বয়ঃসীমা বাড়ানোর আবেদন লিখে এক চাকরিপ্রার্থী। বুধবার, বিকাশ ভবনের সামনে। নিজস্ব চিত্র।
তাঁরা টেট পাশ করেছেন ২০২২ সালে। কিন্তু তার বছর দুয়েক পরেও প্রাথমিকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়নি। ফলে নিয়োগের জন্য আবেদন করার বয়ঃসীমা পেরিয়ে যাচ্ছে অনেকের। তাই অবিলম্বে নিয়োগ-বিজ্ঞপ্তি চেয়ে বুধবার বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন ৪০ বছরে পা দিতে যাওয়া চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, চলতি বছরেও নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত না হলে চল্লিশের গণ্ডি পেরোনো বহু চাকরিপ্রার্থীই প্রাথমিকে শিক্ষকতার জন্য চাকরিতে আবেদনের সুযোগ হারাবেন।
টেট উত্তীর্ণ এক চাকরিপ্রার্থী মোহিত করাতি জানান, বর্তমান নিয়োগের নিয়মানুযায়ী, বছরের প্রথম দিন ধরে হিসাব করে সাধারণ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ৪০ বছর, ওবিসি প্রার্থীদের ৪৩ বছর, তফসিলি জাতি-জনজাতি প্রার্থীদের ৪৫ বছর পর্যন্ত নিয়োগে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হয়। টেট পাশ করে বসে থাকা বহু চাকরিপ্রার্থীরই বর্তমানে সেই বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে। এ বছরেই ৪০ বছরের গণ্ডি পেরিয়ে যাবেন, এমন কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘২০২২ সালে স্বচ্ছ ভাবে টেট হয়। তখন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে, প্রতি বছর টেট হবে এবং প্রতি বছরই নিয়োগ হবে। অনেক টাকা খরচ করে টেটের প্রশিক্ষণ নিয়ে পাশ করেছি। কিন্তু এখন বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে।’’ মুর্শিদাবাদের এক চাকরিপ্রার্থী মহম্মদ রাজা মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার হাতে এ বছরের শেষ দু’মাস রয়েছে। তার পরেই আমার বয়স ৪০ হবে। এর মধ্যে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি না বেরোলে আমার প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করার স্বপ্ন পূরণ হবে না।’’
মোহিত জানান, ২০১৭ সালের ফর্ম ফিল-আপ হয়ে ২০২১ সালে প্রাথমিক টেট হয়। সেই টেটের নিয়োগও হয়। এর পরে ফের ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর টেট হয়। যার ফল বেরোয় ২০২৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি। তাতে উত্তীর্ণ হন ১ লক্ষ ৫০ হাজার ৪৯২ জন। এর পরে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, বি এড প্রশিক্ষিতেরা নন, শুধুমাত্র ডিএলএড (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন) প্রশিক্ষিতেরাই প্রাথমিকে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন। ফলে বহু প্রার্থী বাদ পড়ে যান। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, এখন সব মিলিয়ে ২০২২ সালের টেট, ডিএলএড প্রশিক্ষিত টেট উত্তীর্ণ ৫২,১৪৯ জনের মতো চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন। তাঁদের জন্য অবিলম্বে ৫০ হাজার শূন্য পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার দাবি উঠেছে। বিদেশ গাজি নামে এক চাকরিপ্রার্থী দাবি তোলেন, ‘‘২০২২ ও ২০২৩ টেট পাশ করা প্রার্থীদের একসঙ্গে নয়। ২০২২-এর আলাদা নিয়োগ প্রক্রিয়া করতে হবে।’’
এ প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ‘‘শূন্য পদ চেয়ে ইতিমধ্যে শিক্ষা দফতরকে পাঠানো হয়েছে। দফতর শূন্য পদ দিলেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে।’’