প্রবীণ দম্পতিকে বাড়ি বিক্রিতে ‘চাপ’ দিয়ে ধৃত

যে সব বাড়িতে শুধুমাত্র প্রবীণ দম্পতি কিংবা একা প্রৌঢ় বা প্রৌঢ়া থাকেন, তাঁরা যে কতটা অসহায়, সল্টলেকে ফের তার প্রমাণ মিলল। আগে দেখা যেত, এ ধরনের বাড়ি ছিল মূলত চুরির নিশানা। নিশানা একই আছে। তবে ইদানীং বদলে গিয়েছে অপরাধের ধরন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৩:৫৩
Share:

অভিযুক্ত সুরেশ গুপ্ত

যে সব বাড়িতে শুধুমাত্র প্রবীণ দম্পতি কিংবা একা প্রৌঢ় বা প্রৌঢ়া থাকেন, তাঁরা যে কতটা অসহায়, সল্টলেকে ফের তার প্রমাণ মিলল। আগে দেখা যেত, এ ধরনের বাড়ি ছিল মূলত চুরির নিশানা। নিশানা একই আছে। তবে ইদানীং বদলে গিয়েছে অপরাধের ধরন।

Advertisement

সাম্প্রতিকতম ঘটনাটিতে একা থাকার সুযোগে প্রবীণ দম্পতিকে বাড়ি বিক্রির জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভাড়াটের বিরুদ্ধে। অবস্থা চরমে পৌঁছলে চাপ সহ্য করতে না পেরে পুলিশে অভিযোগ জানান ওই দম্পতি। এর পর থেকেই সুরেশ গুপ্ত নামে ওই ভাড়াটেকে খঁুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। সোমবার সল্টলেকে দেখতে পেয়ে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, সিডি ব্লকের বাসিন্দা কেশব চৌধুরী (৮৪) ও তাঁর স্ত্রী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা প্রতিমা চৌধুরীর বাড়িতে একতলায় ভাড়া থাকতেন সুরেশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, জমি-বাড়ি বিক্রির দালালি করেন সুরেশ। পুলিশ সূত্রের খবর, বাড়ির মালিক প্রতিমাদেবী সুরেশকে বেশ কয়েক বার বাড়ি
ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেছিলেন।
কিন্তু বাড়ি ছাড়তে নারাজ ছিল ভাড়াটে। দীর্ঘ দিন ধরেই এ নিয়ে গোলমাল চলছিল দু’পক্ষের।

Advertisement

প্রতিমাদেবীর অভিযোগ, গত সেপ্টেম্বরে এক বিকেলে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক জনকে নিয়ে তাঁর ঘরে ঢুকে পড়েন সুরেশ। বাড়িটি প্রোমোটিংয়ের জন্য ছেড়ে দিতে তাঁকে ভয় দেখিয়ে চাপ দেওয়া হয়। দম্পতির আরও অভিযোগ, বাড়ি না ছাড়লে সুরেশকে ১ কোটি টাকা দিতে হবে বলেও দাবি করে তারা।

পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় আতঙ্কে সিঁটিয়ে যান ওই দম্পতি। স্থানীয় বিধাননগর থানায় একটি অভিযোগও করা হয়। অভিযোগ, এর কিছু দিন পরেই ফের ওই শিক্ষিকা একতলা থেকে কিছু ভাঙাভাঙির শব্দ শুনতে পান। ওই কাজ বন্ধ করতে আবেদনও করেন তিনি। এর জেরে একতলা থেকেই অশ্লীল গালিগালাজ করে হুমকি দিতে থাকেন সুরেশ।

এর পরে আদালতের দ্বারস্থ হয় ওই পরিবার। তাঁদের আইনজীবী সৌম্যজিৎ রাহা জানান, আদালত পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়। যদিও তাঁর অভিযোগ, আদালতে মামলা করার পরেও দু’বার হুমকি দেওয়া হয়েছিল তাঁর মক্কেল ও পরিবারকে।

ধৃত সুরেশের বিরুদ্ধে সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যে তোলাবাজি,ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক অভিযোগে মামলা রুজু করেছে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ। ইতিমধ্যেই সল্টলেকে প্রোমোটার-রাজ থাবা বসিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। প্রোমোটারদের নিশানায় এ বার প্রবীণ দম্পতিরা বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

সল্টলেকের একটি আবাসিক সংগঠনের তরফে কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘সল্টলেকে প্রবীণ নাগরিকদের যন্ত্রণা নতুন নয়। সন্তানেরা বাইরে থাকে। এই বয়সে এই ধরনের ঘটনার চাপ নেওয়া মুশকিল। শুধু প্রশাসনই নয়, আমাদের প্রত্যেককে তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement