প্রতীকী ছবি
নতুন করে সপ্তাহে দু’দিন লকডাউন ঘোষণায় উড়ান চালানো নিয়ে আবার সংশয় বেড়েছে।
এখন কলকাতা ও ছ’টি শহরের মধ্যে সরাসরি উড়ান বন্ধ। যদিও কলকাতা থেকে দিল্লির একটি একমুখী উড়ান চালু হতে চলেছে। বাকি শহরগুলিতে দিনে গড়ে ৮৪টি উড়ান যাতায়াত করছে। সম্পূর্ণ লকডাউনে ওই সমস্ত উড়ান কি আদৌ চলবে? যদি চলে, সে ক্ষেত্রে যাত্রীরা কী করে বাড়ি থেকে বিমানবন্দরে যাতায়াত করবেন, তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
রাজ্য সরকারের বক্তব্য, উড়ান চললে ওই যাত্রীদের জন্য বাস ও অন্য পরিবহণের ব্যবস্থা করা হবে। ঠিক যেমন লকডাউন চলাকালীন ২৮ মে থেকে করা হয়েছিল। উড়ান সংস্থার কর্তারা জানিয়েছেন, লকডাউনে উড়ান বন্ধ থাকবে বলে কোনও নির্দেশ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দিল্লি থেকে আসেনি। এটা নির্ভর করছে দিল্লির সিদ্ধান্তের উপরে।
এমনিতেই দিল্লি-কলকাতা উড়ান বন্ধ থাকায় ভোগান্তির মুখে যাত্রীদের একটি বড় অংশ। সেই ভোগান্তি এ বার আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। রাজ্যের অনুরোধে বন্দে ভারত প্রকল্পের উড়ান কলকাতায় আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে গত দু’সপ্তাহ ধরে আলোচনা চলছে এবং সোমবার পর্যন্ত সমাধানসূত্র বেরিয়েছে বলে জানা যায়নি।
এর ফলে বিদেশে আটকে থাকা ও রাজ্যে ফিরতে চাওয়া যাত্রীদের বড় অংশ বিপাকে পড়েছেন। তাঁরা কলকাতায় এসে হোটেলে থাকতে চাইলেও সেই সুযোগ পাননি বলে অভিযোগ। বিমান মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, সিদ্ধান্ত রাজ্যের। তাদের কিছু করার নেই।
এই অবস্থায় সরাসরি কলকাতায় আসতে না পেরে বহু মানুষ বিদেশ থেকে উড়ান ধরে দিল্লি চলে আসেন। সেখানে নিয়ম মতো সাত দিন আইসোলেশনে কাটিয়ে তাঁরা ঠিক করেন, দিল্লি থেকে উড়ান ধরে কলকাতায় আসবেন। কিন্তু ৬ জুলাই থেকে দিল্লি-কলকাতা সরাসরি উড়ান আসাও বন্ধ করে দেয় রাজ্য। সেই তালিকায় মুম্বই, চেন্নাই, আমদাবাদ, পুণে ও নাগপুরও রয়েছে।
ওই সমস্ত শহর থেকে কলকাতায় আসতে চাওয়া যাত্রীরা পটনা, বারাণসী, ভুবনেশ্বর, লখনউ, গুয়াহাটি, বাগডোগরা ঘুরে এ শহরে আসতে শুরু করেন। কিন্তু অন্য সমস্যা দেখা দেয়। ওমান থেকে ফিরতে চাওয়া অমিতাভ সেনগুপ্ত যেমন জানিয়েছেন, তাঁরা বিদেশের পাট পুরোপুরি চুকিয়ে স্বামী-স্ত্রী ফিরছেন এবং তাঁদের প্রায় ১০০ কিলোগ্রাম মালপত্র রয়েছে।
আপাতত তাঁরা দিল্লিতে কোয়রান্টিনে রয়েছেন। খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, এত মালপত্র নিয়ে অন্য শহর ঘুরে যাওয়ার বিপত্তি অনেক। প্রথমত, অতিরিক্ত টাকা দিলেও কোনও উড়ান সংস্থা এত জিনিস নিতে রাজি না-ও হতে পারে। দুই, মাঝপথে উড়ান বদলের সময়ে কিছু জিনিস হারিয়ে যেতে পারে। নিয়মিত ট্রেন চলছে না। তাতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। অন্য বিমানবন্দর ঘুরে এলে ছ’-সাত ঘণ্টা অপেক্ষার ক্লান্তি রয়েছে। গাড়িতে আসাটাও ধকলের।
একই ভাবে আমেরিকা বা অন্য দেশ থেকে দিল্লি আসার পরে কলকাতায় ফিরতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন অনেকে। যাত্রীদের একাংশ জানাচ্ছেন, অনেকে রাঁচী বা বাগডোগরা পর্যন্ত বিমানে এসে সড়কপথে কলকাতায় আসছেন। সে ক্ষেত্রে একটি পিঠ বিমানে এলে জিনিস হারানোর আশঙ্কা কমে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: চিকিৎসা করাতে এসে আক্রান্ত, উদ্বেগ রাজারহাটে