কলকাতা হাই কোর্ট। — ফাইল চিত্র।
২৩টি প্রজাতির কুকুর আমদানি, বিক্রি, প্রজননের উপরে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে লড়াই গড়াল আদালতের আঙিনায়। এই নিষেধাজ্ঞার উপরে আংশিক স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। নির্দেশ স্থগিত রেখেছে কর্নাটক হাই কোর্ট। দিল্লি হাই কোর্টেও পেশ হয়েছে আবেদন।
১২ মার্চ এক নির্দেশিকায় কেন্দ্রের প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন ও ডেয়ারি দফতর সব রাজ্যকে জানায়, কুকুরের কামড়ে মৃত্যুর কয়েকটি সাম্প্রতিক ঘটনার ভিত্তিতে পদক্ষেপ করতে তাদের আর্জি জানিয়েছিল বিভিন্ন শিবির। তার পরেই একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে কেন্দ্র। তারা রটওয়েলার, পিটবুল-সহ ২৩টি প্রজাতির কুকুরকে হিংস্র ও মানুষের পক্ষে বিপজ্জনক হিসাবে চিহ্নিত করেছে। রাজ্যগুলিকে এই সব প্রজাতির কুকুর বিক্রি, প্রজনন, আমদানির উপরে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। যে সব কুকুর ইতিমধ্যে পোষ্য হিসেবে রয়েছে, সেগুলির নির্বীজকরণের নির্দেশও দেওয়া হয়।
সারমেয় প্রশিক্ষক তন্ময় দত্ত এই নির্দেশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে যান। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের এজলাসে তাঁর আইনজীবী শতরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হিংস্র বলতে কী বোঝায়, বুঝতে পারছি না।’’ তিনি জানান, দিল্লি হাই কোর্ট সংশ্লিষ্ট মামলায় কোনও প্রজাতির কুকুরকে নিষিদ্ধ করতে বলেনি। ভারতের কোনও আইনে কোনও কুকুরকে নিষিদ্ধ বা হত্যা করা যায় না। পাশাপাশি, বাচ্চা কুকুরের পক্ষে নির্বীজকরণ প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেও জানান শতরূপ।
এই যুক্তি মেনে নিষেধাজ্ঞায় আংশিক স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি। মামলার ফয়সালা হওয়া পর্যন্ত ওই ২৩টি প্রজাতির কুকুরের আমদানি ও বিক্রির উপরে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। নিষেধাজ্ঞার বাকি অংশ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি। অর্থাৎ, নির্বীজকরণের নির্দেশ ও প্রজননের বিরুদ্ধে নির্দেশ আপাতত স্থগিত। ৮ এপ্রিল ফের শুনানি। বিচারপতি এ-ও জানতে চেয়েছেন, কমিটিতে কারা ছিলেন এবং তাঁদের মত কী ছিল।
বিচারপতির মতে, উপযুক্ত গবেষণা ছাড়াই এই প্রজাতিগুলিকে ‘হিংস্র’ তকমা দেওয়া হয়েছে। কেন তাদের পোষা মানবাধিকার লঙ্ঘন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর মত, নির্বীজকরণের ক্ষেত্রে বয়স উল্লেখ করা হয়নি। আবেদনকারীর বক্তব্য, ‘‘নিষেধাজ্ঞার পরে ওই প্রজাতির কুকুরের প্রতি অবহেলা দেখা দিতে পারে।’’ নর্থ ক্যালকাটা কেনেল ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অরবিন্দ সিংহের বক্তব্য, ‘‘কয়েকটি প্রজাতির উপরে এই নিষেধাজ্ঞা বোধগম্য হচ্ছে না।’’