Babri Masjid Demolition

Babri Masjid: অসহিষ্ণুতার দিনে বহুত্বের উদ্‌যাপন আড্ডায়

বাবরি ধ্বংসের অভিঘাতে সমকালের ইতিহাসে অনেকের কাছেই কলঙ্কের অক্ষরে লেখা দিনটি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:২৭
Share:

বাবরি ধ্বংসের অভিঘাত। ফাইল চিত্র।

মুখোমুখি দেখা না-হওয়া আলোচনার এই দিনকালে সচরাচর এমনটা হয় না। কথা বলে, চ্যাটে লিখে, অনলাইন ভোটাভুটিতে নানা রঙের অভিমত মেলে ধরে তবু জমে উঠল ভার্চুয়াল আড্ডা।

Advertisement

কখনও বা উঠে এল কিছু অস্বস্তির প্রসঙ্গও। ভিন্ ধর্মে বিয়ে, সমলিঙ্গের মানুষের প্রেম কিংবা ভিন্ ধর্মের রীতি— অনেক কিছু নিয়েই খোলাখুলি আলোচনা চলল। কিন্তু তাতে ছন্দপতন ঘটল না। পরস্পরের মতের প্রতি সহিষ্ণুতায় ভরপুর এক অন্য রকম ৬ ডিসেম্বরেরই বরং দেখা মিলল।

বাবরি ধ্বংসের অভিঘাতে সমকালের ইতিহাসে অনেকের কাছেই কলঙ্কের অক্ষরে লেখা দিনটি। সোমবার এ দেশের নানা মত, সংস্কৃতি ও দৃষ্টিভঙ্গির বহুত্ব উদ্‌যাপনে এই দিনটিকেই বেছে নিয়েছিল বৈষম্য-বিরোধী দু’টি নাগরিক সংগঠন। ‘ডাইভার্সিটি ম্যাটার্স’ বা ‘বহুত্ব জরুরি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বিতর্ক সৃষ্টি করা বেশ কয়েকটি সাম্প্রতিক বিজ্ঞাপন নিয়ে কাটাছেঁড়া চলল। যেমন, মুসলিম পরিবারে বিয়ে হওয়া হিন্দু ঘরের মেয়েটির সাধভক্ষণ অনুষ্ঠান নিয়ে একটি গয়না বিপণির বিজ্ঞাপন বা চায়ের বিজ্ঞাপনে
মুসলিম শিল্পীর তৈরি গণপতি নিয়ে তাৎক্ষণিক অস্বস্তির কাহিনি এ দিন দেখানো হয়েছে। চায়ের অন্য একটি বিজ্ঞাপন আবার দেখিয়েছে রূপান্তরকামী মানুষদের। এবং পোশাকের একটি বিজ্ঞাপনে উঠে এসেছে সমপ্রেমী দুই নারীর পারস্পরিক নির্ভরতা।

Advertisement

ওই বিজ্ঞাপনগুলি কেমন লাগল অনুষ্ঠানে শামিল হওয়া বিভিন্ন বয়স, ভাষা, ধর্ম বা সামাজিক শ্রেণিভুক্ত মানুষের? ওই সমস্ত বিজ্ঞাপন নিয়ে তাঁরাও কি অস্বস্তিতে ভুগছেন? কত জন এমন বিজ্ঞাপন বন্ধুদের পাঠাবেন? ভোটাভুটি, আলোচনায় এই বিষয়গুলি খানিক জরিপ করা হয়েছে। দেখা গেল, সমপ্রেমের সম্পর্ক নিয়ে কারও কারও অস্বস্তি রয়েছে। তবু তাঁদেরও অনেকে বিষয়টিকে বহুত্বের পরিচয় বলে মানছেন। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা ‘নো ইয়োর নেবার’ এবং ‘স্বয়ম’-এর তরফে সাবির আহমেদ, অমৃতা দাশগুপ্ত, মাধুরী কুট্টিরা বলছিলেন, “পারস্পরিক সম্প্রীতি মানে কিছু অস্বস্তিকর বিষয়েরও মুখোমুখি হওয়া। বাবরি ধ্বংসের অসহিষ্ণুতার দিনে মনে রাখতে হবে, প্রশ্ন করা খারাপ নয়। কিন্তু কোন ভঙ্গিতে প্রশ্ন করা হচ্ছে, সেটা জরুরি।” ক্লাস সিক্সের রূপকথা সরকার, কলেজপড়ুয়া বিপ্লব টুডু, সঞ্জীবনী দেব, শেখ ইজাজেরা নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। কলকাতার নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ, জন্ম সূত্রে কাশ্মীরি কন্যা নওশিন বাবা খান বলছিলেন, “ইতিহাসের পুরনো ক্ষত নিশ্চয়ই মনে রাখার, আবার দেশের ইতিবাচক দিকগুলিতেও জোর দেওয়া উচিত।”

খানিক মজার ভঙ্গিতে বহুত্ব বা ধর্মনিরপেক্ষতার মতো শব্দগুলি শুনলেই কার কী মনে হয়, তা জানতেও লিখে লিখে এক ধরনের খেলায় শামিল হলেন সবাই। দেখা গেল, ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে এক জন লিখেছেন, ‘মৌলবাদীদের গালাগাল’। আবার বহুত্ব প্রসঙ্গে পোশাক, খাবার, সংস্কৃতি-সহ নানা শব্দের ভিড়ে রয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ শব্দটিও। বহুত্বের এর থেকে ভাল সংজ্ঞা আর কী হয়, দেখা গেল সহমত বক্তারা প্রায় সকলেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement