জলমগ্ন: অস্থায়ী ঘরের সামনে জমেছে জল। রবিবার, টালায়। নিজস্ব চিত্র
কেউ দিনভর ডুবে থাকলেন হাঁটু জলে। শেষে পাম্প চালিয়ে ঘটল তাঁদের জলমুক্তি! কেউ আবার বেলা হতেই ব্যবসা বাড়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন। টালা সেতুকে কেন্দ্র করে পুজোর আগের শেষ রবিবার এমনই দুই ভিন্ন চিত্র দেখা গেল সেতুর নীচের ঝুপড়ির বাসিন্দা এবং হাতিবাগান বাজারের ব্যবসায়ীদের ঘিরে।
টালা সেতুর উপরে যান নিয়ন্ত্রণের জন্য এ দিন সকাল থেকেই নানা রুটের বাস ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিধান সরণিতে ঢোকার পরিবর্তে বহু গাড়িই অন্য রাস্তা ধরেছে। এই সুযোগে জমেছে তাঁদের ব্যবসা, এমন দাবি হাতিবাগান বাজার ব্যবসায়ীদের অনেকেই। যে কয়েকটি বাস বিধান সরণি দিয়ে যাচ্ছে, গতি অত্যন্ত ধীর। এ দিকে, হকারদের কারও দোকান ফুটপাত পেরিয়ে নেমেছে রাস্তায়। কেউ আবার পার্কিং করা মোটরবাইকেই বিক্রির সামগ্রী রেখে দর হাঁকছেন। এক ব্যবসায়ী বললেন, ‘‘ভেবেছিলাম টালা সেতু বন্ধের জন্য বাজার সে ভাবে হবে না। উল্টো হল!’’
ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় শ্যামপুকুর থানার এক পুলিশকর্মী আবার বললেন, ‘‘গত রবিবারই হাতিবাগানে গাড়ি নিয়ন্ত্রণে বাড়তি পুলিশ রাখতে হয়েছিল। এ দিন এমন ফাঁকা রাস্তা হবে ভাবিনি।’’ ফাঁকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে কেনাকাটায় ব্যস্ত উল্টোডাঙার শ্যামলী হালদারও বললেন, ‘‘এই সময়ে তো গাড়ির আওয়াজে কান ঝালাপালা হয়। আজ মনে হচ্ছে, গোটা রাস্তাটাই হাতিবাগান বাজার।’’
টালা সেতুতে অবশ্য এ দিন দেখা গেল, ছোট গাড়ি অত্যন্ত ধীরে চলছে। গত বুধবারই স্থানীয় পুর প্রশাসনের তরফে সেতুর কাছের রেলের জমিতে অস্থায়ী ঘর বানিয়ে সেতুর নীচের ঝুপড়ির বাসিন্দাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে সেই ঘরে তাঁরা থাকতে পারছেন না বলে এ দিন অভিযোগ করলেন বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, বৃষ্টিতে ওই ঘরে জল ঢুকে গিয়েছে। হাঁটুজলে ডুবে তাঁদের দিন কাটাতে হয়েছে। অভিজিৎ মণ্ডল নামে এক ঝুপড়ির বাসিন্দা বললেন, ‘‘কাল রাতেও সর্বক্ষণ ছাদ থেকে জল পড়েছে।’’
স্থানীয় এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা অবশ্য বললেন, ‘‘সমস্যা বুঝে পাম্প বসিয়ে জল বার করে দেওয়া হয়েছে। আর কী করব?’’ শিশু কোলে এক মা সেই জলে বসে বললেন, ‘‘সেতুর কাজ হোক, আমাদের কথাও ভাবুক।’’
সেতুতে বাস এবং পণ্যবাহী গাড়ি বন্ধের পরে যান নিয়ন্ত্রণের আসল পরীক্ষা অবশ্য হবে আজ, সোমবার।