স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অহেতুক খরচে রাশ টানতে আগেই কড়া অবস্থানের কথা জানিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন ছবি: সংগৃহীত।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থাও নিতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। এ বার স্বাস্থ্যকর্তারা দেখছেন, সরকারি হাসপাতালে অস্থিরোগের চিকিৎসার পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও অস্ত্রোপচার বা চিকিৎসা করানোর সময়ে রোগী চলে যাচ্ছেন বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে তাঁর চিকিৎসা হচ্ছে। এতেই রাশ টানতে এ বার কড়া নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্য দফতর। পাইলট প্রকল্প হিসাবে আপাতত মুর্শিদাবাদে ওই নির্দেশিকা কার্যকর হবে।
সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে অহেতুক খরচে রাশ টানতে আগেই কড়া অবস্থানের কথা জানিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। বুধবারের নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, গত কয়েক বছরে রাজ্যের সমস্ত স্তরের সরকারি হাসপাতালে অস্থিরোগের চিকিৎসার পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সেই পরিকাঠামো ঠিক মতো ব্যবহার করা হচ্ছে না। বদলে, পূর্ব-পরিকল্পিত অস্ত্রোপচার বা অস্থিরোগের চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রসিডিয়োরের জন্য রোগী স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে ভর্তি হচ্ছেন। সেখানে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে একটি প্যাকেজে তাঁর চিকিৎসা হচ্ছে।
এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, ‘‘সরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও বাইরে চিকিৎসার খরচ বহন করতে হচ্ছে সরকারকে। এটা তো ঠিক নয়।’’ নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, জরুরি পরিস্থিতি ও রোগী যে সমস্যা নিয়ে আসবেন, সংশ্লিষ্ট সরকারি হাসপাতালে যদি সেই চিকিৎসার পরিকাঠামো না থাকে, তা হলেই একমাত্র বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করা যেতে পারে। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, সম্প্রতি বেশ কিছু ঘটনায় দেখা গিয়েছে, সরকারি হাসপাতালে প্রথমে চিকিৎসা হলেও, অস্ত্রোপচারের আগে রোগী ভর্তি হয়েছেন স্থানীয় হাসপাতালে। এমন মুর্শিদাবাদে বেশি দেখা গিয়েছে বলেই সূত্রের খবর।
তাই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, রোগীর স্বার্থে মুর্শিদাবাদের সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো যথাযথ ভাবে ব্যবহার করতে হবে। ওই জেলার বহরমপুর পুরসভা এলাকার কোনও বেসরকারি হাসপাতাল জরুরি কারণ ছাড়া সরাসরি কোনও পূর্ব-পরিকল্পিত প্রসিডিয়োরের জন্য রোগীকে ভর্তি করতে পারবে না। এমন রোগীদের ভর্তি হতে গেলে আগে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ থেকে নির্দিষ্ট রেফার-পত্র নিয়ে আসতে হবে। যেখানে উল্লেখ থাকবে, সংশ্লিষ্ট রোগীর যে চিকিৎসা প্রয়োজন, তার পরিকাঠামো ওই মেডিক্যাল কলেজে নেই। বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘সরকারি স্তরে উন্নত মানের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া এবং স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের যথাযথ ব্যবহারের জন্য এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। আগামী দিনে অন্যান্য জেলাতেও এমন নির্দেশিকা দেওয়া হবে।’’