তথ্য জানতে চেয়ে উত্তর সংস্কার শেষ, মেয়র পারিষদ বলছেন ‘না’

জলাশয় সংস্কার শুরু করেও স্থানীয়দের একাংশের বিরোধিতায় থমকে যায় কাজ। চলতি বছরের মার্চে তথ্যের অধিকার আইনে কলকাতা পুরসভার কাছে বাসিন্দাদের অন্য অংশ জানতে চেয়েছিলেন, সে সম্পর্কে।

Advertisement

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৪১
Share:

বদ্ধ: বিতর্ক এই পুকুর ঘিরেই। ছবি: অরুণ লোধ

জলাশয় সংস্কার শুরু করেও স্থানীয়দের একাংশের বিরোধিতায় থমকে যায় কাজ। চলতি বছরের মার্চে তথ্যের অধিকার আইনে কলকাতা পুরসভার কাছে বাসিন্দাদের অন্য অংশ জানতে চেয়েছিলেন, সে সম্পর্কে। কলকাতা পুরসভার প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট ইউনিট (পিএমইউ) এপ্রিলে জানায়, ওই জলাশয় সংস্কার শেষ হয়ে়ছে চলতি ফেব্রুয়ারিতে। যদিও দফতরের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার মানছেন, ওখানে কাজ শেষ হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতা পুরসভার তরফে পুকুরটি পরিদর্শন করে যাওয়ায় প্রমাণ হচ্ছে মেয়র পারিষদের বক্তব্যের সত্যতা।

Advertisement

বর্তমান তৃণমূল পুর বোর্ড বিভিন্ন সময়ে শহরের জলাশয় বাঁচাতে যে পদক্ষেপ করার কথা বলে, এ ধরনের মত পার্থক্যে তা ধাক্কা খেতে পারে বলেই মনে করছেন জলাশয়-বাঁচাও আন্দোলনকারীরা। কলকাতা পুরসভার ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত বড়িশা গভর্নমেন্ট কলোনিতে বেশ কয়েক বিঘা জায়গা জুড়ে রয়েছে এই পুকুরটি। ডায়মন্ড হারবার রোড থেকে সামান্য দূরে জলাশয়টির সংলগ্ন এলাকা মাঝিপাড়া রোড এবং স্টেট ব্যাঙ্ক পার্ক। পুকুর ঘিরে কয়েক হাজার মানুষ বসবাস করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা দুলাল মল্লিক-সহ অন্যদের অভিযোগ, তিরিশ বছর ধরে দখল হয়েছে পুকুরের অনেকটা। যেটুকু আছে, তাতে নিয়মিত আবর্জনা ফেলে বুজিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন কিছু মানুষ। স্থানীয় পুর প্রতিনিধি রাজীব দাস এ নিয়ে সতর্ক করতে চিঠিও দিয়েছিলেন পুরসভাকে। এর পরেই ট্রাস্টি পরিচালিত পুকুরটি পিএমইউ নিজেদের অধীনে আনে ২০১৬ সালের গোড়ায়। ২০১৭ সালের নভেম্বরে পুকুর সংস্কার শুরু করে পুরসভা। শালবল্লা দিয়ে চারধারে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। অভিযোগ, পুকুর ধারের কয়েক জন বাসিন্দার বিরোধিতায় কাজ বন্ধ হয়।

Advertisement

এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, শ্যাওলায় ভরে রয়েছে গোটা পুকুর। একাংশের পাইলিং শেষ হয়নি। বেশ কিছু জায়গায় পাইলিং বসেও গিয়েছে। তার পাশেই পড়ে আবর্জনা। স্থানীয় বাসিন্দা, রবীন্দ্রনাথ সমাদ্দার ও অনিলকান্তি সুতারের দাবি, এই পুকুরে এক সময়ে সাঁতার কাটা যেত। পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হত পুকুরের জল। তাঁদের অভিযোগ, সেই পুকুরেই এখন পুরসভা পাইপের মাধ্যমে বাড়ির নিকাশি জল ফেলছে। এলাকার ঘরে ঘরে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার কারণও এই পুকুরটি বলে দাবি এলাকাবাসীর। বারবার পুরসভাকে জানানো সত্ত্বেও কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, প্রথমে পুরসভা বলেছিল, পুকুর পরিষ্কার করে চার ধারে হাঁটার ব্যবস্থা করা হবে। পরে পুরসভা সে কাজে অসম্মতি জানিয়েছে বলে দাবি বাসিন্দাদের।

শুক্রবার স্বপনবাবু বলেন, “ওখানে কিছু বাসিন্দা কাজে বাধা দিয়েছিলেন এটা সত্যি। তবে প্রকল্পের নির্দিষ্ট টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় কাজ অসম্পূর্ণ রাখা হয়েছে। টাকার সংস্থান হলে কাজ শুরু হবে। চারধারের সৌন্দর্যায়নের জন্য অন্য দফতরের সঙ্গেও যোগাযোগ করে এগোনো হবে। তাই একটু সময় লাগবে। আপাতত পুকুর পরিষ্কার শুরুর চেষ্টা হচ্ছে।” ফের যদি বাধা আসে? মেয়র পারিষদ জানান, অবৈধ বাধার সামনে ঝুঁকবে না পুরসভা। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement