ফাইল চিত্র।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় টানা কয়েক মাস বন্ধ রয়েছে সুইমিং পুল। বুধবারের সরকারি নির্দেশিকায় পুলের জলে যেন একটু আশার আলো পড়ল। কারণ, ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে যে, রাজ্য ও জাতীয় স্তরের খেলোয়াড়দের জন্য সকাল ৬টা-১০টা, চার ঘণ্টা খুলতে পারবে সুইমিং পুল।
যদিও ক্লাবকর্তাদের একাংশের মত, শিক্ষানবিশদের সাঁতার শিখিয়েই উঠে আসে ক্লাবগুলির মূল উপার্জন। সেই পথ এখনও বন্ধ। তবুও তাঁরা চাইছেন, রাজ্য ও জাতীয় স্তরের খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ ফের শুরু হোক। তাতে গত দেড় বছর ধরে মৃতপ্রায় সাঁতার ক্লাবগুলি কিছুটা হলেও অক্সিজেন পাবে। তবে কারও কারও মতে, পুলের জল শোধন করে, কর্মীদের বেতন দিয়ে ক্লাব চালাতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়, শুধু রাজ্য ও জাতীয় স্তরের খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ থেকে সেই খরচ ওঠে না।
কলেজ স্কোয়ারের একটি সাঁতার প্রশিক্ষণ ক্লাবের কর্মকর্তা সন্তোষ দাস জানান, সংক্রমণ কিছুটা কমায় অল্প সময়ের জন্য পুল খুলেছিল। তবে শিক্ষানবিশ ভর্তি সেই অর্থে হয়নি। পরে বন্ধও হয়ে যায় পুল। সন্তোষবাবু বলেন, “প্রায় দু’বছর প্রশিক্ষণ বন্ধ থাকায় বহু ভাল সাঁতারুর ভবিষ্যৎ নষ্ট হওয়ার পথে। এই নির্দেশিকায় রাজ্য ও জাতীয় স্তরের খেলোয়াড়েরা অন্তত অনুশীলনের সুযোগটুকু পাবেন।” বিকেলেও দু’ঘণ্টা প্রশিক্ষণের সময় রাখলে ভাল হত বলে দাবি হেদুয়ার একটি সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা সনৎ ঘোষের।
পাশাপাশি তিনি বলেন, “এখানে রাজ্য স্তরের খুব ভাল ওয়াটার পোলো দল আছে। সেই খেলোয়াড়েরা কি খেলতে পারবেন?”
সরকারি নির্দেশিকার পরেই পুলের জল শোধন করতে শুরু করে দিয়েছে রবীন্দ্র সরোবর সংলগ্ন সাঁতার প্রশিক্ষণের একটি ক্লাব। কর্মকর্তা অমিত বসু বলেন, “প্রশিক্ষণ চলবে কোভিড-বিধি মেনেই। তবে পুলের জল পরিষ্কার করে সাঁতারের উপযোগী করতে দিন কয়েক সময় লাগবে।”
যদিও শুধুমাত্র রাজ্য ও জাতীয় স্তরের খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ শুরুর পরিকল্পনা তাঁদের নেই বলেই জানাল লেক টাউনের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ওই ক্লাবের সিনিয়র প্রশিক্ষক রাজ কুণ্ডুর কথায়, “একটা পুলের জল শোধন করতে মাসে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। সঙ্গে রয়েছে প্রশিক্ষক ও পুল চালানোর আনুষঙ্গিক খরচ। এই খরচ খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ থেকে কী ভাবে উঠবে?”
শহরের কিছু অভিজাত ক্লাব অবশ্য জানাচ্ছে, তাদের সদস্যদের জন্য সাঁতার বন্ধ থাকছে। তবে তারা দেখবে, খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ শুরু করা যায় কি না। পার্ক স্ট্রিটের তেমনই একটি ক্লাবের ক্রীড়া বিভাগের প্রধান সৌমেন গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, “ক্লাবের সুইমিং পুল বন্ধ। তবে ক্লাবের দক্ষ সাঁতারু বা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া খেলোয়াড়দের জন্য পুল খোলা হবে কি না, সে ব্যাপারে দু’-এক দিনের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”