই ছাত্র হেসেছিলেন বলে শুরু হয় মানসিক চাপ। সঙ্গে অশ্লীল ভাষার ব্যবহার। এই অশ্লীল ভাষা যিনি ব্যবহার করেছিলেন সেই সিনিয়র ছাত্রের নাম অভিযোগপত্রে ছাত্রটি জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, ক্যান্টিনেও সিনিয়ররা ইন্ট্রো নিতে গেলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যে অনেক প্রথম বর্ষের পড়ুয়া না খেয়ে চলে আসেন। পাশের সিএবি মাঠে নিয়ে গিয়ে সিনিয়ররা প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের সঙ্গে যে যে আচরণ করেন তা র্যাগিংয়েরই নামান্তর।
এই পরিস্থিতিতে তখন অনেকেই মেন ক্যাম্পাসে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অন্য বিষয় পড়ার চেষ্টা করতে থাকেন। সূত্রের খবর, অভিযোগকারী ছাত্রটিও মেন ক্যাম্পাসে চলে যান। অভিযোগপত্রে তিনি জানান, ইন্ট্রোর নামে অন্যরাও র্যাগিংয়ের শিকার। তিনি বিষয়টি জানাচ্ছেন কারণ সম্প্রতি ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার ক্যাম্পাসে সম্পুর্ণ র্যাগিং বিরোধী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। সল্টলেক ক্যাম্পাসে যে সিনিয়র ছাত্র অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করেন বলে অভিযোগ, তিনি বর্তমানে যাদবপুরে স্নাতকোত্তর প্রথম বর্ষের ছাত্র বলে খবর। ইউজিসিকে দ্বিতীয় অভিযোগটি করেছে মেন ক্যাম্পাসের অর্থনীতি বিভাগের এক ছাত্রের পরিবার। তিনি এখন তৃতীয় বর্ষে রয়েছেন। অভিযোগ, তিনি শুধু মানসিক এবং শারীরিক হেনস্থার শিকারই নন, তাঁকে যৌন হেনস্থাও করা হয়েছে। স্পষ্টভাবে দুই চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রের নাম উল্লেখ করে এই অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ, ওই দুই সিনিয়র জোর করে ছাত্রটিকে মদ, সিগারেট খেতে বাধ্য করতেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিতেন না। এমনকি তাঁর বাবা-মাকে ফোনে সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হত বলে অভিযোগ।