ফিরহাদ হাকিম।—ফাইল চিত্র।
মেয়র পদে তাঁর পূর্বসূরি শোভন চট্টোপাধ্যায় বেশ কিছু দিন পরিবেশমন্ত্রীও ছিলেন। নতুন মেয়র হয়ে ফিরহাদ হাকিম কলকাতার বায়ুদূষণকেই অগ্রাধিকার দিলেন। বুঝিয়ে দিলেন, এ কাজে প্রত্যাশিত সাফল্য মেলেনি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কলকাতার বাতাসে দূষণ রোধ করতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাব। শহরে নিজের (পড়ে থাকা খালি) জায়গায় কেউ গাছ লাগালে সেই সম্পত্তির মালিককে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কর মকুব করা হবে।’’ তবে তার রূপরেখা কী হবে তা আগামী দিনে বিশদে জানানো হবে বলে জানান মেয়র। কলকাতাকে সবুজ করার লক্ষ্যে আরও পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।
প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় গত ৮ বছর ধরে মেয়র পদে থাকলেও তাঁর নিজের এলাকা বেহালার বেশ কয়েকটি এলাকায় জমা জলের সমস্যা নিয়ে বাসিন্দাদের ভোগান্তি কমেনি। নতুন মেয়রের মুখে বেহালায় জমা জলের সমস্যার সমাধানের কথাও উঠে আসে। বলেন, ‘‘ওই এলাকায় নিকাশির হাল এমন কেন, তা দেখার উপরে জোর দেওয়া হবে।’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, যাদবপুর, টালিগঞ্জে পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে বার বার অভিযোগ উঠছে। তার ব্যবস্থা করা হবে শীঘ্রই।
মেয়রের চেয়ারে বসার আগে ফিরহাদ হাকিম ডেকে নেন পরিবারের প্রিয় মানুষজনকে। প্রণাম জানান ঘরের দেওয়ালে থাকা মনীষীদের ছবিতে। বলেন, ‘‘এই চেয়ারে বসে কাজ করেছেন নেতাজি, দেশবন্ধু, বিধানচন্দ্র রায়ের মত বিদগ্ধ ব্যক্তিত্ব। তাঁদের পথ অনুসরণ করতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করব। এমন কোনও কাজ করব না যাতে চেয়ারের মর্যাদাহানি হয়।’’ পাশেই দাঁড়িয়ে তাঁর স্ত্রী রুবি হাকিম বলেন, ‘‘কলকাতার উন্নয়নে সব চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি উনি। চ্যালেঞ্জ ছাড়া জীবনে মজাই নেই।’’
আরও পড়ুন: শৃঙ্খলা মেনেই হাজির শোভন
এ দিন ফিরহাদ হাকিমকে নিয়ে পুরভবনে উন্মাদনা ছিল ব্যাপক। ভোটের ফলাফলের খবর পৌঁছনোর পর বিকেলে বাড়ি থেকে পুরভবনে পৌঁছে যান ফিরহাদ হাকিম। তার আগেই পুরভবনের করিডরে তাঁর মুখের মুখোশ পরে হাজির ছিলেন কয়েক জন সমর্থক। প্রবেশদ্বার থেকে উপর পর্যন্ত ভিড়ে ঠাসা তাঁর অনুগামীরা। করিডরও পুরো জ্যাম। তৃণমূলের কাউন্সিলর থেকে পুর কমিশনারও ভিড়ে ছিটকে গিয়েছেন কয়েক বার। এমনকি মেয়র ফিরহাদকেও ধাক্কা সামলাতে হয়েছে। পুলিশ থাকলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয় তাঁদের। শপথ নেওয়ার আগে ভিড়ের চাপে অধিবেশন কক্ষের একটি দরজার কাচও ভেঙে পড়ে।