মানিক ও পার্থকে নিয়ে চার্জশিটে কী কী বলেছিল ইডি? —ফাইল চিত্র।
শিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’ মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে ধৃত প্রাথমিক শিক্ষক পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি তথা তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য। মঙ্গলবার দুপুরে মানিকের গ্রেফতারির পর তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায় ইডি।
সংশ্লিষ্ট মামলায় আগেই চার্জশিট দিয়েছিল ইডি। সেখান থেকে সামনে আসে পার্থ ও মানিকের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন। জানা যায়, পার্থের সঙ্গে ১০ মিনিটের জন্য কথা বলতে চেয়েছিলেন তাঁর তৎকালীন রাজনৈতিক সতীর্থ মানিক। আবার, মানিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করে রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মেসেজ করেছেন জনৈক ব্যক্তি। যেখানে লেখা ছিল, ‘দাদা, মানিক ইজ় টেকিং মানি যা-তা ভাবে।’ অর্থাৎ, মানিক অবৈধ ভাবে টাকা তুলছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তাতে জনৈক ব্যক্তিকে কী উত্তর দিয়েছিলেন পার্থ?
ইডির চার্জশিটে পার্থের ফোনে আসা বেশ কিছু মেসেজের উল্লেখ করেছে। তার একটিতে প্রেরকের নাম প্রকাশ করেনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। জনৈক সেই ব্যক্তি পার্থকে লিখেছেন, ‘‘দাদা মানিক ভট্টাচার্য ইজ টেকিং মানি যা-তা ভাবে। কোভিডের সময়ে প্রাইভেট কলেজগুলো থেকে ছাত্রপিছু ও ৫০০ টাকা করে নিয়েছে। ছাত্রেরা দিতে না পারলে কলেজকে ধমকি দিয়েছে। তাদের হয়রান করছে।’’ তিনি এ-ও লেখেন, ‘‘নদিয়ায় টেটের ইন্টারভিউ শেষ হয়েছে। কিন্তু ও চেয়ারম্যানকে বলেছে, ফাঁকা সাইন করা ডকুমেন্ট মাস্টার শিট জমা দিতে! ইন্টারভিউয়ের কোনও নম্বর লিখতে বারণ করছে। আবার ও টাকা নিয়ে করবে, আবার কেস হবে। আবার পার্টি খাস্তা হবে। প্লিজ এটা দেখুন। লভ।’’ কার্যত অনুনয়ের সুর ছিল এই মেসেজে।
ওই মেসেজটি পার্থ ‘রি-ফরোয়ার্ড’ করেন বলে দাবি করেছে ইডি। সেটা কি মানিককেই পাঠিয়েছিলেন? ইডি সূত্রে খবর, মেসেজটি মানিকের কাছেই গিয়েছিল। তবে ওই মেসেজ নিয়ে তদন্তকারীরা অনুসন্ধান শুরু করেন, কেন ‘মাস্টার শিট’ ফাঁকা রাখতে বলা হয়েছিল? ইন্টারভিউয়ের নম্বর বসাতেই বা কেন বারণ করা হয়েছিল চেয়ারম্যানকে? জেরায় এমন প্রশ্নের সুদত্তর দিতে পারেননি পার্থ। ইডি সূত্রে খবর, ওই মেসেজে ছিল প্রাথমিক বোর্ডের বিষয়ে অভিযোগ।
কী কী রয়েছে ইডির চার্জশিটে? গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
অবশেষে মঙ্গলবার বয়ানে অসঙ্গতি এবং জেরায় অসহযোগিতার অভিযোগ এনে মানিককে গ্রেফতার করেছে ইডি। সোমবার সিজিও কমপ্লেক্সে তাঁকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ ওঠে মানিকের বিরুদ্ধে।