Promoters

Taxes on Flats: তথ্যের ‘কারচুপিতে’ করের বোঝা চাপছে ফ্ল্যাটের ক্রেতার উপরে

প্রোমোটার, ডেভেলপার ফ্ল্যাটের সম্পত্তিকর সংক্রান্ত বিষয়টি তাঁর কাছে খোলসা না করায় বিগত তিন বছরের করের বোঝা চাপে ওই ক্রেতার উপরেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

এক শ্রেণির প্রোমোটারের কারচুপির কারণে বিপাকে পড়তে হচ্ছে শহরে নতুন কেনা ফ্ল্যাটের মালিকদের।

Advertisement

নিজেদের গ্যাঁটের থেকে সম্পত্তিকরের টাকা যাতে না খসে, তার জন্য ওই প্রোমোটার গোষ্ঠী ফ্ল্যাট বিক্রি সংক্রান্ত তথ্য চেপে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কলকাতা পুর আধিকারিকদের একাংশ। ফলে অজানতেই সম্পত্তিকরের বোঝা চাপছে নতুন কেনা ফ্ল্যাটের মালিকদের উপরে।

পুরকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ধরা যাক, কোনও প্রোমোটার একটি আবাসন প্রকল্প সম্পূর্ণ হয়েছে, তার শংসাপত্র বা ‘কমপ্লিশন সার্টিফিকেট’ (সিসি)-এর জন্য আবেদন করলেন পুরসভায়। ওই আবাসনের কিছু ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে, কিছু হয়নি। কিন্তু প্রোমোটারকে পুরসভা সিসি দেওয়ামাত্র নিয়মমতো পুরো আবাসনই মূল্যায়ন ও সম্পত্তিকরের আওতায় চলে আসে। অর্থাৎ বিক্রি হওয়া
ফ্ল্যাটের পাশাপাশি, অবিক্রিত ফ্ল্যাটের উপরেও সম্পত্তিকর ধার্য হওয়া শুরু হয়। এ বার কোনও ক্রেতা হয়তো ওই আবাসনের একটি অবিক্রিত ফ্ল্যাট তিন বছর পরে কিনলেন। কিন্তু প্রোমোটার, ডেভেলপার ফ্ল্যাটের সম্পত্তিকর সংক্রান্ত বিষয়টি তাঁর কাছে খোলসা না করায় বিগত তিন বছরের সম্পত্তিকরের বোঝা চাপে ওই ক্রেতার উপরেই। অর্থাৎ সেই টাকা তখন ক্রেতাকেই মেটাতে হয়।

Advertisement

এর সমাধানে পুর প্রশাসনের সিদ্ধান্ত, প্রোমোটার, ডেভেলপার সিসি-র জন্য পুরসভায় আবেদন করার মুহূর্তেই তাঁকে বলতে হবে, কোন ফ্ল্যাটগুলি ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়েছে এবং কোনগুলি হয়নি। না-হলে এখন থেকে সিসি দেওয়া হবে না। পুরসভার এক কর্তার কথায়, ‘‘যে ফ্ল্যাটগুলি বিক্রি হয়েছে, সেই ফ্ল্যাটের মালিকের নামে সম্পত্তিকর ধার্য করা হবে। যেগুলি এখনও বিক্রি হয়‌নি, সেগুলির সম্পত্তিকরের টাকা মেটানোর দায়িত্ব ওই প্রোমোটার এবং ডেভেলপারের থাকবে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, পদ্ধতির সরলীকরণে প্রোমোটার/ডেভেলপার/মালিককে আবাসন নির্মাণের সিসি-র আবেদনের সঙ্গে একটি ‘ডিক্লারেশন’ দেওয়ার বিষয়কে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সে কারণে একটি ফর্ম দেওয়া হবে। যেখানে নির্দিষ্ট ভাবে প্রোমোটারদের উল্লেখ করতে হবে, আবাসনের কতগুলি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে বা কতগুলি হয়নি। এই ‘ডিক্লারেশন’ দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে পুরকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, শহরে এমন অনেক ঘটনা ঘটছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, পুরসভা থেকে সিসি পাওয়ার আগেই সংশ্লিষ্ট প্রোমোটার, ডেভেলপার আবাসনের ফ্ল্যাট বিক্রি বা লিজ় চুক্তির মাধ্যমে অন্যকে দিয়ে দিচ্ছেন বা হস্তান্তর করে দিচ্ছেন। অথচ সেই তথ্য পুরসভাকে জানাচ্ছেন না।

এমনিতে পুরসভার বিল্ডিং দফতর কোনও আবাসন বা আবাসন কমপ্লেক্সের ‘কমপ্লিশন সার্টিফিকেট’ সংক্রান্ত তথ্য মূল্যায়ন ও কর সংগ্রহ (অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড কালেকশন) দফতরকে জানিয়ে দেয়। কিন্তু অ্যাসেসমেন্ট দফতরের আধিকারিকদের তার পর থেকে সংশ্লিষ্ট প্রোমোটার, ডেভেলপারের কাছ থেকে আবাসনের কতগুলি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে বা হয়নি— সেই তথ্যের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়। না হলে ফ্ল্যাটগুলির মিউটেশন, সম্পত্তিকর মূল্যায়ন প্রক্রিয়া কিছুই সম্পূর্ণ হয় না। শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট প্রোমোটার, ডেভেলপার সঠিক তথ্য না জানানোর ফলে সম্পত্তিকরের বোঝা চাপে ক্রেতার উপরে, যিনি জানেনই না যে সেই কর তাঁকে দিতে হবে। তবে এই সিদ্ধান্তের ফলে পুরকর্তাদের আশা, ক্রেতারা জানতে পারবেন‌ তিনি যে ফ্ল্যাটটি কিনছেন, তার বকেয়া কোনও কর রয়েছে কিনা। সেই অনুযায়ী প্রোমোটার, ডেভেলপারের সঙ্গে কথা বলে নিতে পারবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement