কল্যাণী মণ্ডল। বৃহস্পতিবার, বাগুইআটিতে। —নিজস্ব চিত্র।
দোলের দিন মদ্যপানের অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল বাগুইআটির ঢালিপাড়ায়। মদ্যপানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে পুলিশের সঙ্গে গোলমাল হয় স্থানীয় কয়েক জনের। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের উপরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলেও অভিযোগ উঠেছে। আরও অভিযোগ, পুলিশের মারে জখম হয়েছেন এক বয়স্ক মহিলাও। যার প্রতিবাদে পুলিশকর্মীদের স্থানীয় মহিলারা ঘেরাও করে রাখেন অনেকক্ষণ। যদিও পুলিশের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ঢালিপাড়ায় এক বেসরকারি হাসপাতালের সামনে ছ’জন যুবক মত্ত অবস্থায় ঘোরাঘুরি করছিলেন। তাঁদের মধ্যে বহিরাগতেরাও ছিলেন। অভিযোগ, স্থানীয় কয়েক জনকে নানা ভাবে উত্যক্ত করছিলেন ওই যুবকেরা। সে সব ঘিরেই তাঁদের সঙ্গে পঙ্কজ চট্টোপাধ্যায় ও গোপাল মণ্ডল নামে দু’জন স্থানীয় বাসিন্দার বচসা শুরু হয়। কিন্তু পুলিশ এসে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তি নেওয়ার পরিবর্তে বাসিন্দাদের উপরেই চড়াও হয় বলে অভিযোগ।
অভিযোগ, দুপুর আড়াইটে নাগাদ মদ্যপানের অভিযোগে গোপালবাবুর বাড়িতেই চড়াও হয় পুলিশ। বাড়ির বয়স্ক মহিলাদের মারধর করে বলেও অভিযোগ। গোপাল
বলেন, ‘‘আমরা বাড়ির ভিতরে বসে হাসি-ঠাট্টা করছিলাম। কিন্তু পুলিশ এসে আমাদেরই মারধর শুরু করল।’’ গোপালের আরও দাবি, ‘‘মদ্যপান করলেও আমরা বাড়ির ভিতরে বসে করেছি। প্রকাশ্য রাস্তায় কিছু করিনি।’’ গোপালের স্ত্রী প্রমীলা মণ্ডল বলেন, ‘‘বারান্দায় বসে সকলে হাসি-ঠাট্টা করছিল। তখনই গাড়ি নিয়ে পুলিশ এসে তিন-চার জনকে টানাটানি শুরু করে দিল। আমরা যখন ঠেকাতে গিয়েছি, তখন আমাদের ধাক্কা দিল। শাশুড়িকে ধরে মারল।’’ গোপালের মা কল্যাণী মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার নাকে মেরেছে ওরা।’’ প্রতিবেশী পারমিতা মণ্ডল বলেন, ‘‘লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যায় পুলিশ। মহিলা পুলিশও ছিল না কোনও। আমরা বাধা না দিলে আরও বড় ঘটনা ঘটতে পারত।’’ এর পরেই পুলিশকে ঘেরাও করেন মহিলা বাসিন্দারা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিশাল পুলিশবাহিনী ঘটনাস্থলে আসে।
ওই এলাকা বিধাননগর পুরসভার ছ’নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। স্থানীয় কাউন্সিলর সুভাষ বসু বলেন, ‘‘পুলিশ জঘন্যতম ঘটনা ঘটিয়েছে। এলাকায় যাঁকে এসে পেয়েছে, তাঁকেই পুলিশ মারধর করেছে। এমনকী, মহিলাদেরও ছাড়েনি।’’
যদিও বিধাননগর সিটি পুলিশ সূত্রের খবর, যে পরিবারের লোকজন মদ্যপান করছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কারণেই পুলিশের নামে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে। পরিষ্কার নির্দেশ রয়েছে যে, দোলের দিন প্রকাশ্যে মদ্যপান করা যাবে না এবং কোনও রকম উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করা যাবে না। এক পদস্থ পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘দোলের দিন কড়া নজরদারি পুলিশ চালাবেই। কোনও জায়গায় উচ্ছৃঙ্খল আচরণ দেখলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেটাই করা হয়েছে। তাই কয়েক জন তার
প্রতিবাদ করছেন।’’