এখানেই হবে স্টেডিয়াম। —নিজস্ব চিত্র।
রবীন্দ্রসরোবর স্টেডিয়াম কিংবা যাদবপুরের কিশোরভারতী স্টেডিয়ামের মতোই আরও একটি স্টেডিয়াম উপহার পেতে চলেছেন শহরবাসী। সৌজন্যে কলকাতা পুরসভা। উত্তর কলকাতার টালায় বেঙ্গল জিমখানা গ্রাউন্ডে তৈরি হতে চলেছে সেই স্টেডিয়াম। রাজ্যে নতুন সরকার গঠনের পরে সাম্প্রতিক পুর-অধিবেশনে সেই স্টেডিয়াম তৈরির কাজে সিলমোহরও পড়ল।
পুরসভা সূত্রের খবর, দু’টি পর্যায়ে স্টেডিয়াম তৈরির কাজ হবে। প্রথম পর্যায়ে তৈরি হবে দশ হাজার দর্শকাসনের গ্যালারি, জিম, পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য পৃথক পোশাক বদলের ঘর, খেলার মাঠ, পাথওয়ে এবং শৌচালয়। পাশাপাশি ঘিরে দেওয়া হবে মাঠটিকেও। দ্বিতীয় পর্যায়ে তৈরি হবে অ্যাথলেটিক ট্র্যাক। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, রাজ্য ক্রীড়া দফতর অর্থ দেবে। ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রথম পর্যায়ে প্রায় ১৬ কোটি টাকা খরচ হবে যার পুরোটাই রাজ্য ক্রীড়া দফতর দেবে। তৈরি করবে কলকাতা পুরসভা। দরপত্র ডাকা শেষ হলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে।’’ দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই এই খাতে প্রায় তিন কোটি টাকা দিয়ে দিয়েছে রাজ্য ক্রীড়া দফতর।
পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে রয়েছে সবুজের সমারোহ। পাশাপাশি রয়েছে টালা ঝিলপার্ক, বেঙ্গল জিমখানা গ্রাউন্ড এবং সার্কাস ময়দান। এর মধ্যে প্রায় কুড়ি বিঘা জুড়ে বেঙ্গল জিমখানা গ্রাউন্ড। সেখানে দীর্ঘ দিন ধরে ক্রিকেট প্রশিক্ষণের
ব্যবস্থা রয়েছে। তিনটি ক্লাব সেই প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, স্টেডিয়াম তৈরির পর তিনটি ক্লাবকে মূল মাঠের বাইরে পুনর্বাসন দেওয়া হবে।
ফুটবলের পাশাপাশি ক্রিকেট এবং অ্যাথলেটিক্সের ব্যবস্থাও থাকবে স্টেডিয়ামে। কাজ শেষে বেঙ্গল জিমখানা গ্রাউন্ডকে মাল্টিপারপস স্টেডিয়ামে উন্নীত করা হবে বলে পুরসভা সূত্রে খবর। এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় কাউন্সিলর তরুণ সাহা বলেন, ‘‘এই ওয়ার্ডে অনেকটা এলাকা জুড়ে গাছপালা, জলাশয় রয়েছে। অনেক দিন ধরেই স্থানীয় এবং আশপাশের ওয়ার্ডের বাসিন্দারা স্টেডিয়াম তৈরির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। স্টেডিয়াম হলে মাঠটা সুন্দর ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে। বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজনও সম্ভব হবে।’’
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘উত্তর কলকাতায় কোনও স্টেডিয়াম নেই। অথচ ওই ওয়ার্ডের বেশিরভাগ অংশই সবুজে ঘেরা। টালা অঞ্চলে তিনটি বড় বড় পার্ক রয়েছে। বাসিন্দাদেরও অনেক দিনের দাবি এটি। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে আরও বেশি করে খেলাধুলোয় উৎসাহ দিতে সরকারের এই উদ্যোগ।’’
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হলে দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে পরিকল্পনা করা হবে। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই এই প্রকল্পের কনসালটেন্ট নিয়োগের জন্য দরপত্র ডাকা হবে। কনসালটেন্ট নিয়োগ চূড়ান্ত হলে আন্তর্জাতিক ভাবে দরপত্র ডেকে নির্মাণকারী সংস্থা স্থির করা হবে।’’ এ বছরের শেষের দিকে স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শুরু হবে বলে পুর-কর্তৃপক্ষের আশা।