Tele Medicine

tele medicine: এক দিনে তিন স্ট্রোক রোগীকে বাঁচাল স্বাস্থ্য ইঙ্গিত

স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে ঘুরে সময় নষ্ট নয়। বরং প্রথম সাড়ে চার ঘণ্টায় ওই রোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া জরুরি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২২ ০৮:৫১
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে ঘুরে সময় নষ্ট নয়। বরং, প্রথম সাড়ে চার ঘণ্টায় ওই রোগীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া জরুরি। সেই লক্ষ্যেই সম্প্রতি ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’ প্রকল্পে যুক্ত করা হয়েছে স্ট্রোক ম্যানেজমেন্টকে। তাতে জেলা স্তরের হাসপাতালে স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগী পৌঁছলে টেলিমেডিসিন ব্যবস্থাপনায় বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসের (বিআইএন) সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে চিকিৎসা দেওয়া হবে। সেই প্রক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার এক দিনে এমনই তিন জন রোগী সুস্থ জীবন ফিরে পেলেন বলে জানাচ্ছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

এ দিন সকালে বেহালার বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আসেন ৬৫ বছরের গোপাল মণ্ডল। তাঁর ডান হাত পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে গিয়েছিল। কথা বলতে পারছিলেন না তিনি। আবার তমলুক জেলা হাসপাতালে সকাল ১০টা নাগাদ আনা হয় পঞ্চাশ বছরের অর্চনা দীক্ষিতকে। পরিজনেরা জানান, এ দিন সকাল ৭টা থেকে তাঁর কথা জড়িয়ে গিয়েছিল, শরীরের ডান দিক কাজ করছিল না। ওই হাসপাতালেই দুপুর ১টা নাগাদ আনা হয় ষাটোর্ধ্ব শচীরানি খাটুয়াকে। তিনি শরীরের বাঁ দিক একেবারেই নাড়াতে পারছিলেন না। ওই তিন জনের ক্ষেত্রেই দ্রুত সিটি স্ক্যান করে সরাসরি তা আপলোড করে দেওয়া হয় স্বাস্থ্য ইঙ্গিত পোর্টালে। এর পরে টেলিমেডিসিন ব্যবস্থাপনায় ওই দুই হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসারেরা যোগাযোগ করেন বিআইএন-এর সঙ্গে। সেখানকার চিকিৎসকদের নির্দেশ মতো ইঞ্জেকশন দিয়ে তিন রোগীকেই সুস্থ করা হয়েছে বলে খবর।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ দিনের তিন জন রোগীকে নিয়ে গত দেড় মাসে মোট ছ’জন স্ট্রোক আক্রান্তকে সময়ের মধ্যে ঠিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হল। স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, দেশের মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গে এমন ব্যবস্থাপনায় স্ট্রোক আক্রান্তের চিকিৎসা হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘টেলিমেডিসিন ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’ প্রকল্পের মাধ্যমে স্ট্রোক ম্যানেজমেন্ট গোটা ভারতবর্ষে এক অভিনব প্রয়াস। বিষয়টি নিয়ে দিল্লির সঙ্গে কথা বলেছি। এটি আগামী দিনে জাতীয় কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে গৃহীত হতে পারে।’’

Advertisement

এর আগে বারাসত জেলা হাসপাতালে ৮০ বছরের এক বৃদ্ধ-সহ দু’জনকে এবং গত মঙ্গলবার ৫৬ বছরের এক ব্যক্তিকে সুস্থ করা হয়েছে। মস্তিষ্কে সেরিব্রাল থ্রম্বোসিসের (মস্তিষ্কের ধমনীতে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া) কারণে যে স্ট্রোক হয়, তাতে মাথার একাংশে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়। এর ফলে রোগী পক্ষাঘাতের শিকার হন কিংবা সঙ্কটজনক হয়ে মৃত্যুও হতে পারে।

অজয়বাবু জানান, স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সাড়ে চার ঘণ্টার (গোল্ডেন আওয়ার) মধ্যে যদি সেই জমাট বাঁধা রক্ত (থ্রম্বাস) নির্দিষ্ট ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে গলিয়ে বার করে দেওয়া যায়, তা হলে রোগী ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠেন। তিনি বলেন, ‘‘এর জন্য আরও জনসচেতনতা প্রয়োজন। যাতে বিন্দুমাত্র দেরি না করে রোগীকে সিটি স্ক্যানের সুবিধা আছে এমন জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনেরা, সেই সচেতনতাও থাকতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement