লালবাজার। —ফাইল চিত্র।
আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় চোরাই মোবাইল জমা দিতে গিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনার পরে তাঁর দেহের ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, মৃত অশোক সিংহের পুরনো রোগ ছিল। প্রাথমিক ভাবে তাঁদের অনুমান, ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন অশোক। ঠিক কী ধরনের রোগে তিনি আক্রান্ত ছিলেন, তা জানতে তাঁর মাথা থেকে মেলা টিউমার, ব্রেন টিসু, লিভার, কিডনি এবং চামড়ার বিভিন্ন অংশের নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশ। যা শুক্রবার হিস্টোপ্যাথলজি পরীক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করা সম্ভব হবে, অশোকের শরীরে ঠিক কী ধরনের রোগ বাসা বেঁধেছিল। এ ছাড়া, কোনও সংক্রমণ হয়ে থাকলে সেটাও ধরা পড়বে হিস্টোপ্যাথলজি পরীক্ষায়।
লালবাজার জানিয়েছে, সেই সঙ্গেই এ দিন পুলিশের গোয়েন্দারা অশোকের ভিসেরার নমুনা সংগ্রহ করেছেন। ওই নমুনা পরীক্ষার জন্য ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। তাঁর শরীরে কোনও বিষক্রিয়া হয়েছিল কি না, তা জানতেই ওই ভিসেরা পরীক্ষা করাতে চাইছে লালবাজার। ময়না তদন্তের চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জেরেই অশোকের মৃত্যু হয়েছে।
এ দিকে, শুক্রবারই কলকাতা হাই কোর্ট দ্বিতীয় বার ময়না তদন্তের সম্ভাবনা খারিজ করে পুলিশকে বেশ কয়েক দফা নির্দেশ দিয়েছে। সেই মতো এ দিন পুলিশ বুধবারের ওই ঘটনার সময়কার ফুটেজ পাওয়ার জন্য আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার সিসি ক্যামেরার গোটা হার্ড ডিস্কটাই বাজেয়াপ্ত করেছে। এর আগে পুলিশ শুধু ওই ফুটেজ নিয়েছিল। মনে করা হচ্ছে, পরবর্তী শুনানিতে ওই বাজেয়াপ্ত হওয়া হার্ড ডিস্ক আদালতে জমা দেওয়া হবে। পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, আদালত যা নির্দেশ দেবে, তা-ই মান্য করা হবে।
আদালতে মামলা চললেও পুলিশের ডাকে সাড়া দিয়ে তদন্তকারীদের সামনে হাজিরা দেননি অশোকের আত্মীয় এবং অভিযোগকারী শরৎ জায়সওয়াল। তাঁকে এ দিন থানায় হাজির হওয়ার জন্য আসতে বলা হয়েছিল পুলিশের তরফে। এ দিন তিনি হাজির না হওয়ায় ফের তাঁকে নোটিস পাঠানো হচ্ছে বলে লালবাজার জানিয়েছে। উল্লেখ্য, মৃতের পরিবারের তরফে শরৎ পুলিশের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কোনও মামলা রুজু না করলেও গোয়েন্দা বিভাগকে পুরো ঘটনার অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে।