প্রতীকী ছবি।
স্কুল চত্বরে এখনও পড়ে ‘সবুজসাথী’ প্রকল্পের কিছু সাইকেল। সেগুলি যাদের জন্য রাখা, গড়িয়ার বালিয়া নফরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির সেই ছাত্রীরা এখনও স্কুলে ফেরেনি। স্কুল সূত্রের দাবি, অনেক চেষ্টা করেও ওই ছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। ফলে নানাবিধ আশঙ্কা উঁকি দিচ্ছে শিক্ষিকাদের মনে।
শহরের উপকণ্ঠের ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষিকা গার্গী মুখোপাধ্যায় জানালেন, প্রতিটি ক্লাসের ছাত্রীদের আলাদা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে। স্কুল খোলার পরে দেখা যায়, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ২৫ জন ছাত্রী ধারাবাহিক ভাবে স্কুলে আসছে না। পরে তাদের মধ্যে ছ’জনের সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলে তারা স্কুলে আসবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু খোঁজ নেই বাকি ১৯ জনের। প্রধানশিক্ষিকার কথায়, ‘‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দেওয়া নম্বরে ফোন করলে তা বন্ধ বলছে। কখনও বাড়ির কেউ ফোন ধরে জানাচ্ছেন, মেয়ে বাড়িতে নেই। সে কোথায় গিয়েছে, সে সম্পর্কে জানাতে চাইছে না পরিবার।’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রদ্যোৎ সরকার বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
প্রসঙ্গত, করোনা-পর্বে রাজ্যে স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে অনেক ছাত্রীরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে বলে খবর মিলছে। গড়িয়ার স্কুলের ওই ১৯ জনেরও কী সেই পরিণতি হয়েছে, সেটাই ভাবাচ্ছে শিক্ষিকাদের। গার্গী বলেন, ‘‘ওদের ঠিকানায় খোঁজ করেও কয়েক জনের পরিবারের সন্ধান মেলেনি। কয়েক জনের অভিভাবক জানিয়েছেন, মেয়ে বাড়ি নেই। কখন ফিরবে, সেই প্রশ্নে তাঁরা নিরুত্তর থেকেছেন।’’
গত ১৬ নভেম্বর থেকে স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়াশোনা ফের শুরু হয়েছে। প্রথম দিকে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কম থাকলেও পরে বাড়তে থাকে। ওই স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার সংখ্যা ১১৩৮ জন। স্কুলের দাবি, বর্তমানে তাদের উপস্থিতির হার ৬০ শতাংশ। এ দিকে স্কুলছুটদের ফেরাতে নানা পদক্ষেপ করছেন স্কুলের শিক্ষিকারা। প্রধানশিক্ষিকার আশ্বাস, আর্থিক সমস্যার কথা জানালে প্রয়োজনে স্কুলে ভর্তির জন্য ফি মকুব করবে স্কুল। করোনা বা অন্য কোনও রোগে কোনও ছাত্রীর অভিভাবকের মৃত্যু হলে তার পড়াশোনার দায়িত্ব নেবে স্কুল। করোনায় অভিভাবক হারানো দুই ছাত্রী ইতিমধ্যেই স্কুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে দাবি গার্গীর। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের আশা, স্কুলের দরজায় ফিরবে ওই ১৯ জন।