নন্দীগ্রাম নিয়ে মন্তব্যের পর শোভনকে কটাক্ষ শুভেন্দুর। —ফাইল চিত্র।
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ভিডিয়ো বার্তার প্রত্যুত্তরে তাঁকে ‘ভাঁড়’ বলে কটাক্ষ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রাক্তন মন্ত্রী ও কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকে বিঁধে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার মন্তব্য, ‘‘ওই ভাঁড়েদের কথার কী গুরুত্ব আছে।’’ পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নন্দীগ্রাম-অভিযান প্রসঙ্গে আগের অবস্থানে অনড় থাকলেন শিশির-পুত্র।
বস্তুত, শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পর নন্দীগ্রাম আন্দোলনে কার ভূমিকা বেশি, সেই ধারাবাহিক বিতর্কে এক দিকে রয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব এবং অন্য দিকে অধিকারী পরিবার। সম্প্রতি আবার নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কথা তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শুভেন্দু। এই প্রেক্ষিতে হঠাৎ মুখ খুলেছেন মমতার স্নেহভাজন ‘কানন’। দীর্ঘ দিন নীরব থাকার পর তাঁর মুখে হঠাৎ শোনা গিয়েছে রাজনীতির কথা। শুভেন্দুর বক্তব্য অসত্য বলে দাবি করেছেন শোভন। একটি ভিডিয়ো বার্তায় তিনি দাবি করেন, নন্দীগ্রামের ঘটনা যে দিন ঘটে, সে দিন তিনি ছিলেন তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে। শুভেন্দু-শিশিরের বাসভবনে থাকার যে দাবি করা হয়েছে, তা মিথ্যে।
সোমবার শোভনের ওই ভিডিয়ো বার্তার প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘ওই ভাঁড়েদের কথার উত্তর দেব না।’’ পরে অবশ্য তিনি আরও বলেছেন, ‘‘২০০৮ সালের ১৩ মার্চ তৃণমূল দলের মালিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘শান্তিকুঞ্জ’ অর্থাৎ শিশির অধিকারী ও শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির চার তলায় একটি ঘরে রাত কাটিয়েছিলেন। পরের দিন সকালে ১৪ মার্চের গণহত্যার বর্ষপূর্তির দিন সকালবেলা কাঁথির শান্তিকুঞ্জ থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোকুলনগরের অধিকারীপল্লি, যেখানে গুলি চলেছিল, সেখান গিয়ে মাটি সংগ্রহ করে কলকাতায় গিয়ে মিছিল করেছিলেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বাজার গরম করার জন্য এ সব করেছিলেন।’’
অন্য দিকে, নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে মমতাকে আক্রমণ করায় শুভেন্দুকে হুঁশিয়ারি দেন তাঁর প্রাক্তন সহকর্মী শোভন। শোভন আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘বিরোধী দলনেতা দলবদল করেছেন বলে সত্য ঘটনাকে বিকৃত করেছেন। সঙ্গে নীতি-নৈতিকতাও সব কিছু বিসর্জন দিয়েছেন তিনি। কিন্তু আমি সেই সব ঘটনার সাক্ষী। আমি মিথ্যে বলতে পারব না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, নেতাইয়ে যে আন্দোলন হয়েছিল, তার প্রতিটি ঘটনার সাক্ষী আমি। সিঙ্গুরে তাপসী মালিকের ঘটনা থেকে নন্দীগ্রামে ভরত মণ্ডল খুনের ঘটনা— সব কিছুই চোখের সামনে ঘটেছে। মমতাদি কী ভাবে সেই সব আন্দোলনে লড়াই করেছিলেন, নিজের চোখে দেখেছি। তাই সেই সব ঘটনার বিকৃতি ঘটালে কখনওই তা মেনে নেব না।’’
প্রশ্ন উঠছে, হঠাৎ শুভেন্দুকে আক্রমণ করে তিনি কি আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হতে চাইছেন? শোভনের নিজের কথায়, ‘‘আমি রাজনীতিতে সক্রিয় থাকি বা না থাকি, সত্যি কথা সব সময় বলব।’’ শুভেন্দুর কটাক্ষের জবাবে তিনি কোনও প্রতিক্রিয়া দেন কি না, তা অবশ্য সময়ই বলবে।