Park Street Robbery

হেলমেট পরে ঢুকে প্রযোজনা সংস্থার অফিসে লুট, আটক দুই সন্দেহভাজন

বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে আসেন পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ ও লালবাজারের আধিকারিকেরা। তাঁরা সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:৫৩
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ভরসন্ধ্যায় পার্ক স্ট্রিটের মতো জমজমাট এলাকায় একটি প্রযোজনা সংস্থার অফিসে ঢুকে নগদ কয়েক লক্ষ টাকা লুট করে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দুই সন্দেহভাজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে, শহরে পর পর এ ভাবে টাকা লুটের ঘটনায় পুলিশের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রফি আহমেদ কিদোয়াই রোডে পাঁচতলা একটি বহুতলের উপরের তলায় অফিস রয়েছে ওই প্রযোজনা সংস্থার। সেখানে বেশ কয়েক জন কর্মী কাজ করেন। অভিযোগ, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ তিন যুবক অফিসে ঢোকে। সকলের মুখ হেলমেটে ঢাকা ছিল। তারা ঢুকেই অফিসে থাকা দুই কর্মীকে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে সমস্ত চাবি নিয়ে নেয় বলে অভিযোগ। এর পরে অফিসে রাখা নগদ টাকা ব্যাগে ঢুকিয়ে চম্পট দেয়। সেই সময়ে অফিসে উপস্থিত কয়েক জন দুষ্কৃতীদের ধাওয়া করেও নাগাল পাননি বলে জানিয়েছেন। প্রায় সাত লক্ষ টাকা অভিযুক্তেরা নিয়ে গিয়েছে বলে দাবি ওই প্রযোজনা সংস্থার। পরে সংস্থার কর্মীরা পুলিশে ফোন করে বিষয়টি জানান। রাতেই পার্ক স্ট্রিট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়।

বুধবার সকালে ঘটনাস্থলে আসেন পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ ও লালবাজারের আধিকারিকেরা। তাঁরা সংস্থার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন। তদন্তকারীদের কথা বলতে দেখা গিয়েছে বাড়িটির নীচে থাকা একটি দোকানের কর্মীদের সঙ্গেও। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ওই প্রযোজনা সংস্থার অফিসে ঢোকার রাস্তায় একাধিক সিসি ক্যামেরা রয়েছে। বহুতল ভবনটিতেও রয়েছে সিসি ক্যামেরা। সেই সব ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে অভিযুক্ত তিন জনের এক জনকে পার্ক স্ট্রিটের দিকে এবং দু’জনকে নিউ মার্কেটের দিকে পালিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে। ওই তিন জন বাইকে চেপে এসেছিল বলে স্থানীয়েরা জানিয়েছেন।

Advertisement

এর পরেই বুধবার সন্ধ্যায় দু’জনকে আটক করে পুলিশ। কারও সঙ্গে সংস্থার টাকা-পয়সা সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই এই ঘটনা কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনায় সংস্থার কর্মীদের কারও যুক্ত থাকার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। এমনকি, সংস্থাকে কেন্দ্র করে পারিবারিক কোনও বিবাদ ছিল কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

প্রাথমিক ভাবে সংস্থা কর্তৃপক্ষের তরফে নগদ সাত লক্ষ টাকা খোয়া গিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। তবে সেই সংক্রান্ত প্রমাণ পুলিশ এখনও পর্যন্ত পায়নি বলেই জানা গিয়েছে। ফলে, আদৌ অত টাকা অফিসে ছিল কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে তদন্তকারীদের মনে। তবে, ভরসন্ধ্যায় পার্ক স্ট্রিটের মতো এলাকায় এমন ঘটনায় আতঙ্কিত আশপাশের বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ীরা। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘সন্ধ্যায় ঘন বসতিপূর্ণ ওই এলাকায় কী ভাবে অভিযুক্তেরা ঢুকল, তা দেখা হচ্ছে। সংস্থার কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে।’’

সপ্তাহ কয়েক আগে পার্ক সার্কাসের একটি শপিং মলের সামনে থেকেও একই ভাবে টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছিল। সে ক্ষেত্রেও মোটরবাইকে চেপে এসে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পট দেয় অভিযুক্তেরা। তার পরে আবার নারকেলডাঙায় এক ছাগল ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই পার্ক স্ট্রিটের মতো জনবহুল এলাকায় এমন ঘটনা পুলিশি নজরদারিকে কার্যত প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement