জনসম্বর্ধনার জবাবে বঙ্গবন্ধু: ভারতের ঋণ বাংলাদেশ কোনদিন শোধ করতে পারবে না’— ১৯৭২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি আনন্দবাজার পত্রিকার হেডলাইন ছিল এমনই। সে দিন খবরের কাগজ বঙ্গবন্ধুময়, কারণ আগের দিন, ৬ ফেব্রুয়ারি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে রচিত হয়েছে ইতিহাস। রবিবার সকালে দমদম বিমানবন্দরে এসে নামলেন ইন্দিরা গাঁধী, তার কিছু ক্ষণ পরেই শেখ মুজিবুর রহমান, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী (ছবিতে)। রাজভবন পৌঁছনোর আগে দু’জনে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানালেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তিতে। বঙ্গবন্ধুর দু’দিনের সংক্ষিপ্ত কিন্তু আবেগদীপ্ত সফরের তুঙ্গস্পর্শী মুহূর্তটি অপেক্ষা করছিল বিকেলে ব্রিগেডের সভায়। ছুটির দিন, সকালে বৃষ্টিও হয়েছিল। তবু ব্রিগেডে লাখো মানুষের জনসমুদ্র, বঙ্গবন্ধু ও ইন্দিরা গাঁধীকে দেখার ও শোনার আশায় উদ্বেল বাঙালির আবেগের বাঁধ না-মানা স্রোত। তাঁদের বক্তৃতার জন্য উঁচু করে বাঁধা হয়েছিল মঞ্চ, যাতে দূর থেকেও দেখা যায়। একটু দূরে আরও একটা মঞ্চ, সেখানে বৃন্দকণ্ঠে দেশাত্মবোধক গান গাইলেন গায়ক-গায়িকারা— সরলা দেবীর লেখা ‘জয় যুগ আলোকময়’ দিয়ে শুরু, পরে রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, অতুলপ্রসাদের গান।
‘...আমার ভাই ও বোনেরা, আপনাদের জন্য আমি সাত কোটি বাঙালির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছার বাণী বহন করে নিয়ে এসেছি, কৃতজ্ঞতার বাণী বহন করে নিয়ে এসেছি...’— ব্রিগেডে ৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুর বক্তৃতা কেবল এক সদ্য-স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের ভাষণ মাত্র ছিল না, ছিল দুই দেশের, দুই বাংলার ভালবাসা ও সৌভ্রাত্রের ঋজু প্রতিষ্ঠাপ্রয়াস। ‘যে জাতি মুক্তিপাগল, যে জাতি স্বাধীনতাকে ভালবাসে, সে জাতিকে বন্দুক কামান দিয়ে দাবাইয়া রাখা যায় না’— বঙ্গবন্ধুর মুখে এ কথা শুনে হর্ষধ্বনি করেছিল কলকাতা। বার বার উচ্চারণ করেছেন রবীন্দ্র-উদ্ধৃতি, কখনও কৃতজ্ঞতা বোধে, কখনও স্বাধীন সার্বভৌম দেশ গড়ার পথে যাবতীয় রাজনৈতিক ক্ষুদ্রতা, কূটনৈতিক ষড়যন্ত্র ও সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতায়। তাঁর আবেগী সম্ভাষণে সে দিন উঠে এসেছিল তিতুমির থেকে মাস্টারদা সূর্য সেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু থেকে হাসান শহিদ সুরাবর্দির কথা, বাংলা ও বাঙালির স্বাধীনতাস্পৃহা যাঁদের উত্তরাধিকার।
তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর ভাষণেও সে দিন ধ্বনিত হয়েছিল স্বাধীনতা, সম্প্রীতি ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার, নতুন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অগ্রগমনে বন্ধুতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার। তারই প্রমাণ বঙ্গবন্ধুর এই সফরে কলকাতার রাজভবনে ইন্দিরা-মুজিব বৈঠক, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের উন্নয়ন, শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তন ও বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত। সেনা প্রত্যাহারের তারিখ এর আগেই ১৯৭২ সালের ৩০ জুন থেকে ৩১ মার্চে এগিয়ে আসার কথা হয়েছিল, জানুয়ারিতে কারামুক্ত বঙ্গবন্ধুর পাকিস্তান থেকে লন্ডন-ফেরত দিল্লি হয়ে ঢাকা যাওয়ার সময়। সেনা প্রত্যাহার হয় ১২ মার্চ, আর বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ১৭ মার্চ বাংলাদেশ সফরে যান ইন্দিরা গাঁধী। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন-আবহে ঐতিহাসিক ৬ ফেব্রুয়ারিকে অনুষ্ঠান ও বহুবিধ কর্মসূচিতে স্মরণ করছে কলকাতার বাংলাদেশ উপ হাইকমিশন।
অচিন চেনা
‘দাঁতের ব্যথা ছটফটানি, দক্ষ হাতে ঘোচান তিনি/ চা কফিতে নেন না চিনি/ অচিন চেনা বারীনদা!’ শিল্প-সংস্কৃতি রসিক দাঁতের ডাক্তারবাবু বারীন রায়কে (ছবিতে) নিয়ে গান বেঁধেছিলেন কবীর সুমন! বারীন রায়ের চেম্বার, তিন নম্বর ওয়াটারলু স্ট্রিটে কে না আসতেন! বিধান রায়, মুজফ্ফর আহমেদ, প্রফুল্ল সেন, কানন দেবী, মাদার টেরিজা, রবিশঙ্কর, বিলায়েত খান, ছবি বিশ্বাস, সুচিত্রা সেন, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য... তবে জ্যোতি বসু আর স্বামী লোকেশ্বরানন্দ তাঁর সব থেকে পছন্দের, বাধ্য রোগী। সীমান্ত গাঁধীর নকল দাঁতের পাটি তৈরির সূত্রে তাঁর প্রশস্ত চোয়ালের কথাও বলতেন খুব। বছর দশেক আগে চেম্বারের ঠিকানা পাল্টেছে, অটুট সহৃদয়তার পরিসর। এ দেশে দন্ত্যচিকিৎসার প্রাণপুরুষ আর আহমেদ বা বন্ধু রবি ঘোষের স্মৃতিরক্ষায় কাজ করেছেন, অনেককে চিনিয়েছেন পীযূষকান্তি সরকার, সুমনের প্রতিভাও। শেষ দিনেও চেম্বারে যাওয়ার তোড়জোড় করছিলেন। গত ২৭ জানুয়ারি ৮৬ বছর বয়সে চলে গেলেন বারীন রায়।
স্বর্ণস্মৃতি
১৯৮৯ সালে শুরু হয় ‘আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন রিসার্চ সোসাইটি’। বাংলা সাহিত্য ও লোকসংস্কৃতির অগ্রণী পুরুষ আচার্য দীনেশচন্দ্র সেনের স্মরণে বক্তৃতা, তাঁর নামাঙ্কিত স্বর্ণপদক ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান করে থাকে সোসাইটি, দুই বাংলার সাহিত্য-সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের সমর্থন ও সহযোগিতায়। বাংলাদেশেও ‘দীনেশচন্দ্র সেন গবেষণা পরিষদ’-এর উদ্যোগে আচার্যের জীবনকৃতি স্মরণপ্রবাহ অব্যাহত। গত তিন দশকে দীনেশচন্দ্র স্মৃতি স্বর্ণপদক পেয়েছেন নিশীথরঞ্জন রায়, মহাশ্বেতা দেবী, অমর্ত্য সেন, ফিরোজা বেগম, শামসুর রাহমান, নির্মলেন্দু গুণ-সহ দুই বাংলার বহু কৃতী মানুষ। অতিমারির কারণে গত বছরটি সোসাইটির কার্যক্রম থমকে ছিল, এ বছর নবোদ্যমে শুরু হয়েছে ফের। আজ বিকেল ৫টায় প্রেস ক্লাবে (ময়দান টেন্ট) দীনেশচন্দ্র সেন স্মৃতি স্বর্ণপদক অর্পণ করা হবে বৌদ্ধ ধর্মাঙ্কুর সভার সভাপতি হেমেন্দুবিকাশ চৌধুরী ও বিশিষ্ট শিক্ষা প্রশাসক সুরেন্দ্র কুমার সিংহের হাতে।
ভূমিপুত্র
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বহড়ুর ঢিবের হাট সংলগ্ন দক্ষিণপাড়ায় কেটেছে ছেলেবেলা। যশের শিখরে উঠেও ফেলে আসা গ্রামকে ভোলেননি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হলে ১৯৪৬ সালে বিশিষ্ট শিল্পী-সমন্বয়ে বিরাট সঙ্গীতানুষ্ঠান করে টাকা তুলে দিয়েছিলেন বহড়ু লাইব্রেরির জন্য। ১৯৮৯-এর মে মাসে অশক্ত শরীরেও গ্রামে এসেছিলেন সস্ত্রীক, সঙ্গে কবি বন্ধু সুভাষ মুখোপাধ্যায়। সে বছরেই ২৬ সেপ্টেম্বর প্রয়াণ। ভূমিপুত্রের জন্মশতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে বহড়ুতে শিল্পীর পৈতৃক ভিটা সংলগ্ন শ্রীদুর্গা ক্লাব ময়দানে গতকাল, ৩১ জানুয়ারি বিকেলে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পূর্ণাবয়ব মূর্তি প্রতিষ্ঠা হল, বই প্রকাও। ছিলেন কবীর সুমন, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়; হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পরিবারের অনেকেও।
নাটক পঞ্চক
শতবর্ষ পূর্বের অসহযোগ আন্দোলন ও চৌরিচৌরার ঘটনা আজও স্মৃতি হয়ে জেগে। ৪ ফেব্রুয়ারি ঘটেছিল জনরোষ ও ব্রিটিশ প্রশাসনের নির্মম প্রত্যাঘাত। সেই নিয়েই ‘অন্য থিয়েটার’ নাট্যগোষ্ঠীর নতুন নাটক ধুলোমাখা রুটি, নির্দেশনায় দেবাশিস। ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ছ'টায় অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টস মঞ্চে। সেখানেই আজ থেকে শুরু ‘অন্য থিয়েটার’ আয়োজিত নাট্যোৎসব নতুন করে পাব ব’লে, শেষ দিনটিতে তাঁদের অভিনয়। আজ সন্ধে সাড়ে ৫টায় ‘লোককৃষ্টি’ দলের পুনরায় রুবি রায়, নির্দেশনায় ফাল্গুনী চট্টোপাধ্যায়। আগামী কাল থেকে সন্ধে ৬টায় অভিনয়। ২ ফেব্রুয়ারি ‘সায়ক’-এর আত্মজন, নির্দেশনায় মেঘনাদ ভট্টাচার্য। ৩ তারিখ ‘শূদ্রক’-এর তিথিনীড়, নির্দেশনায় দেবাশিস মজুমদার, ৪ ফেব্রুয়ারি চন্দন সেনের রচনা ও নির্দেশনায় ‘হযবরল’-র মুক্তিবন্দ। পাঁচ নাট্যদলের হাত ধরাধরি করে এই পথ চলার প্রয়াস আজকের বিপর্যস্ত সামাজিক পরিবেশে ঋজু বার্তাবহ, মানুষের প্রতি মানুষের সাহচর্যের।
যাপনশিল্প
শহরের একটা বাস স্ট্যান্ডই হয়ে উঠছে শিল্প উৎসবের ‘স্পেস’। বেহালা ১৪ নম্বর বাস স্ট্যান্ডে ‘নূতন সঙ্ঘ’ ক্লাবের আয়োজন ‘বেহালা আর্ট ফেস্ট’, আহ্বায়ক শিল্পী সনাতন দিন্দা, কিউরেটর ঐন্দ্রিলা মাইতি সুরাই। “আর্ট কলেজ-ফেরত শিল্পীদের নিয়ে মূল ধারার শিল্প করা সহজ, আমরা চেয়েছি তার বাইরের শিল্প-পরিসরের মানুষদের দিয়ে ‘মেনস্ট্রিম আর্ট’ করাতে,” বললেন সনাতন। এই উৎসবে দেবদেবী, মণ্ডপ, গ্যালারি নেই, পড়ে পাওয়া জায়গাটুকুতেই শিল্পপ্রয়াস (ছবিতে রিকশা স্ট্যান্ডে দেওয়ালচিত্র)। উপকরণ-প্রকরণ নয়, বার্তাটাই আসল, বলছেন ওঁরা। শিল্পকৃতিতে উঠে আসবে চার পাশের সময়— দেশভাগ, এনআরসি, পরিযায়ী শ্রমিক, কৃষক আন্দোলন। মানুষের কাছে পৌঁছক শিল্প, ধারণ ও যাপন করুক তাঁদের সুখদুঃখ, সেটাই লক্ষ্য। আমন্ত্রিত ও তথাকথিত অখ্যাত শিল্পীরা কাজ করছেন একত্রে। সব শিল্প কেনা যায় না, তাকে দেখতে হয়, তার প্রশ্ন করার স্বভাবকে বুঝতে হয়, আজকের বস্তুবাদী সমাজকে বোঝাবে এই যাপনশিল্প। ৫-৭ ফেব্রুয়ারি, বিকেল ৪টে থেকে রাত ১০টা।
কল্পনির্ঝর
একুশ শতকের গোড়ার দিকে শুরু হয় স্বল্পদৈর্ঘ্যের কাহিনিচিত্রের উৎসব কল্পনির্ঝর ইন্টারন্যাশনাল শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। আঠারোতম উৎসব ২-৬ ফেব্রুয়ারি, আইসিসিআর-এর সত্যজিৎ রায় প্রেক্ষাগৃহে, কল্পনির্ঝর ফাউন্ডেশন ও গ্যোয়টে ইনস্টিটিউট, ম্যাক্সমুলার ভবনের উদ্যোগে। দর্শক-উপস্থিতিতে ছবি দেখার স্বাভাবিকতায় ফিরতেই এ আয়োজন। “করোনা-কাল সত্ত্বেও নির্বাচিত আন্তর্জাতিক ছবিগুলির মানে কিন্তু কোনও খামতি নেই,” বলছিলেন উৎসব-অধিকর্তা রাজু রামন। প্যাটন পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত ভারতীয় ছবির বিচারকমণ্ডলীতে আছেন হিরণ মিত্র, রানু ঘোষ ও সোমেশ্বর ভৌমিক। শেষ দিনে আছে ‘সৌমিত্র স্মরণ’ও, তাঁকে নিয়ে তৈরি ছোট্ট একটি ছবি দেখিয়ে বলবেন গৌতম ঘোষ।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীত
সকালের গঙ্গামুখী শিরশিরানি, দুপুরে চিলেকোঠায় পায়রার ঝটপটানি, গোধূলিবেলায় এখনও ভেসে আসে উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সুর— উত্তর কলকাতায়। কোভিড বিধি মেনে মার্গসঙ্গীতের অনুষ্ঠান হচ্ছে শহরের নানা প্রান্তে, আর উত্তরে সুতানুটি পরিষদ চোরবাগান অঞ্চল এবং অনিন্দ্য মিত্র মিউজিকাল ট্রাস্ট-এর যৌথ উদ্যোগে চতুর্থ বর্ষের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত প্রতিযোগিতার আয়োজন বিডন স্ট্রিটে অনাথনাথ দেব ট্রাস্টের ঠাকুরদালানে, ১২-১৪ ফেব্রুয়ারি। কণ্ঠসঙ্গীতে ঠুমরি ও দাদরা, যন্ত্রসঙ্গীতে সরোদ-সেতার-বেহালা-সারেঙ্গি ইত্যাদি, তালবাদ্যে তবলা- পাখোয়াজ— মোট তিনটি বিভাগে আঠারো বছর অবধি বয়সের সঙ্গীত শিক্ষার্থীদের যোগ দানের সুযোগ।
হারানো মানিক
পথের পাঁচালী মুক্তি পেয়েছে অল্প দিন, তখনও আলোড়িত হয়নি সমাজ। অন্তঃসার পত্রিকার ১৯৫৫-র অগস্ট-সেপ্টেম্বর সংখ্যায় জহুরি চোখে চলচ্চিত্রটির রত্নচমক চিনিয়ে, এক আলোচনা করেছিলেন পূর্ণেন্দু পত্রী। সম্ভবত এই ছবির প্রথম সমালোচনা। হারিয়ে গিয়েছিল লেখাটি, ‘হারানো মানিক’ খুঁজে বার করেছেন পুলক চন্দ। এ বছর সত্যজিৎ-জন্মশতবর্ষ, ২ ফেব্রুয়ারি পূর্ণেন্দু পত্রীর (১৯৩১-১৯৯৭) ৯০তম জন্মদিন। এই উপলক্ষে সেই লেখাটি ও সত্যজিৎ-ভাবনা নিয়ে পূর্ণেন্দু পত্রীর আংশিক সাক্ষাৎকার সাজিয়ে পথের পাঁচালী শিরোনামেই বই প্রকাশ করছে দে’জ পাবলিশিং। মুখবন্ধ লিখেছেন শঙ্খ ঘোষ, বইয়ে আছে পূর্ণেন্দু পত্রীর জীবন ও সৃষ্টি নিয়ে তাঁর প্রবন্ধও। ৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশনীর তরফে এক আন্তর্জাল-অনুষ্ঠানে বইটি প্রকাশ করবেন তিনি। থাকবেন পুণ্যব্রত পত্রী, সংস্কৃতি-জগতের বিশিষ্টজন।
বই-ছবির মেলা
ফেব্রুয়ারি শিল্পী কে জি সুব্রহ্মণ্যনের জন্মমাস, প্রতি বছর তাঁর স্মৃতিতে ফেব্রুয়ারির প্রদর্শনী উৎসর্গীকৃত ফার্ন রোডের ‘দেবভাষা বই ও শিল্পের আবাস’-এ। ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু চিত্র প্রদর্শনী, সঙ্গে বড় আকর্ষণ দেবভাষা বইমেলা। দেবভাষা প্রকাশিত সব বইয়ের পাশে থাকবে নির্বাচিত অন্য প্রকাশনার বই, পত্রিকা, লিটল ম্যাগাজ়িন। চিত্র প্রদর্শনীর বৈশিষ্ট্য: দেবভাষা থেকে যে সব প্রবীণ-নবীন শিল্পীর বই ও পুস্তিকা বেরিয়েছে, থাকবে তাঁদের সকলের শিল্পকৃতি। তা ছাড়াও দেখা যাবে হারিয়ে যাওয়া বই, চিনে ছবির প্রিন্ট। মেলা চলবে ৫ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি, বেলা তিনটে থেকে রাত সাড়ে ৮টা। রোজ সন্ধে সাড়ে ছ’টায় আলোচনা, ৫ ও ৬ ফেব্রুয়ারির বিষয় ‘বই ও তার নির্মাণ’ আর ‘চিত্রকরের কবিতা’। ৭ ফেব্রুয়ারি শিল্পী বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিনে ‘শিল্পীর লেখা, শিল্পীর ছবি’ বিষয়ে বলবেন শিল্পী ও শিল্প-আলোচক সুশোভন অধিকারী, সেটিই এ বছরের কে জি সুব্রহ্মণ্যন স্মারক বক্তৃতা। সমাপনী দিনটিতে ‘এক চলার পথের গল্প’ শোনাবেন ক্যাটায়ুন সাকলাত।
আ মরি
ইংরেজি ক্যালেন্ডার দ্বিতীয় মাসে গড়াল। সরস্বতী পুজো, একুশে ফেব্রুয়ারি আসবে, যাবেও— বিদ্যে, জ্ঞান, পড়াশোনা, মাতৃভাষা চর্চার কিছু যাবে আসবে কি? বঙ্গভোটের বাজারে নেতাদের মুখে ইদানীং বাংলা ভাষার যা হাল, রবীন্দ্রনাথ বা আচার্য সুনীতিকুমার নির্ঘাত প্রতিবাদ-প্রবন্ধ লিখতেন। সরস্বতীর পায়ের কাছে এ বছর বাংলা বইপত্তর রাখলে কেমন হয়? উচ্চারণ অভিধানও রাখা দরকার, বিশেষ করে গুজরাতি-বাংলা।